• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৯:৪৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৯:৪৯ এএম

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল

রোগীর ভার ও জনবল সংকটে নুয়ে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা   

রোগীর ভার ও জনবল সংকটে নুয়ে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা   

রোগীর চাপে স্বাস্থ্য সচিবের নিজ জেলা সদরের হাসপাতালে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একশ বেডের হাসপাতালে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৪২০ জন রোগী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের না পারছে কোন বেড দিতে, না দিতে পারছে খাবার। খাবার না পেয়ে রোগীরা প্রায় প্রতিদিন হৈ চৈ করছে। 

এদিকে, বহির্বিভাগেও রোগীর অনেক চাপ। মঙ্গলবার বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন ১২৫৯ জন। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করে বাড়ি ফিরে গেছেন ৮৫ জন। হাসপাতালটি সরেজমিন পরিদর্শন করে অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার এই নাজুক চিত্র দেখা গেছে। হাসপাতালের সাধারণ বেড ও কেবিন ছাড়াও মেঝে, বারান্দা ও সিড়িঘরে বিছানা পেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। রোগী আর স্বজনদের আনাগোনায় তিলধরানোর ঠাঁই নেই হাসপাতালের কোথাও। হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার পর এ ধরনের রোগীর চাপ দেখা যায়নি বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। 

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সাধারণ বেড রয়েছে ৭০টি। পেয়িং বেড এবং কেবিন রয়েছে আরো ৩০টি। এর মধ্যে বুধবার পর্যন্ত দেখা গেছে ৯টি মহিলা মেডিসিন বেডের বিপরীতে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন, মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ৯টি বেডের বিপরীতে ৩৬ জন, ৮টি শিশু বেডের বিপরীতে ১১৯ জন শিশু, ৫টি ইওসি বেডের বিপরীতে ৮৪ জন গর্ভবতী নারী, ডায়রিয়া ৬টি বেডের বিপরীতে ২০ জন, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ১৫টি বেডের বিপরীতে ৩৯ জন এবং পুরুষ সার্জারি বিভাগে ১৮টি বেডের বিপরীতে ৭১ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। 

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত নার্সিং সুপারভাইজার আরতি রায় জানান, নার্স সংকটের মধ্যে এ ধরনের রোগীর চাপে আমরা হাফিয়ে উঠছি। এভাবে সুষ্ঠু সেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শত শত নতুন রোগীর চাপে চিকিৎসক ও নার্সদের মন-মানসিকতা স্বাভাবিক থাকছে না বলে নার্সদের অনেকেই মনে করেন। তাদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন নাসিং সুপারভাইজারের পদ খালি। ভারপ্রাপ্ত দিয়ে এই পদ চালানো হচ্ছে। সেবা তত্ত্বাবধায়কের পদ খালি থাকায় নার্সরা ছুটি নিতে এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি করছেন। 

হাসপাতালের পরিসংখ্যান অফিসার আব্দুল কাদের জানান, ৪০ জন চিকিৎকের মধ্যে হাসপাতালে ২২টি পদে ডাক্তার রয়েছে। এরমধ্যে ৮ জন বিশেষজ্ঞ, বাকি পদ বছরের পর বছর শুন্য থাকছে। তিনি বলেন, আউটডোর ও ইনডোরে রোগীর এই ভয়াবহ চাপে হাসপাতালে কর্মরত প্রায় সবাই নাকাল। আড়াইশ বেডের বিল্ডিং হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত এই বেহাল দশা ভোগ করতে হবে বলে চিকিৎসক ও নার্সরা মনে করনে। 

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলী জানান, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে শুন্য পদে অতি সত্তর নিয়োগ ও নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করে হস্তান্তর করা। তা না হলে রোগীদের এই চাপ সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

আরও পড়ুন