• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কুবিতে সংঘর্ষ, আহত ১৫

ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কুবিতে সংঘর্ষ, আহত ১৫
খেলার মাঠে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা  -  ছবি : জাগরণ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কয়েক দফা মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে ৫ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আন্তঃবিভাগ ফুটবল প্রতিযোগিতার ১ম সেমিফাইনালে রোববার মুখোমুখি হয় বাংলা ও মার্কেটিং বিভাগ। খেলা চলাকালে রেফারির ভুল সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। ম্যাচ শেষে বাংলা বিভাগের খেলোয়াড়, সমর্থক ও শিক্ষকেরা মাঠ ছাড়ার সময় মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের ওপর চড়াও হন।

একপর্যায়ে শাখা ছাত্রলীগের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক জুনায়েদ ইসলাম (এআইএস), উপ-সমাজসেবা সম্পাদক মুনতাসির হৃদয় (এআইএস), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোয়েব হাসান হিমেল (মার্কেটিং), সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহুল হক শান্ত (পদার্থবিজ্ঞান), নজরুল হলের ছাত্রলীগ কর্মী শাহ ফাহিম (মার্কেটিং), বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী সজীব কুমার কর (পরিসংখ্যান), ওই হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ সাহা সেতু (মার্কেটিং), দত্ত হলের ছাত্রলীগ কর্মী সাদমান, রবিনসহ (মার্কেটিং) বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাঠ-সংলগ্ন নতুন রোপণ করা বৃক্ষ সংযুক্ত বাঁশ তুলে উপর্যুপরি হামলা শুরু করেন।

এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহকারী প্রক্টরসহ বাংলা বিভাগের শাহিদুল ইসলাম বিজয়, তাওহিদ সানি, রাশেদুল ইসলাম, সুপন সূত্রধর, শাহাদত হোসেন হিমেল, আব্দুর রহমান, সফিউর রহমান সাগর, আমীর হামজা তন্ময়, তানভীর, আশাদুজ্জামান শাহেদ, আব্দুল আহাদ, এস কে বিজয়, রবিউল, প্রান্ত, সিফাতসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত শাহিদুল ইসলাম বিজয়সহ ৫ জন শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মারামারির একপর্যায়ে মার্কেটিং বিভাগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা খেলা দেখতে যাওয়া দর্শকদের মধ্যে থাকা ছাত্রীদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে ভয়ার্ত ছাত্রীরা মাঠের পেছন দিকে বেরিয়ে আসেন।

খেলা চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালনকালে এক বিএনসিসি ক্যাডেট কর্পোরালের কলার চেপে ধরেন বঙ্গবন্ধু হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ সাহা সেতু (মার্কেটিং)। পরে অন্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত জুনায়েদ ইসলাম বলেন, ‘আমি সেখানে ফেরাতে গেছি। তারা উল্টো আমাদের মেরেছে। আমি নিজে কাউকে মারিনি।’

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ জানান, ‘দুই বিভাগের ঘটনায় ওখানে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের ফেরানোর চেষ্টা করে। ছাত্রলীগের কেউ কারও ওপর হামলা করেনি। আর যদি এ ঘটনার ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকে বা পরবর্তীতে ঝামেলা হয় তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বাংলা বিভাগের সভাপতি শামসুজ্জামান মিলকী জানান, ‘খেলা চলাকালীন রেফারির কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হলেও খেলা চালিয়ে নেয়ার স্বার্থে আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু খেলা শেষে আমরা ফিরে আসার সময় খেলোয়াড়, শিক্ষক, সমর্থকসহ সকলের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। এতে আমাদের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর প্রতিবাদে সোমবার অনুষ্ঠিতব্য তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলা আমরা বয়কট করেছি।’

খেলা পরিচালনা কমিটির প্রধান ড. মো. শামিমুল ইসলাম জানান, ‘এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা প্রশাসনের সাথে সার্বিক ঘটনার বিষয়ে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই বিভাগের মধ্যকার মারামারিতে যারা আহত হয়েছে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও মেডিকেলে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এনআই

আরও পড়ুন