• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০১৯, ০৩:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৪, ২০১৯, ০৩:৩০ পিএম

জুড়ীর টিলায় অমূল্য রত্ন (৩)

কমলা চাষি হিসেবে পরিচয়পত্র রয়েছে, নেই কোন সুযোগ-সুবিধা

কমলা চাষি হিসেবে পরিচয়পত্র রয়েছে, নেই কোন সুযোগ-সুবিধা

কমলার জন্য বিখ্যাত মৌলভীবাজার। হেমন্তের শুরুতে শুরু হয় কমলার মৌসুম। কমলার মৌসুমে হাসি ফুটে কৃষকদের মুখে। জেলার জুড়ী উপজেলায় কমলার চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। তাই জুড়ী উপজেলার বড় বাগানগুলোতে কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তাদের যাতায়াত বেশি। ছোট ছোট বাগানগুলোতে কর্মকর্তারা যান বলে অভিযোগ সেখানকার চাষিদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় কমলা বাগানের সংখ্যা ১৪৬টি। জেলাজুড়ে ১৭৮ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে। তার মধ্যে জুড়ী উপজেলায় ৯২ হেক্টর, বড়লেখায় ৬০ হেক্টর, কুলাউড়ায় ২০ হেক্টর জমিসহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় এই কমলার চাষ। এর মধ্যে কমলা চাষি রয়েছেন ১৪৬ জন।

জুড়ি উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের রূপাছড়া, লালছড়া, হায়াছড়া, শুকনাছড়া, ধুমা বাড়িসহ পাহাড়ি এলাকার কয়েকটি বাগানের মালিক জানান, আমাদের বাগানগুলো ছোট ছোট। এখানে কোন কোন বাগানে ২০-৩০টি, কোন বাগানে ৪০-৫০টি ও কোন বাগানে ৭০-৮০টি কমলা গাছ রয়েছে। আবার কোন বাগানে তার চেয়েও বেশি কমলা গাছ রয়েছে। এই ছোট বাগানগুলোতে কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তারা যান না। অনেক সময় তাদের সাথে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায় না। কমলার মৌসুমে বড় বড় বাগানগুলোতে দামি গাড়িতে করে বিভিন্ন মিডিয়ার লোকদের সঙ্গে নিয়ে এসে নিজেদের মতো করে নানা সফলতার কথা তুলে ধরেন।

চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, আগে কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা কোন সভার আয়োজন করলে চিঠির মাধ্যমে জানাতো চাষিদের। এখন অনেক চাষিকে চিঠি পর্যন্ত দেওয়া হয় না। এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তারা কোনো প্রতিকার পাননি।

তারা বলেন, কৃষি অধিদফতর যেভাবে বড় বাগান মালিকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকে তেমনি আমাদেরকে পরামর্শ দিলে কমলার চাষ আরোও বৃদ্ধি পাবে। আমরা যদি কমলার রোগবালাই আর পোকামাকড় দমনের সঠিক ঔষুধ ব্যবহারের উপায় না জানি খুব শিগগিরই এই অঞ্চল থেকে কমলা চাষ চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। ঐতিহ্য হারাবে কমলা চাষের জন্য দেশজুড়ে খ্যাতি পাওয়া এই অঞ্চলটি।

ধুমা বাড়ি এলাকার কমলা চাষি শফিক উদ্দিন জানান, আমার বাগানে প্রায় ৯শ কমলা গাছ আছে। কমলা চাষি হিসেবে পরিচয়পত্র রয়েছে। যাদের পরিচয়পত্র ছিল তাদেরকে বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং সার দেয়া হত। কিন্তু এখন আমরা কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা পাই না। এমনকি কোন খোঁজ খবরও নেয়া হয় না।

আব্দুল কালাম নামের একজন চাষি জানান, আমাদের এলাকায় অনেক কমলা চাষি রয়েছেন। এখানে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা আসেন না। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে কমলা গাছে ফল আসে। আর আশ্বিন ও কার্তিক মাসে ফল পাকা শুরু হয়। বিশেষ করে যখন কমলা গাছে ফল আসে সেই সময় যথা সম্ভব চাষিদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। আমরা তাদেরকে নিয়মিত সেচ কীটনাশক প্রয়োগের কথা বলি যাতে করে গাছ থেকে ফল ঝরে না পড়ে।

চাষিদের অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, জেলাজুড়ে দেড় শতাধিক কমলা বাগান রয়েছে। লোকবল কম থাকায় অনেক বাগানে আমাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না।

কেএসটি

আরও পড়ুন