সঙ্কট কাটাতে এবার মিসর থেকে আমদানি করা হচ্ছে পেঁয়াজ। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে কার্গো বিমানে ঢাকায় পৌঁছাবে পেঁয়াজের প্রথম চালান। পর্যায়ক্রমে আমদানি করা আরও পেঁয়াজ কার্গো বিমানে করেই আনা হবে ঢাকায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ জাফর উদ্দীন।
মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এস আলম গ্রুপকে।
রাজধানীসহ সারাদেশে পেঁয়াজের দাম এখন আকাশছোঁয়া। ভারত রফতানি বন্ধ করে দেয়ার বাংলাদেশে ৩৮ টাকার পেঁয়াজ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় পৌঁছায়। পেঁয়াজের বাজার ঠিক রাখতে সরকারের নানা উদ্যোগের মধ্যে দামও বাড়তে থাকে। মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির মধ্যেই ৮০ এবং ৯০ টাকার পেঁয়াজ পৌঁছায় ১২০ টাকায়। এর পর আরও এক ধাপ বেড়ে গিয়ে তা ১৫০ টাকায় পৌঁছায়।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে খুচরা মূল্য ২০০ থেকে ২২০ টাকায় গিয়ে দাঁড়ায়। এক দিন আগে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জানান, পেয়াঁজের বাজার নিয়ন্ত্রণে। তবে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কিনতে না পেরে বহু পরিবার পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধই করে দিয়েছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য সচিব ড. মোহাম্মদ জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানি সংক্রান্ত সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এস আলম গ্রুপের কর্মকর্তাসহ কাস্টমস ও সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব জাফর উদ্দীন দৈনিক জাগরণকে বলেন, পেঁয়াজের উচ্চমূল্য ঠেকাতে বহু উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এসব উদ্যোগ এখনও অব্যাহত রয়েছে। টিসিবি আপাতত পেঁয়াজ আমদানি করছে না। আজকের বৈঠকে মূলত মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানি সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে কার্গো বিমানে ঢাকায় পৌঁছাবে পেঁয়াজের প্রথম চালান।
তিনি জানান, মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এস আলম গ্রুপকে। বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, ‘‘মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে তুরস্ক থেকে, এস আলম গ্রুপ মিসর থেকে এবং আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে জরুরি ভিত্তিতে কার্গো উড়োজাহাজে করে পেঁয়াজ আমদানি করছে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।’’ তবে তার একদিন পরই টিসিবিকে তুরস্ক থেকে আমদানির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমদানিকারকদের উৎসাহিত করতে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে। স্থল ও নৌ বন্দরগুলোতে আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এমএএম/এসএমএম