• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৯:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৯:০৭ পিএম

‘দুদকের মামলায় সাজার হার ৪৪ ভাগ বেড়েছে’

‘দুদকের মামলায় সাজার হার ৪৪ ভাগ বেড়েছে’
ইকবাল মাহমুদ - ফাইল ছবি

দশ বছরেরও কম সময়ের ব্যবধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাজার হার ৪৪ ভাগ বেড়েছে দাবি করে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, এখন দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১১ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ছিল মাত্র ২০ শতাংশ। যা ২০১৯ সালে ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলাদেশের পক্ষে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল (দ্য এইটথ সেশন অব দ্য কনফারেন্স অব দ্য স্টেট পার্টিস টু দ্য ইউনাইটেড কনভেনশন এগেইন্সড করাপশন) এ অংশগ্রহণ করে। সেখানে তিনি একথা বলেন।

কনফারেন্সে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি অনুসরণ করছে। দুর্নীতি পরায়নদের কোনো পরিচয় বিবেচনা না করেই সম্পূর্ণ নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দুর্নীতি এখন আর কোনো দেশের একক সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যা। একক কোনো দেশের একক চেষ্টায় দুর্নীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনাও কঠিন। সেজন্য দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে দুদক।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের ভূমিকাকে বাংলাদেশ দৃঢ়তার সঙ্গে সমর্থন করছে। জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদের নির্দেশনা অনুসারে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পদ পুনরুদ্ধারে কিছুটা অগ্রগতি সাধন করেছে। বাংলাদেশ কয়েকটি মানিলন্ডারিং মামলায় সাফল্যের সঙ্গে সিঙ্গাপুর থেকে ২.০৬ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার এবং ০.৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যকে ০.৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুনরুদ্ধার করে দিয়েছে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন ২৫টি ব্যাংক হিসাব, ৬ জন উপকারভোগীর বিভিন্ন বন্ড, সিকিউরিটিস এবং বীমা পলিসি জব্দের মাধ্যমে ২.৯২ মিলিয়ন ডলার মূল্যের অর্থ জব্দ করেছে। একই সময়ে ৫টি বৈদেশিক ব্যাংক হিসাবের ০.৫৫ মিলিয়ন ডলার জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, ১২.৪৪ একর জমি, বিভিন্ন প্রকারের ১০টি বাড়ি, ৪টি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, দুটি বাণিজ্যিক স্থাপনা এবং ৬টি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। একই মেয়াদে ৬১.৬৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের মাধ্যমে পুনরুদ্ধারের আদেশ পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার সাজার হার বৃদ্ধির মাধ্যমে এর কর্মসম্পাদনার ধারাবাহিক মানোন্নয়ন ঘটছে। ২০১১ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ছিল মাত্র ২০ শতাংশ, যা ২০১৯ সালে ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল বাস্তবায়নের জন্য যেসব ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা রয়েছেন- তাদের মাধ্যমে দুর্নীতির আগাম বার্তা বিনিময়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে- যাতে দুর্নীতি ঘটার আগেই তা প্রতিরোধে সমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা যায়। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এমন নেটওয়ার্কিংয়ের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে- যাতে নিয়মিতভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ধারণা বিনিময় করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও সমাজে সুশাসন নিশ্চিত করতে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল গ্রহণ করেছে। এছাড়া, বাংলাদেশ স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক গভর্নেন্স (সুশাসন) এর জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও তথ্য কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান গঠন করেছে।

এই কনফারেন্সে দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, দুদক পরিচালক নাসিম আনোয়ার, গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী, মো. মনিরুজ্জামান খানসহ অনেকেই।

এইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন