• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৩, ২০১৯, ০৭:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৪, ২০১৯, ০৩:০৪ এএম

সাড়ে ১২ লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে, খুলনা-মোংলায় মধ্যরাতে ফণীর আঘাত

সাড়ে ১২ লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে, খুলনা-মোংলায় মধ্যরাতে ফণীর আঘাত

আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি আশ্রয় নেয়া মানুষের বাড়ি-ঘরের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাত পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৮ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। মধ্যরাতের যেকোনো সময়ে খুলনা-মোংলায় ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানবে। তবে ফণী কিছুটা দুর্বল হলেও এ অঞ্চলে সতর্ক সংকেত ৭ অব্যাহত থাকবে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী লন্ডন থেকে নির্দেশনা দিয়েছেন। 

শুক্রবার (৩ মে) রাতে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সদস্যরা। 

সাংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ শাহ কামাল, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব নজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

সংবাদ সমম্মেলনে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, ঘূর্নিঝড় ফনী উড়িশ্যায় আঘাত হানানর পর কিছুটা দূর্বল হয়েছে। আজ মধ্যরাতে বাংলাদেশের খুলনা-মোংলা এবং তদসংলগ্ন এলাকায় আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। রয়েছে জলচ্ছ্বাসেরও সম্ভাবনা। তবে কোন অবস্থাতেই অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ খুলনা অঞ্চলে যে সময় আঘাত হানবে, তখন এর বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। অতিতেও দেখা গেছে এমন গতিবেগের ঝড়ে বাংলাদেশে অনেক জানমালের ক্ষতি হয়েছে। আর যখন আঘাত হানবে তখন সকলের ঘুমিয়ে থাকার কথা। ফনী কিছুটা দুর্বল হলেও খুলনা এবং এর আশপাশের অঞ্চলে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত থাকবে। প্যানিক সৃষ্টি করতে নয়, তবে সতর্ক এবং ১৯ উপদ্রুত এলাকার সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে হবে। তিনি এসব এলাকার মানুষকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার আহবান জানান।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের ৪ হাজার ৭১টি সাইক্লোন সেন্টারে মোট ১২ লাখ ৪০ হাজার ৭৯৫ জনকে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আজ রাত পর্যন্ত ১৫ থেকে ১৮ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। 

তিনি বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রগুলেঅতে নিরাপত্তায় সার্বক্ষনিকের জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু আশ্রয় কেন্দ্রগুলোই নয়, আশ্রয় নেয়া মানুষের বারি-ঘরের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি কোষ্টগার্ড, আনসার ভিডিপি, র‌্যাব, সেনাবাহিনীর সঙ্গে রেডক্রিসেন্ট ভলান্টিয়ার এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও উপদ্রুত এলাকায় কাজ করছেন।  ৩০টি নৌ বাহিনীর জাহাজ এবং বিমান বাহিনীর কয়েকটি হেলিকপ্টারে ইতিমধ্যেই ত্রাণ-সামগ্রী ভরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে এসব ত্রাণ সামগ্রী আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পৌছে দেয়া হবে। সহযোগিতায় সরকারের পক্ষ থেকে ৪০ কোটি টাকা মজুদ রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।  
 
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব নজিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিক এ ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে তদারকি করছেন। প্রধানমন্ত্রী জানমালের যাতে কোন রকম ক্ষয়ক্ষতি না হয়, সেজন্য যা যা করার দরকার তা  করার নির্দেশ দিয়েছেন। উপদ্রুত ১৯ জেলার ডিসিরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে কাজে সম্পৃক্ত করেছেন। তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে নানা নির্দেশনা। 

 

এমএএম/বিএস