• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০১৯, ০৯:২৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৬, ২০১৯, ০৯:২৫ পিএম

‘প্রকৃতি ও সমাজকে রক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে’

‘প্রকৃতি ও সমাজকে রক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে’
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান-ছবি : জাগরণ

আগামী দিনের উন্নয়নে প্রকৃতি ও সমাজকে রক্ষা করার যে অঙ্গীকার, সেটি রক্ষা করতে হবে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাস্তবায়ন। আমাদের সেটি বাস্তবায়নের দিকে যেতে হবে। এক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর শাহবাগে সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি ও সংরক্ষণে তরুণ সমাজের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উন্নয়ন সমুন্নয়ের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান এসব কথা বলেন।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গ্রীণ এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট।

গ্রীণ এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্টের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ড. এ আতিক রহমান, সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন, সঙ্গীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঙ্গীত শিল্পী প্রিয়াঙ্কা গোপ, জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, অভিনেত্রী তারিন জাহান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রীণ এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্টের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মাহি।

আতিউর রহমান বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আমরা প্রত্যেকেই প্রকৃতি ও প্রজন্মকে রক্ষা করার ঐক্যমত্যে এসেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সবাইকে বাঁচাতে হবে। আমাদের সবুজায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বেশি বেশি বৃক্ষ রোপন করতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কাজ হলো মনের সবুজায়ন। মনের সবুজায়নের জন্য তরুণ প্রজন্মকে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী দিনের উন্নয়নে প্রকৃতি ও সমাজকে রক্ষা করার যে অঙ্গীকার, সেটি রক্ষা করতে হবে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাস্তবায়ন। আমাদের সেটি বাস্তবায়নের দিকে যেতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু তরুণদের ওপর ছেড়ে দিলে হবে না। এক্ষেত্রে যারা বিদ্যান রয়েছেন, তারাসহ সবাইকেই সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।’

আতিউর রহমান বলেন, আমরা শুধুই অর্থনৈতিক মানুষ নই, আমরা সামাজিক মানুষ। সমাজের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা চলি। এখানে প্রকৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সামাজিক জীব হিসেবে আমাদের প্রকৃতিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। বিভিন্ন স্কুল, কলেজে জলবায়ু ক্লাব তৈরি করতে হবে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সকলের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা যেতে পারে। তরুণ প্রজন্মকেই এ কাজটি করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘নদী যেখান থেকে সরে যায়, সভ্যতা সেখান থেকে ওঠে যায়।’ আমরা আমাদের বুড়িগঙ্গাকে গলা টিপে মেরে ফেলছি। হাইকোর্টকে ধন্যবাদ জানাই যে, ‘নদী এক জীবন্ত সত্তা’ বলে ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের নদীকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। আর এ উদ্যোগ নিতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ তরুণদের বাংলাদেশ। কাজেই তরুণদের চিন্তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। তরুণদের সম্পৃক্ত করতে পারলেই আমাদের টেকসই উন্নয়ন দ্রুত সম্ভব হবে।’’

ড. এ আতিক রহমান বলেন, ‘প্রকৃতি তার আপন গতিতে চলে। প্রকৃতির মানুষকে প্রয়োজন নেই। কিন্তু মানুষের প্রকৃতিকে প্রয়োজন আছে। তাই প্রকৃতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব মানুষেরই। প্রকৃতি ও পরিবেশকে সুন্দর ও নির্মল করার দায়িত্ব তরুণদেরই নিতে হবে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নতি পরিবেশ বান্ধব এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে হবে। দারিদ্র বিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে দেশকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে সবাই একই কথা বলেন। তাই এক্ষেত্রে সকলে মিলে এগিয়ে আসতে হবে।

অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন বলেন, ‘আমরা যদি উন্নয়ন করতে চাই এবং একে টেকসই করতে চাই তাহলে পরিবেশ সুন্দর রাখতে হবে। আমরা যদি পরিবেশ ঠিক রাখতে না পারি তাহলে টেকসই উন্নয়ন টেকসই হবে না। এক্ষেত্রে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। আর সচেতনতা সৃষ্টির অন্যান্য সাপোর্টও প্রয়োজন। এটি সরকারের পলিসি থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন সহায়তা হতে পারে।

তিনি বলেন, শিশুদের বইয়ের সিলেবাসে পরিবেশ বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এটি শুধু বইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, ফিল্ডে গিয়ে প্র্যাকটিস হচ্ছে না। কোমলমতি শিশুদের ফিল্ডের বাস্তবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তাদের এ কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে।

অনুষ্ঠান শেষে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত রচনা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। রচনা প্রতিযোগিতায় চারটি পর্যায়ে মোট ১৪ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রামাণ্যচিত্রে বিজয়ী তিনজনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

এমআইআর/এসএমএম