• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২১, ১১:৪০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৪, ২০২১, ১১:৪০ এএম

পানি বাড়ছে ৭৮টি নদ-নদীর

পানি বাড়ছে ৭৮টি নদ-নদীর
সংগৃহীত ছবি

চলতি বছর নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশে সক্রিয় হয় মৌসুমি বায়ু। ফলে জুন মাসজুড়েই উজানসহ দেশের ভেতরে অনেক এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হয়েছে।

এরই মধ্যে নদ-নদী পানিতে টইটম্বুর।

আগামী ১০-১২ জুলাই পর্যন্ত দেশের ভেতর ও উজানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির আভাস রয়েছে। এ সময়ে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও মেঘনা অববাহিকায় দ্রুত পানি বাড়বে। বিপৎসীমা অতিক্রম করে শুরু হবে মৌসুমের প্রথম বন্যা।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো বন্যাকবলিত হতে পারে। পর্যায়ক্রমে দেশের মধ্যাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলেও বন্যা হতে পারে।

আগামী তিন দিন দেশের অন্যতম প্রধান তিনটি নদনদী ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মার পানি বেড়ে যেতে পারে। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর ক্রমান্বয়ে পদ্মা অববাহিকায় পানি হ্রাস পাবে।

রাজধানীর আশপাশের নদীগুলো বন্যায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা নেই।

আগাম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে জুন মাসজুড়ে দেশের বেশির ভাগ জেলায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনে সীমান্তের উভয় পাশে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হচ্ছে। এর প্রভাবে দেশের ১০১টি নদী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের মধ্যে ৭৮টিতেই পানি বাড়ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশে উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরার নানা জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকা ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি স্থানে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে।

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা এবং পদ্মার পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়বে।

সুরমা ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়বে।

কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক বাংলাদেশি পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল বলেন, আগামী ৯ জুলাই অমাবস্যা। ফলে বৃষ্টির পানি তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে নেমে যেতে সময় লাগবে। এসব নদীর উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে মাঝারি মানের বন্যা হতে পারে। বৃষ্টির পানি নেমে যেতে ২০ জুলাই পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, সাধারণত দেশের চারটি অববাহিকায় বন্যা হয়ে থাকে। এগুলো হলো ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, গঙ্গা-পদ্মা, মেঘনা ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অববাহিকা। এখন যে বন্যার পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে, সেটা প্রথম তিনটিতে ঘটার আশঙ্কা আছে। ব্র

হ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকায়ই ১০ দিনে এক হাজার ৫৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর কারণে ৬ জুলাই উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে।

এরই মধ্যে সিলেট-সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। মুহুরী, খোয়াই ও কংস নদের পানি তিনটি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সমকালের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ।

জাগরণ/এমএ/এসএসকে