• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ১০:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ১০:০২ পিএম

রোগ নির্ণয় ফি আদায়ে এখনো স্বেচ্ছাচার বেসরকারি হাসপাতালগুলো 

রোগ নির্ণয় ফি আদায়ে এখনো স্বেচ্ছাচার বেসরকারি হাসপাতালগুলো 
ল্যাবে পরীক্ষা চলছে- ফাইল ছবি

বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার খরচ আদায়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা মনোভাব যাচ্ছেই না। পরীক্ষা ভেদে সরকারি হাসপাতাল থেকে বেসরকারি হাসপাতালে খরচের হারে বিস্তর ফারাক। যা প্রতিষ্ঠিত করতে দেয়া হয় মনগড়া যুক্তি বলে অভিযোগ আছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুরো শরীরের এমআরআই খরচ তিন হাজার টাকা। কোনো ইনজেকশন লাগলে এ পরীক্ষা বেড়ে বড়জোর সাড়ে পাঁচ হাজার টাকায় গিয়ে ঠেকতে পারে। অথচ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই পরীক্ষা করতে লাগে ন্যূনতম সাত হাজার টাকা। কোনো অঙ্গের এমআরআইয়ের করতে গুণতে হয় সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা। স্কয়ার হাসপাতালে মস্তিষ্কের এমআরআই করতে ১১ হাজার ৫০০, পুরো শরীরে করতে নেয়া হয় ৪৭ হাজার টাকা। অ্যাপোলো হাসপাতালে মস্তিষ্কের এমআরআই এ সাড়ে ১১ হাজার, পুরো শরীরের জন্য ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা।

বেসরকারি হাসপাতালে এতো টাকার বিনিময়ে এ ধরণের পরীক্ষা নীরিক্ষার ফলাফল নিয়েও সংশয় থেকে যায়। মাঝেমাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দেখা যায় মানহীন বা মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট নিয়ে হয় পরীক্ষা, কখনো কখনো চিকিৎসকের বদলে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দিয়ে পরীক্ষা করানো হয় নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে। সম্প্রতি পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিবেদন দেয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ঢাকার উত্তরার একটি নামি হাসপাতালকে ১৭ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

সম্প্রতি ডেঙ্গুজ্বর বিস্তারের শুরুতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় পরীক্ষা ফি নৈরাজ্য নতুন করে সামনে আসে। যা সরকার নির্ধারণ করে দিতে বাধ্য হয়। এর মাঝেও বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ উঠতে থাকে।

বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় কোন পরীক্ষার ফি কত হবে- এমন কোনো সুনির্দিষ্টতা নেই। হাসপাতালগুলো নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী ফি নির্ধারণ করে।

হাসপাতাল ফির স্বেচ্ছাচার নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনটি করেছিলেন হিউম্যান রাইটস ল ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম। তার হয়ে আদালতে লড়াই করেন বশির আহমেদ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেসরকারি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা শাখার পরিচালক আমিনুল হাসান বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন পরীক্ষার ফি নির্ধারণে এখনও পর্যন্ত কোনো নীতিমালা নেই। তবে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, হাইকোর্ট যখন আদেশ দিয়েছে সেটাই মান্য করা উচিৎ।

২০১৮ সালে এ বিষয়ে হাইকোর্টের একটি আদেশ আছে। একটি রিট আবেদনের পর বিচারপতি বিএম হাসান ও খায়রুল আলমের বেঞ্চ রোগ পরীক্ষার ফি নির্ধারণ এবং তার তালিকা টানাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়। ১৫ দিনের মধ্যে এটি যেন কার্যকর হয়, সেটি নিশ্চিত করেত স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএমডিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয় আদেশে। কিন্তু আদেশ পর্যন্তই শেষ। নেই এর মনিটরিং। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কী করছে- সেটাও পরিষ্কার নয়।

আরএ/বিএস 
 

আরও পড়ুন