• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০১৯, ১১:৩৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৯, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম

গণবিক্ষোভের মুখে প্রত্যর্পণ বিলের মৃত্যু হয়েছে: ক্যারি ল্যাম

গণবিক্ষোভের মুখে প্রত্যর্পণ বিলের মৃত্যু হয়েছে: ক্যারি ল্যাম
হংকংয়ের প্রধান রাজনৈতিক নেতা ক্যারি ল্যাম

চীন আরোপিত প্রত্যর্পন বিলের ইস্যুতে শুরু হওয়া হংকং বিক্ষোভ সম্প্রতি দেশটির গণতন্ত্রকামীদের সরকার বিরোধী বিক্ষোভে রূপ নিয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে, চীনের সঙ্গে করা প্রত্যর্পণ বিলটির 'মৃত্যু' হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শাসক ক্যারি ল্যাম। বিশ্লেষকদের দাবি, বিলটি নিয়ে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের গণবিক্ষোভের মুখে পড়ায় এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে বাধ্য হয় সরকার।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আন্তার্জাতিক বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, হংকংয়ের প্রধান রাজনৈতিক নেতা ক্যারি ল্যাম স্বীকার করেন যে, ব্যাপক গণবিক্ষোভ ফলে বিলটি নিয়ে সরকারের তৎপরতা পুরোপুরি ভণ্ডুল হয়ে গেছে।

এর আগে গত মাসে লাখো জনতার উত্তাল বিক্ষোভের মুখে বিলটির উত্থাপনের জন্য ক্ষমা চান চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যাম। যার অংশ হিসেবে আসামি প্রত্যর্পণ নামে বিতর্কিত এই বিলটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও এরপরও আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন অসংখ্য গণতন্ত্রকামী জনতা। যার প্রেক্ষিতে তারা উল্টো ক্যারি ল্যাম সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হন। এ সময় তারা বিতর্কিত এই বিলটি স্থায়ীভাবে বাতিলের দাবি জানাতে শুরু করেন।

যদিও কথিত এই অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলে কোনো ধরনের পরিবর্তন আনা হবে না বলে মন্তব্য করেছিলেন চীনপন্থি এই শাসক। তবে দেশব্যাপী ব্যাপক গণআন্দোলনের মুখে অবশেষে মঙ্গলবার খোলাখুলি ক্যারি ল্যাম স্বীকার করেন, তার সরকারের এই প্রচেষ্টাটি সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

অপরদিকে গত মাসে চীন ও তাইওয়ানে আসামি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত একটি বিলের পক্ষে সমর্থন জানান হংকংয়ের চীনপন্থি শাসক। মূলত এরপরই সড়ক অবরোধ করে সরকারের এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে নামেন অঞ্চলটির সাধারণ জনগণ। তাদের আশঙ্কা বিলটি পাস হলে হংকংয়ের রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপ অনেকাংশে বেড়ে যাবে। পরবর্তীতে ব্যাপক আন্দোলনের মুখে বিলটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, বিলটি স্থগিত না রেখে পুরোপুরি বাতিল করা হোক।

যার অংশ হিসেবে গত ১ জুলাই চীনের কাছে হংকং হস্তান্তর বার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকেই সড়কে জড়ো হতে শুরু করে হাজার হাজার লোকজন। এক সময় সরকারি দফতরগুলোতে চালানো হয় ভাংচুর। এমনকি ধাতব বস্তু দিয়ে পার্লামেন্ট ভবনেও চালানো হয় হামলা। সরকার বিরোধী এই আন্দোলনের এক পর্যায়ে রাজপথে অবস্থান নেয় হাজারও গণতন্ত্রকামী জনগণ।

পরবর্তীতে গত রবিবার (৭ জুলাই) কুউলোন শহরের মধ্য দিয়ে আন্দোলনরতরা মিছিল নিয়ে পশ্চিম কুউলোনের রেল স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে যায়। স্টেশনটির মাধ্যমেই দ্রুতগতির রেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে চীনের মূল অংশের সঙ্গে সংযুক্ত হয় হংকং। মূলত মূল ভূখণ্ডের পর্যটকদের আকৃষ্টের জন্যই এবারের বিক্ষোভে চীনের জাতীয় সঙ্গীত এবং দেশটির ভাষায় লিখিত ব্যানার বহন করে। অপর দিকে আয়োজকদের দাবি, এবারের বিক্ষোভে প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজারের বেশি লোক সমবেত হয়েছেন। যদিও পুলিশের দাবি, গত রবিবার মাত্র ৫৬ হাজার লোক এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।

প্রায় ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের অধীনে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অঞ্চলটি শক্তিশালী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। তখন 'এক দেশ দুই পদ্ধতি' একটা চুক্তি হয়েছিল। মূলত সেই চুক্তির ভিত্তিতে হংকং শাসিত হবে এবং স্বায়ত্তশাসনের গ্যারান্টি থাকবে। সম্প্রতি খসড়া করা প্রত্যর্পণ বিলে সেই স্বায়ত্তশাসন ক্ষুণ্ণ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিক্ষোভরত লোকজন।

এসকে

আরও পড়ুন