• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০১৯, ০৬:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৬, ২০১৯, ০৬:৩২ পিএম

আগামী এপ্রিলের মধ্যেই তুরস্কে ‘এস-৪০০’ মোতায়েন

আগামী এপ্রিলের মধ্যেই তুরস্কে ‘এস-৪০০’ মোতায়েন

 

আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যেই তুরস্কে ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। সোমবার (১৫ জুলাই) ২০১৬ সালের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, “রাশিয়া থেকে ইতোমধ্যে ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আসতে শুরু করেছে। গত চার দিনে এর বিভিন্ন অংশ দেশে এসে পৌঁছেছে। আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে আগামী ২০২০ সালের এপ্রিল নাগাদ এটি পুরোপুরি মোতায়েন সম্ভব হবে। যারা আমাদের দেশে আঘাত হানতে চায় তাদের মোকাবিলায় ‘এস-৪০০’ হবে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে এটি তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে রাশিয়ার তৈরি আটটি যুদ্ধবিমান কেনা হয়েছে।”

এর আগে গত শুক্রবার (১২ জুলাই) মার্কিন বিরোধিতা সত্ত্বেও উপেক্ষা করে রাশিয়ার কাছ থেকে অতি অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ‘এস-৪০০’ প্রথম চালান তুরস্কে পৌঁছায়। রাজধানী আঙ্কারার একটি সামরিক বিমানঘাঁটিতে এর প্রথম চালানটি পৌঁছায়। যদিও একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং রাশিয়ার তৈরি ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র কেনায় আঙ্কারার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এ দিকে এরদোগান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেও ১০০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেছে। সেই খাতেও দেশটি ইতোমধ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ করে রেখেছে। যার অংশ হিসেবে বিমানটির ৯৩৭টি পার্টস উৎপাদন করছে তুর্কি কোম্পানিগুলো। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ন্যাটো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং এটি একটি নিরাপত্তাজনিত হুমকি।

ট্রাম্প প্রশাসন চায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বদলে তুরস্ক যাতে মার্কিন প্যাট্রিয়ট বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা ক্রয় করে। তবে তুরস্কের দাবি, এফ-৩৫ ও এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা অবস্থানে থাকবে। তাছাড়া বিকল্প ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই ধীরগতি দেখিয়েছে। তবে, রাশিয়ার সঙ্গে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় চুক্তি আগামীতেও অব্যাহত থাকলে এফ-৩৫ কর্মসূচি থেকে তুরস্ককে বাদও দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি দেশটি খুব শিগগিরই অর্থনৈতিক অবরোধের মুখেও পড়তে পারে।

অপর দিকে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি রাশিয়ার কাছ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ক্রয় ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কখনই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে না।’ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ২৯ সদস্যের সামরিক জোট ন্যাটোয় দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক বাহিনী এই তুরস্কের। মার্কিন সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই মিত্রের অবস্থান কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ইরাক, সিরিয়া ও ইরানের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে দেশটির।

উল্লেখ্য, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আঙ্কারা। তখন দেশটির বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সামরিক সহায়তা দেয় এরদোগান সরকার। যে কারণে সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও বেশ কয়েকটি ন্যাটোভুক্ত কয়েকটি দেশের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কে অবনতি দেখা দেয়, যা এখনো বিদ্যমান।

সূত্র : রয়টার্স

এসজেড

আরও পড়ুন