• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০১৯, ০৩:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৩, ২০১৯, ০৩:৫৬ পিএম

রাশিয়ার সামরিক বিমানকে সতর্ক করতে গুলি দক্ষিণ কোরিয়ার

রাশিয়ার সামরিক বিমানকে সতর্ক করতে গুলি দক্ষিণ কোরিয়ার

আকাশসীমা লঙ্ঘন করে একটি রুশ সামরিক বিমান প্রবেশ করলে কয়েকশত সতর্কতা গুলি ও অগ্নিতরঙ্গ (মশালের মতো আগুনের কুন্ডলী) নিক্ষেপ করে দক্ষিণ কোরিয়ার যুদ্ধবিমান। দেশটির বিতর্কিত একটি দ্বীপে এ-৫০ মডেলের রুশ বিমানটি দুইবার এবং একই সঙ্গে একটা চীনা বোমারু বিমান ও দ. কোরিয়ার এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন (কেডিআইজেড) লঙ্ঘন করে বলে সিওল অভিযোগ জানায়।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিমান প্রথমবারের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশ সীমা লঙ্ঘন করল বলে সিওলস্থ জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়। মন্ত্রণালয় বলছে, মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সকালের দিকে দুটো রুশ বোমারু বিমানের সঙ্গে দুটো চীনা বোমারু বিমানও কেডিআইজেড লঙ্ঘন করে। স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে প্রথমবারের মতো রুশ সামরিক বিমানটি ডোকডো দ্বীপের আকাশসীমায় প্রবেশ করে, সতর্কতা গুলি ছোঁড়ার পরে রুশ বিমানটি চলে যায়, মিনিট বিশেক পর ফের ফিরে এসে কোরিয়ান বাহিনীকে উস্কাতে থাকে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী রয়টার্সের কাছে জানান। এই দ্বীপ নিয়ে জাপানের সঙ্গে কোরিয়ার বিরোধ চলছে, জাপানের কাছে এর নাম তাকেশিমা। রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধের পরেও রয়টার্সকে কোনো জবাব দেয়নি তারা।
 
দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ উপদেষ্টা চুইং ইউই ইয়োং মঙ্গলবার রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সচিব নিকোলাই প্যাট্রাসেভের কাছে দৃঢ় আপত্তি জানিয়ে পরিষদকে দ্রুত এই ঘটনার মূল্যায়ন ও ব্যবস্থা নিতে বলেছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি কার্যালয়। রাষ্ট্রপতির দফতর অনুযায়ী চুং বলছে, ‘আমরা এই পরিস্থিতিকে খুব গভীর গুরুত্ব দিচ্ছি, নিয়েছি এবং যদি এর পুনরাবৃত্তি করা হয় তবে আমরা আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নেব।’

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিম ইন-চুল বলেন, মঙ্গলবার রাশিয়ার ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি চিফ অফ মিশন ম্যাক্সিম ভোলকোভ ও চীনা রাষ্ট্রদূত কিউ গুয়োহোংকে এমন পরিস্থিতির কঠোর প্রতিবাদ ও পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে তার ব্যবস্থা নিতে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আহ্বান জানিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস) এর একজন কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়ার বিমানটি ছিল এ-৫০ মডেলের একটি প্রাথমিক সতর্কবার্তা এবং নিয়ন্ত্রণ বিমান, এবং অনুপ্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া একটি এফ-১৫ এবং এফ-১৬ বিমান মোতায়েন করে। বিমান দুটি থেকে ৩৬০ রাউন্ড গোলাবারুদ ও বিস্ফোরণ নিক্ষেপ করা হয়।

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী অগ্নিতরঙ্গ ও সতর্কবার্তা গুলিতে কৌশলগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে’। রাশিয়ান বিমানটি কোন ধরনের হুমকিস্বরুপ প্রতিক্রিয়া জানায়নি বলে কর্মকর্তা জানান। মন্ত্রণালয় বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ান যুদ্ধাবিমান বহিক্রামনের প্রতিক্রিয়ায় ‘স্বাভাবিক জবাব জানায়’ মাত্র।

কোরিয়ার দখলকৃত দ্বীপটি নিয়ে জাপানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছে, এমনকি একে কেন্দ্র করে দেশদুটির মধ্যে বাণিজ্য বিরোধও তুঙ্গে। রুশ-চীন এমন করে হঠাৎ কোরিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করবে, তাও আবার এই বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে, তার উদ্দেশ্য নিয়ে বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিবিসি জানায়, এর আশেপাশেই চীন-রাশিয়া যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছিল, কোরিয়া মার্কিন জোটের অংশ, এই অঞ্চলে তাই উত্তেজনা ছড়ালে বিশ্বে সেই উত্তেজনা ছড়াতে সময় লাগবে না।

সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

এসজেড

আরও পড়ুন