• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০১৯, ০৪:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১১, ২০১৯, ০৪:৫৪ পিএম

চীন প্রেসিডেন্টের ভারত সফর

চেন্নাইয়ে মোদী-পিং অনানুষ্ঠানিক বৈঠক আজ

চেন্নাইয়ে মোদী-পিং অনানুষ্ঠানিক বৈঠক আজ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে পৌঁছেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বর্তমানে চেন্নাইয়ে অবস্থান করছেন তিনি। এখানে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন তিনি। গত বছর এপ্রিলে চীনের উহানে প্রথম অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন এই দুই নেতা। সেই সময়েই চীনের প্রেসিডেন্টকে ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদী।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ভারতীয় বার্তা সংস্থা এনডিটিভি প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, এই দুই নেতার সাক্ষাতের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচিও রয়েছে। জানা গেছে যে তারা দুজনেই মহাবলীপুরমের মন্দিরে যাবেন যা বর্তমানে মামল্লাপুরম নামে পরিচিত। একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ এবং নৈশভোজ সারার সময়েই দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে কথাবার্তা হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। সেই সময় তাদের দুজনের মধ্যে কাশ্মীর নিয়েও আলোচনা হয়। ওই বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে চীন জানায় যে জিনপিং "জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রাখছেন" এবং চীন "এই পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে এমন যে কোন একতরফা পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে"। এই বিবৃতির পরেই পাল্টা উত্তরে ভারতের কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রণালয় জানায়, চীন ভারতের অবস্থান সম্পর্কে ভালভাবেই জানে এবং "অন্য কোনও দেশের ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়", বলেও স্পষ্ট ভাষায় জানায় ভারত।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর ভারত সফর ও আলোচ্য ইস্যু সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ১০টি তথ্য:

ভারতে এলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। প্রধানমন্ত্রী মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর মধ্যে শনিবার সকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা। সরকারি সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরানুসারে এই বৈঠকে কোনো রকম চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হবে না বা কোনও যৌথ বিবৃতিও জারি করা হবে না। এই বৈঠকের প্রধান উদ্দেশ্য হল দুই দেশের মধ্যে উচ্চস্তরের সম্পর্ক  আরও দৃঢ় করে গড়ে তোলা এবং মূল বিষয়গুলি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করা।
 
সন্ত্রাসবাদে অর্থ জোগানো, সন্ত্রাস শিবিরে প্রশিক্ষণ ও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে যে কোনও রকম সহায়তা দেওয়া, আলোচনার অন্যতম মূল বিষয় হবে এগুলিও। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা এবং সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা নিয়েও কথা হবে। সূত্র বলছে যে, উভয় পক্ষই ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে একটি সমাধানে আসার চেষ্টা করতে পারে, যা পরে ঘোষণা করা হবে।
 
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার দুপুর ২টা নাগাদ চেন্নাই পৌঁছন। তিনি সেখান থেকে তিনি মহাবলীপুরমে যাবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাকে প্রায় তিনটি প্রাচীন স্মৃতিসৌধ - অর্জুনের তপস্যা, পঞ্চ রথ এবং শোর মন্দির দেখাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দুই নেতা একসঙ্গে শোর মন্দিরে আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদির উহান সফরকালে প্রেসিডেন্ট শি তাঁকে হুবেই যাদুঘরটি ঘুরে দেখিয়েছিলেন।
 
শনিবার সকালে দুই নেতা তাজ ফিশারম্যানের কোভ রিসর্ট এন্ড স্পায় তাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক সারবেন, তারপর দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী- প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন। 
 
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে প্রথম অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনটি হয়েছিল গত বছর উহানে। ডোকলামে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ৭৩ দিনের চাপানউতোরের কয়েক মাস পরে, চীনের হ্রদ শহর সেটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
 
এই বৈঠকটি ভারত-চীন সীমান্ত অঞ্চলে "শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে" উভয় দেশের সামরিক বাহিনীর জন্য নতুন দিকনির্দেশক হবে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা অপরিহার্য বলে উভয় দেশ একমত।
 
কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, সে সময় দুই নেতা আস্তানায় বৈঠক করার পর সিদ্ধান্ত নেন যে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে তাঁরা তাঁদের মতপার্থক্যকে বিরোধে পরিণত হতে দেবেন না, সেই উপলক্ষে উহান অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
 
বুধবার বেজিং জানিয়েছে যে শি জিনপিং পাকিস্তানের "মূল স্বার্থ" সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। চীনের সরকারি সংবাদসংস্থা সিনহুয়া নিউজ জানায় যে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের উচিত শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির সমাধান করা উচিত।
 
একই দিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট শি ও ইমরান খানের বৈঠকের শেষে একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যার সমাধান "রাষ্ট্রসংঘের সনদ, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাব এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে" যথাযথ ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা উচিত। 
 
চীনের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় ভারত জানায়, "চীন ভারতের অবস্থান সম্পর্কে ভালভাবেই জানে এবং "অন্য কোনও দেশের ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়"। সরকার নিজের অবস্থানে অনড় যে জম্মু ও কাশ্মীর পদক্ষেপ এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে পরিণত করার বিষয়টি একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।

আরও পড়ুন