• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০১৯, ১১:৫২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২০, ২০১৯, ১১:৫২ এএম

ব্রেক্সিট বিভ্রাট

গণভোটের দাবিতে ফের উত্তাল লন্ডন

গণভোটের দাবিতে ফের উত্তাল লন্ডন
গণভোটের দাবিতে উত্তাল লন্ডন- ছবি: গ্যাটি ইমেজ

চলমান ব্রেক্সিট সংকট নিরসনে দ্বিতীয় দফা গণভোটের দাবিতে ফের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে লন্ডনের রাজপথ। শনিবার (১৯ অক্টোবর) লাখো জনতার অংশ গ্রহণে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে আয়োজকদের দাবি, এদিনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১০ লক্ষাধিক জনগণ।

রোববার (২০ অক্টোবর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট প্রকাশিত সংবাদের তথ্য  মতে, চলতি বিক্ষোভকে যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে ধরা হচ্ছে। এতে অংশ গ্রহণকারী লোকজনের মতে, দীর্ঘদিন যাবত অমীমাংসিত অবস্থায় থাকা ব্রেক্সিট ইস্যুতে তারা চূড়ান্ত এবং শেষ কথা জানাতে চান। এবার দ্বিতীয় গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে জনগণকে সেই সুযোগ দিতে হবে।

বিক্ষোভের আয়োজক সংস্থা ‘পিপলস ভোটে’র একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চলতি বিক্ষোভ ব্রিটিশ ইতিহাসে জনগণের বৃহত্তম প্রতিবাদ কর্মসূচিগুলোর মধ্যে একটি। এবারের কর্মসূচিটিতে বক্তব্য রাখেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান, ছায়া ব্রেক্সিটমন্ত্রী স্যার কেইর স্টার্মার, ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিলি এমিলি থর্নবেরি, ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিয়ানে অ্যাবট, ছায়া চ্যান্সেলর জন ম্যাকডনেলসহ প্রমুখ।

পরবর্তীতে একই দিন বিকালে পার্ক লেন থেকে পার্লামেন্ট স্কয়ার অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। যদিও এদিনই দেশটির কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি পেছানোর পক্ষে রায় ঘোষণা করে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। আইনপ্রণেতাদের এমন সিদ্ধান্তকে এরই মধ্যে স্বাগত জানিয়েছেন সড়কে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীরা। পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণে স্লোগান দিয়ে তারা বলেন, ‘আমাদের কথা মানতে হবে, জনগণের আওয়াজ শুনতে হবে।’

বিক্ষোভে আগতরা এ সময় ব্রেক্সিট ইস্যুতে দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে বিভিন্ন রঙ-বেরঙের ব্যানার-প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। যেখানে লেখা ছিল- ‘স্টপ ব্রেক্সিট, টুগেদার ফর দ্য ফাইনাল সে, টোরিস অ্যাগেইনস্ট ব্রেক্সিট, রিমেইন ইজ দ্য অনলি সেইন অপশন, লেবার স্টুডেন্টস ডিমান্ড আ পিপলস ভোট’সহ ইত্যাদি।

এ দিকে বিক্ষোভে উপস্থিত ব্রিটিশ ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিলি এমিলি থর্নবেরি বলেন, ‘লাখো জনতার সঙ্গে দাঁড়িয়ে ব্রেক্সিট নিয়ে নিজেদের দাবি জানাতে পেরে সত্যি আমি গর্ব বোধ করছি। বর্তমানে আমাদের নীতি পুরোপুরি পরিষ্কার; এবার জনগণকেই তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’

অপর দিকে পার্লামেন্টের খসড়ায় ব্রেক্সিট চুক্তি পেছানোয় এরই মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বিলম্ব প্রসঙ্গে আর কোনো আলোচনা না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি বলেন, ‘ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে আরও দেরি করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে আর কোনো আলোচনা করা হবে না।’ 

বরিসের ভাষায়, ‘আইন অনুযায়ী এটি করতে আমি বাধ্য নই। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে আরও বিলম্ব হলে তা যুক্তরাজ্য, ইইউ এবং গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। তাই এই খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি প্রসঙ্গে আগামী মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ফের পার্লামেন্টে প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।’

এর আগে এই একই ইস্যুতে কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় চলতি বছরের মে মাসে আচমকা পদত্যাগের ঘোষণা দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। মূলত তার এই পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর পরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি নেতা বরিস জনসন। 

পরবর্তীতে এক ভাষণে তিনি আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। প্রয়োজনে একটি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পক্ষেও ইঙ্গিত দেন জনসন। যদিও এবার পার্লামেন্টের বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির একাধিক আইনপ্রণেতা এই চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটটি আটকাতে মরিয়া হয়ে উঠেন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেছিলেন, '১৫ অক্টোবর আগাম নির্বাচন কিংবা ৩১ অক্টোবর প্রয়োজনে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করা না গেলে আমিও পদত্যাগ করতে পারি।' বর্তমানে মূলত এসব বিষয় নিয়েই এক রকম দ্বন্দ্বে রয়েছে বরিসের দল। যার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন তার ছোট ভাই জো জনসন।

এসকে

আরও পড়ুন