• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০১৯, ০৯:৩৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১২, ২০১৯, ০৯:৩৮ পিএম

মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ডেও শরিকদের নিয়ে চাপে বিজেপি

মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ডেও শরিকদের নিয়ে চাপে বিজেপি

একদিকে এজেন্ডায় থাকা একেকটি স্পর্শকাতর বিষয় কার্যকর করে ফেলছে বিজেপি। আবার অন্যদিকে একের পর এক রাজ্যে শরিকদের সঙ্গে সংঘাত এমন পর্যায় পৌঁছচ্ছে, যে শত চেষ্টা করেও তা নিয়ন্ত্রেণে আনতে পারছেন না নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ। ভারতে তিন তালাক রদ, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণে শীর্ষ আদালতের সম্মতির পর এখন একমাত্র অভিন্ন দেওয়ানি বিধি ছাড়া প্রায় সবকটি এজেন্ডাই এখন মোদি–শাহের দলের দখলে। কিন্তু অতি সাম্প্রতিককালে, সেই সঙ্গে তাদের সামলাতে হচ্ছে শরিকি ক্ষোভ।

সোমবারই (১১ নভেম্বর) বিজেপির সঙ্গে ৩০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে মিত্র দল শিবসেনা। এবার ঝাড়খণ্ডেও শরিকদের নিয়ে সেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগেই বিপাকে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। কোন দল কয়টি আসনে লড়বে তা নিয়ে ওই রাজ্যে বিজেপির অপর দুই শরিক দল অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ও লোক জনশক্তি পাটির মতের মিল হচ্ছে না। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে পাঁচ দফায় ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচন।

এজেএসইউ দলের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে চক্রধরপুর আসনটি নিয়ে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী করেছে রাজ্যের শীর্ষস্থানীয় নেতা লক্ষ্মম গিলুয়াকে। এদিকে এজেএসইউ ওই এই আসনে তাদের প্রার্থীর নাম আলাদা করে ঘোষণা করে দিয়েছে। একই আসনে দুই শরিক দলের লড়া যাতে না হয়, সেজন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা আসনের সংখ্যা ৮১। এজেএসইউ দাবি করেছে, অন্তত ১৯টি আসনে তাদের লড়তে দিতে হবে। বিজেপি তাদের ৯টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নয়। এজেএসইউ এরইমধ্যে ১২টি আসনে তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। ৪টি আসনে তারা প্রার্থী দিয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে। এই আসনগুলো হল—সিমারিয়া, সিন্দারি, মান্ডু ও চক্রধরপুর।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে লোক জনশক্তি পার্টি বিজেপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়েছিল। সেবার এলজেপিকে দেয়া হয় মাত্র একটি আসন। সেই আসনে দলের প্রাথী পরাজিত হন। এখন ওই দলকে পরিচালনা করছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগ পাসোয়ান। তারা দাবি করেছেন, অন্তত ৬টি আসন তাদের দিতে হবে। তাদের পছন্দের আসনগুলো হল, জারমুন্ডি, নালা, হসেইনাবাদ, বারকাগাঁও, লাতেহার ও পানকি। 

বিজেপি প্রথম দফায় গত রোববার ৫২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। কিন্তু শরিকদের সঙ্গে মতবিরোধের ফলে দ্বিতীয় দফার তালিকা এখনও প্রকাশ করতে পারেনি। ঝাড়খণ্ডের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জামশেদপুর কেন্দ্র থেকে। ২০১৪ সালের বিধানসভা ভোটে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি ৭২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এজেএসইউ প্রার্থী দিয়েছিল ৮টি আসনে। বিজেপি পেয়েছিল ৩৭টি আসন। এজেএসইউ পেয়েছিল ৫টি।

মহারাষ্ট্রে ভাঙনের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এনডিএ-তে (বিজেপি নেতৃত্বের জোট) ভাঙনের ইঙ্গিত। এলজেপি যেমন ঘোষণা করেছে ঝাড়খণ্ডে এবার তারা ৫০টি আসনে একাই লড়তে চায়। অথচ বিজেপির কাছে তাদের দাবি ছিল মাত্রই ৫টি আসন। তাদের যুক্তি ছিল, এই ৫টি আসনে বিজেপির ফল খারাপ হয়েছিল। বিজেপি তাতে রাজি হয়নি। 

সূত্রের খবর, দুই থেকে ৩টি আসন পেলেই সন্তুষ্ট হয়ে যেত বিজেপি। কিন্তু বিজেপি সে দাবিতে পাত্তা দিতে চায়নি। এরপরেই এলজেপির নবনির্বাচিত সভাপতি চিরাগ পাসোয়ান দলের সিদ্ধান্তের কথা ট্যুইটারে জানিয়ে দেন। তিনি বলেছেন, লোক জনশক্তি দল একাই ৫০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে স্থির করেছে। মঙ্গলবারই তাদের প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করার কথা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেই তালিকা সংবাদমাধ্যমের হাতে আসেনি।

এফসি

আরও পড়ুন