• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২১, ০৬:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১০, ২০২১, ০৬:০০ পিএম

মশা দিয়ে মশা দমন, ডেঙ্গু নির্মূলে সর্বোচ্চ সফলতা

মশা দিয়ে মশা দমন, ডেঙ্গু নির্মূলে সর্বোচ্চ সফলতা

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এযাবতকালের সর্বোচ্চ সফলতা পেয়েছেন ওয়ার্ল্ড মস্কিউটো প্রোগ্রামের বিজ্ঞানীরা। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এই মশার ওপর ‘যুগান্তকারী’ গবেষণায় ডেঙ্গু জ্বরের সংক্রমণ অন্তত ৭৭ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।

এই প্রক্রিয়ায় অদ্ভুত একটি ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত মশা ব্যবহার করা হয়েছে। ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত এসব মশা ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করার সক্ষমতা নিয়েই জন্মায়।

ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগিয়াকার্তা শহরে প্রথমবার এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে। প্রথম ধাপের সফলতায় ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানোর আশায় এখন এটি সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা চলছে।

১৯৭০ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গু মশার অস্তিত্ব ছিল মাত্র নয়টি দেশে। কিন্তু বর্তমানে বছরে প্রায় ৪০ কোটি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড মস্কিউটো প্রোগ্রামের গবেষক দল জানায়, বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো ডেঙ্গু ভাইরাস নির্মূলে কার্যকরী সমাধান হতে পারে এই পদ্ধতি।

গবেষক দলের সদস্য ড. কেটি অ্যান্ডারস জানান, ৫০ বছর ধরে ধীর ধীরে মহামারিতে রূপ নেয়া ডেঙ্গুজ্বর দমনে ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত মশাকে ব্যবহার করছেন তারা। ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া মশার কোন ক্ষতি না করলেও এর দেহে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংক্রমণে বাধা সৃষ্টি করে। 

মশার দেহের যে অংশে ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণ হয় ওলবাকিয়াও একই অংশে বিস্তার লাভ করে। ফলে আগে থেকে ওলবাকিয়ার সংক্রমণ হলে সেই মশাটি ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে বা রোগ ছড়াতে পারে না। ফলে ওই মশাটি মানুষকে কামড় দিলেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

বিবিসির প্রতিবেদনে আরও জানা গেছে, ওলবাকিয়ায় আক্রান্ত ৫০ লাখ মশার ডিম ব্যবহার করা হয়েছে এই পরীক্ষার জন্য। ইয়োগিয়াকার্তা শহরকে ২৪টি জোনে ভাগ করে প্রতি দুই সপ্তাহ পরপর শহরের নির্দিষ্ট স্থানে পানির পাত্রে ডিমগুলো রাখা হয়। মশার বংশবিস্তারে সময় লাগে প্রায় নয় মাস।

ড: অ্যান্ডারস বলেন, “এই পরীক্ষার ফলাফল সত্যিই অভূতপূর্ব। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ আছে এমন বড় শহরগুলোতে এটা দারুণভাবে কার্যকর হতে পারে।”

গবেষকরা আরও জানান, ওলবাকিয়া আক্রান্ত মশার বাচ্চার দেহেও এই ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত থাকে। তাই
একবার ওলবাকিয়া ছড়িয়ে দেওয়া এটা দীর্ঘ এটি ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম।

কীটনাশক দেয়া বা অনুর্বর পুরুষ মশা ছাড়ানোর মতো পদ্ধতিগুলোর চাইতে এটি বেশি কার্যকর বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে মশাবাহিত জিকা, ইয়েলো ফিভার কিংবা চিকুনগুনিয়ার মতো অন্যান্য রোগগুলো নিয়ন্ত্রণেও সফলতা আশা করছেন বোস্টন ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথ অ্যান্ড মেডিসিনের প্রফেসর ডেভিড হ্যামার।

যুক্তরাজ্যের জার্নাল অফ মেডিসিনের জরিপ বলছে, এই পদ্ধতিতে ডেঙ্গু জ্বর ৭৭ শতাংশ কমেছে। এমনকি আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির হারও কমেছে ৮৬ শতাংশ পর্যন্ত।

আরও পড়ুন