• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২১, ০৩:৫৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৬, ২০২১, ০৪:৪৬ পিএম

অস্ট্রেলিয়ায় মাকড়সার জালে আবৃত বিস্তৃত অঞ্চল

অস্ট্রেলিয়ায় মাকড়সার জালে  আবৃত বিস্তৃত অঞ্চল

শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে কুয়াশার চাদর দেখে অনেকেই মুগ্ধ হই। কিন্তু এই চাদর যদি মাকড়সার জাল দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক ততটাই আতঙ্কজনক হতে পারে।

বন্যার প্রকোপের মাঝে অস্ট্রেলিয়ায় দেখা দিয়েছে এই মাকড়সার উপদ্রব। ভিক্টোরিয়া রাজ্যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জালে ঢেকে ফেলেছে মাকড়সারা। বিবিসি জানায়, সেল এবং লংফোর্ড শহরে জলাভূমিসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কের এক কিলোমিটারের বেশি অংশ ছেয়ে গেছে এসব মাকড়সার জালে। সম্প্রতি শহরগুলো বন্যার কবলে পড়া ভিক্টোরিয়ার গিপসল্যান্ড অঞ্চলের বাসিন্দারা ভারী বৃষ্টির পর এই অদ্ভুত কাণ্ড দেখতে পান। যদিও এমন ঘটনা তাদের জন্য নতুন কিছু নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টির সময় মাকড়সারা ‘বেলুনিং’ নামক একধরনের আত্মরক্ষামূলক কৌশল অবলম্বন করে। এর মাধ্যমে মাকড়সাগুলো বৃষ্টির সময় বাতাসে ভারতে থাকা অবস্থায় উঁচু অবস্থান থেকে দ্রুত মাটিতে নামতে বিশাল জায়গাজুড়ে জাল ফেলতে থাকে।

ভিক্টোরিয়ার জাদুঘরের পোকামাকড় বিশেষজ্ঞ ডা. কেন ওয়াকার বলেন, “লক্ষ লক্ষ মাকড়সা একসঙ্গে বেলুনিংয়ের মাধ্যমে একটি এলাকা জালে ঢেকে ফেলতে পারে। মাটিতে বসবাসকারী মাকড়সাগুলি খুব তাড়াতাড়ি মাটি নামতে এই কাণ্ড ঘটিয়ে থাকে। বৃষ্টির সময় ওপর থেকে এসব জাল ফেলে তারা গাছে উঠে পালানোর চেষ্টা করে।”

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পতঙ্গবীদ রিক ভেটার জানান, মাকড়সা আমাদের চারপাশেই থাকে। আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে তারা ওপর থেকে নিচে নেমে আসে। আর নিচে নামার সময় এভাবে জাল বুনতে থাকে।

স্থানীয় কাউন্সেলর ক্যারলিন ক্রসলে জানান, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় এই দৃশ্য দেখতে পান তিনি। এমন ঘটনা আগে দেখেলেও, এবারের মতো এত বড় এলাকাজুড়ে মাকড়সার জাল কখনো দেখেননি তিনি। বিবিসিকে ক্রসলে বলেন, “এটা ভয়ংকর সুন্দর। গাছগুলো বেড়ার মতো দাঁড়িয়ে আছে আর চারিদিকে কেবল মাকড়সার সাদা সফেদ জাল।” 

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ব্রাজিল ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়াগা ওয়াগা শহরেও প্রায় সময় এ ধরনের মাকড়সা জালবৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়। এভাবেই আকাশ থেকে কোটি কোটি মাকড়সা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। অনেক ক্ষেত্রে মাকড়সার জালের কারণে স্পষ্টভাবে সূর্যও দেখা যায় না। 

অস্ট্রেলিয়ার প্রকৃতিবিজ্ঞানী মার্টিন রবিনসন বলছেন, ডিম পাড়ার আগেও মাকড়সা বেলুনিং পদ্ধতিতে রেশমের মতো জাল ছড়িয়ে দেয়। এর ভেতরেই ডিম পারে তারা। এসব জালের মাধ্যমে ভেসে ভেসে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বহুদূর পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারে মাকড়সারা। ডিম ফুটে কোটি কোটি বাচ্চা বের হওয়ার পর সেগুলোও জাল বুনে নিচে নেমে আসে।

অদ্ভুত সুন্দর এই মাকড়সার জাল মানুষের জন্য ক্ষতিকরও নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে যাদের মাকড়সাভীতি রয়েছে তাদের জন্য এ ধরণের দৃশ্য সত্যিই অস্বস্তিদায়ক হয়ে পারে।

আরও পড়ুন