• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২০, ০৬:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৩, ২০২০, ০৬:২১ পিএম

ভাস্কর্য বিতর্ক

রাষ্ট্র সংবিধান অনুযায়ী চলবে : মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ

রাষ্ট্র সংবিধান অনুযায়ী চলবে : মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ

দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্মিত ভাস্কর্য নিয়ে একের পর এক উগ্র বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে হেফাজতে ইসলামীসহ কয়েকটি ইসলামী দল। সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ওপর ভাঙচুর চালায় উগ্র মতাদর্শীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে জাগরণ অনলাইনের সাথে কথা বলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।


জাগরণ: ইসলাম ধর্মের আলোকে ভাস্কর্য নিয়ে কিছু বলুন। 

মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ: ইসলাম ধর্মে ভাস্কর্য কেন, বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলাও নিষেধ রয়েছে। সেখানে ভাস্কর্য হালাল হওয়ার প্রশ্নই আসে না। 

জাগরণ: তাহলে সম্প্রতি ইসলামী দলগুলো ভাস্কর্য নিয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, তা আপনি সমর্থন করছেন?
 
মাওলানা মাসউদ: একেবারই নয়। উগ্র বক্তব্য দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করা ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। আমিও করি না। 

জাগরণ: তবে এক্ষেত্রে সমাজের আলেম-উলামাদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?

মাওলানা মাসউদ: আলেমদের কাজ হচ্ছে রাষ্ট্রকে জানিয়ে দেয়া— কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম। দেখুন, একটা রাষ্ট্র তার সংবিধান অনুযায়ী চলবে। এটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে জোরজবরদস্তি করার কোনো অধিকার কারো নেই। 

জাগরণ: বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে তো ভাস্কর্য আছে। তাহলে বাংলাদেশে থাকলে ক্ষতি কী? তাছাড়া আমাদের দেশের ভাস্কর্যগুলোর অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এসব ভাস্কর্য ইসলাম ধর্মের সাথে কি সাংঘর্ষিক? 

মাওলানা মাসউদ: অনেকে মুসলিম দেশগুলোতে নির্মিত ভাস্কর্যের উদাহরণ দিচ্ছেন। বিশেষ করে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো উদাহরণ হিসেবে সামনে এনে বলছেন, ভাস্কর্য হালাল। মনে রাখতে হবে, কোনো উদাহরণ দিয়ে ইসলাম চলে না। ইসলাম চলে, কোরআন-সুন্নাহ’র আলোকে। দেখুন, নামাজ পড়া ফরজ। তাই বলে কি সবাই নামাজ পড়েন? সবাই কি রোজা রাখেন? সবাই কি জাকাত দেন? অনেক মুসলমানই তো ইসলামের অনেক কিছুই মানেন না। তাতে করে সেগুলোকে বৈধ বলার সুযোগ নেই।

জাগরণ: সম্প্রতি হেফাজত নেতা মামুনুল হক ভাস্কর্য নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং এর প্রতিক্রিয়ায় কুষ্টিয়াতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটেছে—এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাই।

মাওলানা মাসউদ:  হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক যে ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন,‘লাশের পর লাশ ফেলার’ হুমকি দিয়েছেন; বঙ্গভবন, গণভবন, সংসদ ভবন রক্তে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছে—এসব কোনোভাবে ইসলামসম্মত নয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ ইসলামের সবচেয়ে বড় আদর্শ। ইসলাম এ ধরনের উগ্রবাদকে সমর্থন করে না। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।