• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০১৯, ০৩:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১০, ২০১৯, ০৩:৪৭ পিএম

মাদক মামলার নিষ্পত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশনা

মাদক মামলার নিষ্পত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশনা

অধস্তন আদালতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলা নিষ্পত্তিতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। হাইকোর্টের একটি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। সার্কুলারের সঙ্গে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট আদেশটিও সংযুক্ত করে তা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ফৌজদারি বিবিধ ৪০৩৮৮/২০১৯ নং মোকদ্দমায় গত ২০ অক্টোবরের আদেশে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ আদেশ প্রদান করে।

সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় আদালত আদেশ প্রদান করছে যে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা ৪৪ অনুসারে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা কিংবা গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে বিকল্প আদালতকে ক্ষমতা না দেয়া অথবা ট্রাইব্যুনাল সংক্রান্ত আইনের বিধান সংশোধন না হওয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর অধীনে দায়েরকৃত সকল মামলার বিচারকি কার্যক্রম ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ৫(২) অনুসরনে ওই কার্যবিধির ২য় তফসিলে উল্লেখিত ‘অন্যান্য আইন সমূহের অধীনে অপরাধ’ বিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে।”

এমতবস্থায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর প্রতিপালন সংক্রান্ত হাইকোর্ট বিভাগের ফৌজদারি বিবিধ ৪০৩৮৮/২০১৯ নং মোকদ্দমায় উল্লিখিত আদেশ যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ প্রদান করা হয় বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়।

সম্প্রতি এ সার্কুলার জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত এ সার্কুলার অধস্তন আদালতের সংশ্লিষ্টদের অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।

এর আগে, রাজধানীর বংশাল থানার মাদক মামলার আসামি মাসুদের জামিন স্থায়ী করে গত ২০ অক্টোবর  বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই জামিন দেয়া হয়। তবে জামিনের অপব্যবহার করা হলে জামিন বাতিল হয়ে যাবে বলেও আদেশে বলা হয়।

ওই মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন আল ফয়সাল সিদ্দিকী। আর  রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপন এবং গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে বিকল্প আদালতকে ক্ষমতা দিয়ে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে আদালতকে জানানোর জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশ ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি জানাতে না পারায় আদালত আগের নিয়মেই মামলার বিচার করার আদেশ দেয়।

ইয়াবা ও হেরোইনসহ গতবছর ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর মাসুদুল হক মাসুদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বিষয়ে বংশাল থানায় করা মামলায় গত ২২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এরপরই নিম্ন আদালতে জামিন চায় আসামি। কিন্তু ওই আদালত জামিনের আবেদন খারিজ করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে মাসুদ। ওই জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় নথি পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট। নথিতে দেখা যায়, মাদক মামলাটি আমলে নিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর তার বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর তৃতীয় যুগ্ম দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়েছে। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মামলাটি বিচারের জন্য তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোয় উভয় বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায় হাইকোর্ট। 

এছাড়াও মাদকদ্রব্য অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের অগ্রগতি জানাতে আইন ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেয়। ট্রাইব্যুনাল স্থাপন সংক্রান্ত মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪৪ ধারা কার্যকরে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে- তাও জানাতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আইন মন্ত্রণালয় আদালতকে জানায়, তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। এ অবস্থায় গত ২৫ আগস্ট এক আদেশে হাইকোর্ট ১৩ অক্টোবরের মধ্যে গেজেট জারির বিষয়ে অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ দেয়।

এমএ/একেএস

আরও পড়ুন