• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০১৯, ০৩:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৭, ২০১৯, ০৪:০০ পিএম

রায় শুনে আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ

রায় শুনে আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয় - ছবি : কাশেম হারুন

হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনার মামলায় ৭ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় পড়ার সময় তাদের নিশ্চুপ থাকতে দেখা গেলেও রায় শেষে আদালতে হাজির সংশ্লিষ্ট জঙ্গিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে বিস্মিত উপস্থিত আইনজীবী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা। এমনকি জঙ্গিদের হুমকি-ধামকিও দিতে শোনা যায়। তারা র‌্যাব-পুলিশকে যেখানে পাবে সেখানেই হামলা করবে বলেও চিৎকার করে জানিয়েছে। 

দুপুর ১২টার কয়েক মিনিট পর বিচারক এজলাসে উঠে রায় পড়া শুরু করেন। রায় পড়ার সময় জঙ্গিদের চোখে মুখে কিছুটা ভয় বা আতঙ্ক দেখা যায়। কিন্তু রায় ঘোষণার পর আসামিরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। রায় শোনার পর তারা ‘আল্লাহু আকবর, দ্বীন ইসলামের জয় হোক’ বলে চিৎকার করেন।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১২ টার দিকে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার ৮ আসামির মধ্যে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

এর আগে, সকাল ১০ টা ২৫ মিনিটের দিকের আসামিদের কারাগারে থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ১২ টার কিছু আগে আসামিদের হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলা হয়।

আসামিদের মধ্যে বড় মিজান দণ্ড হয়েছে ভেবে সবচেয়ে বেশি চিৎকার করেন। পরে তাকে জানানো হয়, তিনি খালাস পেয়েছেন। এ কথা শোনার পর তিনি বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আল্লাহ আমাকে খালাস দিয়েছেন।

আদালতের রাযে হাদিসুর রহমান বলেন, আমি তো ছিলামই না। কোন কিছুই জানি না। রায় দিল আর হয়ে গেল।

রিগান নামে এক জঙ্গি বলেন, সব ভুয়া, আমি নাকি আইএসের সদস্য। শুনে হাসি পায়। আমি নির্দোষ কিন্তু আমাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আমি আইএস এর সদস্য না। রায় ঘোষণা শেষে এজলাস থেকে বের করে আসামিদের প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আদালতে একাধিক আইনজীবী বলেছেন, ফাঁসির আদেশ শোনানোর পর দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামির আচরণে অনুশোচনা দেখা যায়নি।

আদালত প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মঈনুল করিম বলেন, বড় অপরাধের পর সাধারণত অপরাধীদের আচরণে অনুশোচনা প্রকাশ পায়। কিন্তু দণ্ডপ্রাপ্ত এসব জঙ্গির কারো আচরণে অনুশোচনার প্রকাশ ছিল না। রায় ঘোষণার পর থেকে আদালত ত্যাগ করা পর্যন্ত তারা ঔদ্ধতপূর্ণ আচরণ করেছে। র‌্যাব-পুলিশকে দেখা মাত্র হামলার হুমকি দিয়েছে। জঙ্গিদের একজনের মাথায় আইএসের টুপি পরে উগ্রবাদী বক্তৃতা করতেও দেখা গেছে। এছাড়াও তাকে প্রসাশনকে উদ্দেশ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতেও শোনা যায়। এতে বোঝা যায় তাদের এখনও কোনো সংশোধন হয়নি, তারা জঙ্গিই রয়ে গেছে।

একজন আসামির খালাস হওয়া প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার শেখ মঈনুল বলেন, যাকে খালাস দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে আরও দশটি মামলা রয়েছে। অন্য একটি মামলায় সে দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত। সুতরাং এটা বলা যায়, এই মামলায় খালাস হলেও প্রকৃতপক্ষে তার খালাস হয়নি। এছাড়াও বর্তমান মামলায় পুরো রায় প্রকাশ পেলে তার খালাসের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে।

খালাস পাওয়া আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানের বিষয়ে শেখ মঈনুল করিম আরও জানান, মূল আইন হচ্ছে প্রয়োজনে একশজন আসামি খালাস পাবে কিন্তু একজন নিরপরাধ মানুষ যেন শাস্তি না পায়। তবে এই জঙ্গি অপরাধী হয়ে থাকলে উচ্চ আদালতে তা এখনও প্রমাণ করার সুযোগ রয়েছে।

এমএ/একেএস
    

 

আরও পড়ুন