• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ০৯:০৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১১, ২০১৯, ০৯:০৯ এএম

টিপু রাজাকারের রায় আজ, সতর্ক পুলিশ

টিপু রাজাকারের রায় আজ, সতর্ক পুলিশ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল - ফাইল ছবি
নাশকতার পরিকল্পনার সময় জামায়াতের ১০ নেতা গ্রেফতার

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে রাজশাহীর বোয়ালিয়ার মো.আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রায় আজ বুধবার। বিচারপতি মো.শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের এই দিন ধার্য করেছেন। এ রায়কে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

রাজধানীতে সকাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অদূরে হাইকোর্টের আশপাশ এলাকা, প্রেসক্লাব, মৎস্যভবন মোড়, কাকরাইল, সচিবালয়ের আশপাশ ও দোয়েল চত্বর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপুর্ণ সড়কের মোড়ে এপিসি, সাঁজোয়া যান বা স্ট্রাইকিং ফোর্স সতর্ক পাহারায় রাখা হয়েছে। এছাড়া দমকল বাহিনীর একাধিক ইউনিট ও অ্যাম্বুলেন্স সড়কের মোড়ে রাখা হয়েছে। একই আদলে দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলার উপশহরগুলোয় আইনশৃংখলা বাহিনীকে স্পর্শকাতর ভবন ও স্থাপনার সামনে পাহারায় রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের গোপন আস্তানায় হানা দিয়ে বেশ কয়েকজন জামায়াত শিবিরের ক্যাডার আটক করেছে পুলিশ।  

গত ১৭ অক্টোবর এই মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। আজ রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত থাকবেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল, আসামিপক্ষের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিমও থাকবেন। 

অভিযোগ চূড়ান্তের পর তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দুজনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন দেয়ার অপরাধ উঠে এসেছে তদন্তে। এসব অপরাধে এ আসামির বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

টিপু রাজাকারের রায় ঘিরে নাশকতা ঘটানোর জন্য রাজশাহীতে জামায়াতের গোপন বৈঠক থেকে পুলিশ ১০ জন জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারকে আটক করেছে। আটক নেতাকর্মীরা হল- রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মাইনুল ইসলাম (৫০), প্রচার সম্পাদক শাহাদাত হোসেন (৪৫), নগরীর বোয়ালিয়া থানা আমির আমিনুল ইসলাম (৬০), রাজপাড়া থানার নায়েবে আমীর মো. কামরুজ্জামান (৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন (৪১), মহানগর সুরা সদস্য সিরাজুল ইসলাম (৪৮), মহানগর শ্রমিক কল্যাণের সভাপতি আবদুস সামাদ (৫০) এবং মহানগর সদস্য মাহফুজুল্লাহ জহির (৪৭), আরিফিন মৃধা (৩১) ও তহিদুল ইসলাম (৪৫)।

রাজশাহীতে জামায়াতের গোপন বৈঠক থেকে আটক নেতাকর্মী    - ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস দৈনিক জাগরণকে বলেন, রাজশাহী নগরীর মসজিদ মিশন স্কুলে গোপন বৈঠককালে জামায়াতের ১০ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। রাজাকার টিপুর রায় ঘিরে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা গোপন বৈঠকের সময় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে তাদেরকে আটক করা হয়। আটকের পর তাদেরকে মহানগর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আটক জামায়াত নেতারা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আব্দুস সাত্তার ওরফে টিপু রাজাকারের রায় ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন।

গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মসজিদ মিশন স্কুলে অভিযান চালানো হয়। সেখানে স্কুলের একটি কক্ষে জামায়াত নেতারা গোপন বৈঠক করছিল। সেখান থেকে ১৪ জনকে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে সম্পৃক্ততা না থাকায় ওই স্কুলের এক শিক্ষকসহ ৪ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের কাছে থাকা বৈঠকের এজেন্ডা ঘেঁটে দেখা গেছে, তারা আজ টিপু রাজাকারের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘিরে কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করছিলেন। আটক জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এইচ এম/ এফসি

আরও পড়ুন