• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯, ০২:৫৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯, ০৩:০১ পিএম

জাতিসংঘে ‘কাশ্মীর-এনআরসি ইস্যু’ তুলবে পাকিস্তান, প্রস্তুত ভারত

জাতিসংঘে ‘কাশ্মীর-এনআরসি ইস্যু’ তুলবে পাকিস্তান, প্রস্তুত ভারত

● বাদ পড়াদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু

● ১০টি বন্দি শিবির নির্মাণ করছে আসাম

● আসামে অতিরিক্ত ১৭ হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন

................................

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার সংক্রান্ত সংবিধানিক বিধান বিলুপ্তি ও সদ্য প্রকাশিত আসাম রাজ্যের এনআরসিতে উপেক্ষিত ১৯ লাখ রাষ্ট্রহীন বাঙালির ইস্যুতে বেশ উত্তপ্ত ভারত। প্রসঙ্গ দুটি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও সাম্প্রদায়িকতার প্রেক্ষাপটে বিষয় দুটি নিয়ে জাতিসংঘের শরণাপন্ন হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের এমন কূটনৈতিক পদক্ষেপের জবাব দেয়ার জন্য এবার প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে ভারত।

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় বার্তা সংস্থা এনডিটিভি প্রকাশিত এক সংবাদের তথ্যমতে জানা যায়, একই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরে চলমান উত্তেজনা ও আসামের এনআরসি প্রসঙ্গ- ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে তোলা হবে বলে ধারণা নয়া দিল্লির। তবে দেশটির বিশ্লেষকদের মতে, সেক্ষেত্রে এরই মধ্যে পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য নিজেদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে ভারত।

সংবাদে বলা হয়, ‘‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এরই মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুর পর আসামের এনআরসি নিয়েও মুখ খুলেছেন। যেখানে তিনি বলেন, ‘প্রধানত মুসলিমদের তাড়ানোর জন্যই এনআরসি করেছে নয়াদিল্লি।’ তবে ভারত এই দুটি ইস্যুতেই জাতিসংঘে বিতর্ক করতে প্রস্তুত বলে জানা গেছে। ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির দাবি- এনআরসি নিয়ে ভারত সরকারের কিছুই করার নেই। কেন-না সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এ কার্যক্রম চলছে। এখানে সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ থাকবে না।

সূত্রের বরাত দিয়ে  দি টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, জাতিসংঘের অধিবেশনে ভারতের মুখপাত্ররা আসাম চুক্তির ওপর জোর দিতে পারেন। কেন-না ১৯৮৫ সালে তৎকালীন কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে আসাম সরকারের ‘অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ এবং ‘অল আসাম গণসংগ্রাম পরিষদ’ নামে দুটি চুক্তি হয়েছিল। মূলত তখন রাজ্যে বিদেশি বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর চুক্তিগুলো হয়। বর্তমানে সদ্য প্রকাশিত এনআরসি তালিকার বিরুদ্ধে আসামের মুসলমানদের চেয়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোই বেশি আন্দোলন করছে। তালিকা থেকে ১৯ লাখের অধিক লোক বাদ পড়েছেন যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু।

শনিবার (৩১ আগস্ট) প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকার (এনআরসি) মাধ্যমে রাষ্ট্রহীন করা হয়েছে অন্তত ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ বাঙালিকে। যেখানে আগের তালিকায় বাদ দেয়া হয়েছিল প্রায় ৪০ লাখ বাসিন্দাকে। তাছাড়া স্বীকৃতি মিলেছে প্রায় ৯ কোটি ১১ লাখ লোকের। যদিও এই তালিকা থেকে বাদ পড়াদের নিয়ে এবার আসাম তো বটেই, গোটা ভারত এমনকি প্রতিবেশী বাংলাদেশ পর্যন্ত মোদী সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আসামের এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়াদের কাছে বাংলাদেশের কোনও নাগরিকত্ব নেই। এমনকি ভারত ছাড়া আর কোনও দেশেরই নাগরিকত্ব নেই তাদের। এমন অবস্থায় ভারত তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিলে মানুষগুলো একদমই রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়বে। যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। যে কারণে ভারত অনেকটা বাধ্য হয়েই তালিকা থেকে ছিটকে যাওয়াদের নিজ দেশের ভেতরেই বন্দি বানিয়ে রাখবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। যার অংশ হিসেবে আসামে এরই মধ্যে নতুন করে ১০টি বন্দি শিবির নির্মাণের কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। তাছাড়া অঞ্চলটিতে অতিরিক্ত ১৭ হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে। অপর দিকে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।

এসকে/এসএমএম

আরও পড়ুন