• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯, ০৯:১০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯, ১০:০৩ এএম

পূজা মণ্ডপে শিল্পীর রঙে জীবন্ত হয়ে উঠছে দুর্গার রূপ

পূজা মণ্ডপে শিল্পীর রঙে জীবন্ত হয়ে উঠছে দুর্গার রূপ

আর মাত্র কয়েকদিন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দূর্গা উৎসব। দিন যতই এগিয়ে আসছে নওগাঁর ১১টি উপজেলায় শিল্পীর রঙের তুলির ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠছে দূর্গা দেবী। মাটির শিল্পীদের নিপুণ হাতে ইতোমধ্যে মাটির কাজ শেষ করে এখন চলছে রঙ তুলির কাজ। শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে দশভুজা দেবীদুর্গাসহ বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতিমূর্তি।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই দেবী দুর্গার স্বর্গ থেকে আগমন ঘটেছিল মর্ত্যলোকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবীদুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতি বছর অশ্বরের বিনাশ কল্পে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে অন্যায় অবিচার গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় নওগাঁর আত্রাইয়ে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবাচাইতে বড় উৎসব দুর্গা পূজা। আর এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। শিল্পীর তুলির রঙয়ের আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ।

এদিকে, জেলার সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মায়ের জন্য তাদের এখন শুধু অপেক্ষার পালা। এরই সুবাদে ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্ততি। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ৪ অক্টোবর শুরু হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবং দশমী পূজা শেষে প্রতিমা বির্সজনের মধ্য দিয়ে ৮ অক্টোবর উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন দুর্গা মন্দির ঘুরে দেখা যায়, শ্বারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্ততিমূলক কাজ প্রায় শেষের দিকে। 

আলাপচারিতায় নিজের সম্পর্কে ভবানীপুর গ্রামের ভবেশ মালাকার যা বললেন, ছোটবেলা থেকে কাদামাটি ও রঙ তুলির সঙ্গে বেড়ে ওঠা ভবেশ মালাকারের জন্মস্থান নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার ভবানীপুর গ্রামে। এখানে তিনি প্রতিমা তৈরি করে থাকেন। প্রতি বছর তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেট প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেন। এবার ও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইতোমধ্যে ৭ সেট প্রতিমা ডেলিভারি দিয়েছেন তিনি। প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। তা আবার বিক্রি হয় ২৫ হাজার টাকায়।

রাণীনগর পূজা কমিটির সভাপতি চন্দন কুমার মোহন্ত বলেন, বর্তমান সরকার তাদের সার্বিক ভাবে সহযোগিতার পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও সহযোগিতা করে আসছে। পূজার প্রস্তুতিও প্রায় শেষের দিকে। এবারের পূজায় তাদের আনন্দ প্রতি বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে বলেও মনে করেন তিনি। 

আত্রাই উপজেলার মির্জাপুর-ভবানীপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি অনুপ কুমার দত্ত বাদল বলেন, আমাদের পূজার প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। এবারের পূজায় আমরা বিগত দিনের তুলনায় অনেক আনন্দ করবো। আশাকরি অন্য বছরের তুলনায় এবারও পুজায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিভাষ চন্দ্র গোপাল বলেন এবার জেলায় ৭শ ৮৮টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মা এবার ঘটকে চড়ে আসবেন আর ঘটকে চড়ে যাবেন। ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আমি আশাবাদি পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় এবারের দুর্গা উৎসব সুষ্ঠু, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। কারণ ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার।

জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে হিন্দু ধর্মের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার লক্ষে আইনশৃংখলা বাহিনীর সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং প্রতিটি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সকলকে বিভিন্ন মণ্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সবকটি পূজা মণ্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে বলেও তিনি জানান। অন্যান্য বছরের চাইতে শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়ে এবার জোরালো প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আশাকরি কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না এবারের পূজায়। তবে এ জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। 

কেএসটি

আরও পড়ুন