যশোর-৬ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য  ও সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুত গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেছেন, অত্যন্ত সৎ, একাগ্রচিত্ত, নিষ্ঠাবান ও দেশপ্রেমিক ছিলেন ইসমাত আরা সাদেক। 

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে সাবেক এই মন্ত্রীর মৃত্যুতে আনিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলোচনার পর শোক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসমাত আরা সাদেক বিভিন্ন সংস্থার সাথে জড়িত ছিলেন। কিন্তু কখনও রাজনীতিতে খুব সক্রিয় ছিলেন না। তার স্বামী এএসএইচকে সাদেক ৯১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সেই সময় যখন আমরা সরকার গঠন করতে পারলাম না- তখনই তিনি আমার সাথে যোগাযোগ করেন। সেই থেকে দুজন একসাথে আসতেন, কথা হতো।

সাদেকের মৃত্যুর পর মিসেস সাদেককে যখন নির্বাচন করার জন্য বললাম, উনি প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম হ্যাঁ আপনি পারবেন। উনি ইলেকশন করে জিতে আসার পর আমি যখন উনাকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব দিলাম। তখন তিনি বললেন, আমি তো কখনও এভাবে অফিস করিনি। আমি হাউস ওয়াইফ ছিলাম। আমি কীভাবে করব? তখন আমি বললাম- আপনি শিক্ষিত মহিলা, আপনি জানেন- আপনার স্বামী একজন সাবেক মন্ত্রী ছিলেন। আপনার তো জানাই আছে সবকিছু। আমি আছি আপনার কোনও চিন্তা নাই। যখন যা দরকার হবে আপনি বলবেন। তাছাড়া আমার বিশ্বাস আছে আপনি পারবেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি কাজ উনি অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে করতেন। পরবর্তীতে আবার যখন আমরা সরকার গঠন করলাম ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরে উনাকে আমি ২০১৫ তে জনপ্রশাসনে দায়িত্ব দিলাম। তিনি বলতেন- এটা আমি কীভাবে করব? তিনি অত্যন্ত গোছালোভাবে কাজ করতেন। আমাদের অনেকগুলো নীতিমালা, বিধিমালা, প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে উন্নত করা, জনপ্রশাসনকে আরও গতিশীল করা, কোথায় কত জায়গা খালি আছে, সেখানে আরও কিভাবে আমরা আরও চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি- এই সমস্ত ব্যাপারগুলো অত্যন্ত সুচারুভাবে উনি করতেন। সবচেয়ে বড় কথা ছিল তিনি অত্যন্ত সততা নিষ্ঠার সাথে কাজ করতেন। তার সবচেয়ে বড় গুণ  সততা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা এবং দেশপ্রেম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকালে আমরা যখন একনেক মিটিং করছিলাম তখন আমার কাছে স্লিপ আসলো যে উনি আর নাই। তিনি মারা গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য এই সংসদে পরপর আমাদের চারজন সংসদ সদস্য মৃত্যুবরণ করলেন। ডাক্তার ইউনুস চলে গেল, ডাক্তার মোজাম্মেল সাহেব মারা গেল, মান্নান এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলে গেলো- তিনদিন পরে শুনলাম সে নাই। তার জানাজা পড়তে হলো। আবার আজকে সকালে ইসমাত আরা সাদেক মারা গেলেন। এটা খুবই কষ্টকর যে এবার নির্বাচনের পর আমরা অনেক সংসদ সদস্য কে হারিয়েছি। 

এইচএস/এসএমএম