• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৯:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯, ১০:৩৫ পিএম

আওয়ামী লীগ

রাত পোহালেই সম্মেলন

রাত পোহালেই সম্মেলন
সম্মেলনের মূল মঞ্চ-ছবি : কাশেম হারুন

২১ তম জাতীয় কাউন্সিল

আসছে নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন 
সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে টান টান উত্তেজনা
পূরণ হচ্ছে ৩৩ শতাংশ নারীদের পদ 

সর্বশেষ ২০তম জাতীয় সম্মেলনে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক  দল নয়, একটি অনুভূতির নাম।’

রাত পোহালেই (শুক্রবার) দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে সেই ‘অনুভূতি’র ২১তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন। 

অন্যবারের তুলনায় এবারকার সম্মেলনে নেতৃত্বের ‘চমক’ থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সেই চমক দেখায় অপেক্ষায় দেশের সাধারণ মানুষও।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এবার বড় ধরনের রদবদল হতে পারে দলের প্রেসিডিয়াম ও সম্পাদকীয় পদগুলোতে। 

সম্মেলন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য সাজে সেজেছে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন।

নেতা-কর্মীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে দলীয় সভাপতি পদে ৯মবারের মতো শেখ হাসিনাই সভাপতি থাকছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। দলীয় নেতারা বলছেন, এই মুহূর্তে দলে শেখ হাসিনা অপরিহার্য ও তার বিকল্প নেই। তবে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ সাধারণ সম্পাদক পদে কে আছেন সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কেউ কিছুই বলতে পারছেন না। তবে এবারও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরেরই আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।   

২০১৬ সালে ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে সভাপতি পদে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির শেষ কার্যনির্বাহী সভা। ওই সভায় দলের ২১তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন পরিচালনার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনকে। দুই সদস্য হলেন- উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মশিউর রহমান এবং অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান খান।

কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, চলমান শুদ্ধি অভিযানের প্রভাব জাতীয় সম্মেলনেও দেখা যাবে। দলের সভাপতিমণ্ডলি ও সম্পাদকমণ্ডলির বিভিন্ন পদে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে। এরই মধ্যে তারই আভাস পাওয়া গেছে। 

শেষ কার্যনির্বাহী সভায় গঠনতন্ত্র সংশোধন করে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সংখ্যা ৪১ থেকে বাড়িয়ে ৫১ করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন তরুণ নেতা দলে বিভিন্ন পদে আসতে পারেন বলে ধারণা পোষণ করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। 

আওয়ামী লীগের মূল কমিটির বাইরে এতদিন সীমিত আকারে সহ-সম্পাদক পদ রাখার বিধান থাকলেও এবারের জাতীয় সম্মেলনের পর তা আর থাকছে না। দলের গঠনতন্ত্রে তেমন কোনও সংশোধনী আনা হয়নি বলেই দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এবারেরই প্রথম সম্মেলনের আগে দল ও সরকার আলাদা করার বিষয়টি আলোচনায় আসে। তবে শেষ মুহূর্তে না হবার সম্ভাবনা কম।  

দলের কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, এবারকার জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশনের আইনে ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বস্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার যে বাধ্য-বাধকতা দেয়া আছে তার পূরণ করা হচ্ছে।

বর্তমান কমিটিতে সভাপতিসহ বিভিন্ন পদে ১৫ জন নারী আছেন।  

প্রতিবার সম্মেলনের আগে সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন সেটি নিয়ে কিছুটা ধারণা পাওয়া গেলেও এবার সে সুযোগও নেই। সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম আলোচনায় আছে, তারাও তো বটেই নীতি-নির্ধারণি পর্যায়েরও কারও কাছে কোনও রকম তথ্য নেই।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, অন্যান্যবার সম্মেলনের আগের কার্যনির্বাহী বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক কে হবেন সে বিষয়ে ইঙ্গিত থাকলেও এবার দলের নেতাদের তেমন কিছুই বলেননি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। তাই দলের  ‘সাধারণ সম্পাদক’ পদ নিয়ে নেতারা রয়েছেন অন্ধকারে। 

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি দেখতে এসে সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে কি না— জানতে চাইলে দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়টা নেত্রী আর আল্লাহ জানেন।

জানা গেছে, পছন্দের ব্যক্তিকে সাধারণ সম্পাদক বানাতে কয়েক মাস ধরেই কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে সব কিছুর অবসান হবে আর কয়েক ঘণ্টার পর। 

‘সাধারণ সম্পাদক’ পদে আলোচনায় যারা

সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বি এম মোজাম্মেল হক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আজমত উল্লাহ খান।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান দৈনিক জাগরণকে বলেন, সাধারণ সম্পাদক হবো কি— না আমি জানি না এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা সে ব্যাপারে আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিতে চান কি— না সেটাও আমার জানা নেই। তবে যদি এটা কোনও কারণে হয়, যদি মনে করেন বা এ রকম কোনও অবস্থা হয়, তাহলে আমি মনে করি আমার প্রধান চ্যালেঞ্জই হবে উনার (শেখ হাসিনা) যে ভাবনা, উনার যে রাজনৈতিক লক্ষ্য- উদ্দেশ্য- সেটি বাস্তবায়ন করা। আর এটাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখতিয়ার। যারা কাউন্সিলর, আমরা যারা থাকবো, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সভানেত্রীকে দায়িত্ব দেবো। কারণ তিনি তার দীর্ঘ ৩৮ বছরের পথচলার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেভাবে দেখেছেন, বুঝেছেন, পর্যবেক্ষণ করেছেন। এর থেকে বেশি পর্যবেক্ষণ এ দলের মধ্যে আর কারও নেই বরং তিনি অতীতে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সঠিক ছিল। দলকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী ছিল। সভানেত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করবো।

বি এম মোজাম্মেল হক দৈনিক জাগরণকে বলেন, সাধারণ সম্পাদক কে হবেন এটার দায়িত্ব আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর। উনি সিদ্ধান্ত নেয়ার মালিক, উনিই নেবেন।  

উদ্বোধন পর্ব 

শুক্রবার বিকাল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনের পর ২৫ মিনিটের একটি উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। সেখানে তুলে ধরা হবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য।

স্লোগান  

এবারকার জাতীয় কাউন্সিলের স্লোগান হচ্ছে, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’।

কাউন্সিলর ডেলিগেট

সম্মেলনে প্রায় ৭ হাজার কাউন্সিলর অংশ নেবেন। কাউন্সিল অধিবেশন ২১ ডিসেম্বর (শনিবার) সকাল ১০ টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হবে।

২১তম সম্মেলনের আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে দাওয়াতপত্র পৌঁছে দেয়া, মঞ্চ ও সম্মেলনস্থল প্রস্তুত করা এবং সাজ-সজ্জাসহ অন্যসব কাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনে কাউন্সিলর, ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকবেন। তবে বিদেশি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানান হয়নি।

মঞ্চ সাজ-সজ্জা

ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়বে ছয়টি নৌকা। উদ্যানের গাছে গাছে লাগানো হয়েছে মরিচবাতি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকায় ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে শোভা পাচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। লাগানো হয়েছে আওয়ামী লীগের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে চিত্রসম্বলিত ফেস্টুন।

১০২ ফুট দীর্ঘ ও ৪০ ফুট প্রশস্ত মূল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। চার সহযোগী এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সম্মেলন এ মঞ্চেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূল মঞ্চ এক হলেও সেটাকে বিশেষ পরিকল্পনায় সাজানো হয়েছে।

আশপাশের এলাকাসহ মূল মঞ্চটি এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, দেখলে মনে হবে যেন পদ্মা নদীর বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে বিশাল এক নৌকা। সেই নৌকার চারপাশজুড়ে থাকছে প্রমত্ত পদ্মার বিশাল জলরাশি। এর মধ্যে থাকছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুও। এছাড়া পদ্মার জলতরঙ্গ, পদ্মার বুকে ঘুরে বেড়ানো ছোট ছোট নৌকা, এমনকি চরের মধ্যে কাশবনের উপস্থিতিও থাকবে।

মহান বিজয়ের মাসে আয়োজিত এ সম্মেলনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতিও থাকবে। এর পেছনে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ছবি। নৌকার পেছনের দিকে থাকবে জাতীয় চার নেতাসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে বিভিন্ন সময়ে অবদান রাখা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছবি।

সম্মেলনস্থলে সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের ফেস্টুন ও উন্নয়নের ছবি থাকবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং মঞ্চ ও সাজ-সজ্জা কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক দৈনিক জাগরণকে বলেন, সম্মেলন সাদামাটাভাবে আয়োজন করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে কোনও ধরনের সাজ-সজ্জা করা হয়নি। সম্মেলনে সব মিলিয়ে ৫০ হাজার কাউন্সিলর, ডেলিগেটস ও নেতা-কর্মী অংশ নেবেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সম্মেলনস্থল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।  

প্রবেশগেট

সম্মেলনস্থলে নেতা-কর্মীদের প্রবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাঁচটি গেট থাকবে। একটি গেট ভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। ৮১ সদস্যের মধ্যে চারটি পদ শূন্য থাকায় মূল মঞ্চে চেয়ার থাকবে ৭৭টি।

মঞ্চের সামনে নেতা-কর্মীদের জন্য চেয়ার থাকবে ৩০ হাজার। সম্প্রসারিত মঞ্চে ১৫ হাজার চেয়ার দেয়া হবে। ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হবে পুরো অনুষ্ঠান।

অভ্যর্থনা

বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ অন্যসব পেশার বিশিষ্টজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে অতিথিদের তালিকা তৈরি করে সম্মেলনের কার্ড পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

দলটির সভাপতিমণ্ডলির সদস্য এবং অভ্যর্থনা কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ নাসিম জানান, ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে যেমন- বিমানবন্দর, বাস ও রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে বিলবোর্ড ও ব্যানারের মাধ্যমে অতিথি ও কাউন্সিলরদের স্বাগত জানানো হবে।

প্রচার প্রকাশনা

সম্মেলনে প্রচার উপ-কমিটির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার একটি কার্ড থাকবে। একই সঙ্গে থাকবে দুটি সিডি। একটিতে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন এবং অন্যটিতে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের পাটের ব্যাগে এগুলোর সঙ্গে একটি প্যাড ও একটি কলম দেয়া হবে।

এরই মধ্যে ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ওয়েবপেজ চালু করেছে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি। ওয়েবপেজের ভিডিও অংশে সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

চিকিৎসাকেন্দ্র 

সম্মেলন উপলক্ষে ১০০ চিকিৎসক নিয়ে ১২টির মতো প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র প্রস্তুত করেছে স্বাস্থ্য উপ-কমিটি। আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির পক্ষ থেকে সম্মেলন স্থানে কূটনীতিকদের জন্য বিশেষ স্টল স্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংস্কৃতিবিষয়ক উপ-কমিটি সম্মেলনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি

সার্বিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনকে নির্বিঘ্নে করতে ঢেলে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবকরা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে সম্মেলনস্থল, প্রবেশপথসহ চারপাশে দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবেন বলে জানান সম্মেলনের শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য

২১তম জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ একটি পরিবার। আমাদের অবিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের কাজে-কর্মে এবং ব্যবহারের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত দল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন ও পুরনোদের নিয়ে দলের আগামী কমিটি হবে আধুনিক ও সুসংগঠিত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

জাতীয় সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য কেউ অপরিহার্য নয়।

ইতিহাস

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে জন্ম আওয়ামী লীগের। এখন ঐতিহ্যবাহী এই দলটির বয়স ৭১ বছর। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে এখন পর্যন্ত ২০টি জাতীয় সম্মেলন হয়েছে আওয়ামী লীগের। এসব সম্মেলনে এখন পর্যন্ত সভাপতি হয়েছেন ৭ জন। এর মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তিনবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান সভাপতি শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ ৮ বার, আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ দুইবার এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও আবদুল মালেক উকিল একবার করে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দিন একবার নির্বাচিত হয়েছেন দলের আহ্বায়ক।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ১০ জন। সবচেয়ে বেশি ৪ বার করে হয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিল্লুর রহমান। তাজউদ্দিন আহমেদ তিনবার, আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দুইবার করে, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, আবদুল জলিল এবং ওবায়দুল কাদের একবার করে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

ছবি ● কাশেম হারুনসংগৃহীত

এএইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন