• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২১, ২০১৯, ০৮:০৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২১, ২০১৯, ০৯:৩৪ এএম

রমজানের ১৫ তম দিন আজ 

নফসের কামনা-বাসনাকে নিয়ন্ত্রিত করে ‘রোজা’

নফসের কামনা-বাসনাকে নিয়ন্ত্রিত করে ‘রোজা’


আত্মসংযম প্রদর্শনের মাস রমজান। নবী করিম (সা.) বলেন, ইহা ধৈর্য্যধারণ ও আত্মসংযমের মাস। প্রতিফল নিশ্চিতভাবে জান্নাত। মাহে রমজানের রোজা নফসের কামনা বাসনাকে নিয়ন্ত্রিত করে। যে ব্যক্তি আল্লাহের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে রোজা তাকে সম্বোধন করে বলে, আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন আজ সারাদিনের জন্য খানাপিনা তোমার ওপর হারাম করেছেন। এ সময় হালাল উপার্জিত খাদ্য এবং পানীয় তোমার জন্য জায়েজ নয়। 

রোজা বলে আজ তোমার মালিক তোমার যৌন ক্ষুধার ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করেছেন। অতএব এ সময়ের মধ্যে তোমার বৈধ স্ত্রীর সাথে সহমিলনকে হারাম ঘোষণা করেছেন। রোজা আরও বলে, সারা দিনের দুঃসহ ক্ষুধা পিপাসার পর যখন তুমি ইফতার করবে তখন তুমি পরিশ্রান্ত হয়ে আরাম করার পরিবর্তে উল্টো এবং বছরের অন্যান্য দিনের চাইতেও বেশি বেশি ইবাদত কর। 

রোজা আমাদের এটাও শিক্ষা দেয়, দীর্ঘস্থায়ী নামাজ আদায়ের পর যখন বিশ্রাম করতে যাবে তখন সকাল পর্যন্ত বেহুশ হয়ে ঘুমিয়ে থাকবেন না। শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় কর, সুবহে সাদিকের পূর্বে সাহরি খেয়ে দেহকে শক্তিশালী কর, আরেকটি পূর্ণ দিবস রিপুর দাসত্ব মুক্ত জীবনের ট্রেনিং তোমাকে গ্রহণ করতে হবে। এভাবে পুরো একমাস ক্রমাগত নফসের তিনটি সবচেয়ে বড় এবং সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী দাবি ও লোভ লালসাকে একটি কঠিন নিয়মের বাধনে আবদ্ধ করে রাখা হয়।

ইহার ফলে ব্যক্তি সত্তার মধ্যে এক বিরাট শক্তি যুক্ত হয়, যা আল্লাহের মর্জি অনুসারে নফস ও দেহের ওপর শাসন ক্ষমতা চালাতে সক্ষম হয় সারা জীবনে শুধু একবারের জন্য এ ট্রেনিং ব্যবস্থা করা হয় নাই। বরং বালেগ হওয়ার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতি বছর দীর্ঘ এক মাস এ কাজে ব্যয় হয়। রিপু ও কু-প্রবৃত্তির ওপর আপন ব্যক্তিত্বে বাধন বছরে বছরে নবায়িত ও শক্ত হয়। ফলে আল্লাহের নির্ধারিত প্রতিটি কাজে সে তার দেহ ও যাবতীয় শক্তি নিযুক্ত করতে পারে। 

আল্লাহের সন্তুষ্টি অর্জিত হয় এমন সব ভাল কাজের চেষ্টা সে করতে পারে। আল্লাহের নিষিদ্ধ প্রত্যেকটি পাপ কর্ম রুখে দাঁড়াতে পারে এবং যাবতীয় লোভ লালসা, আবেগ উচ্ছাসকে আল্লাহের নির্ধারিত সীমার মধ্যে আবদ্ধ রাখতে পারে। সে নিজের লাগাম নফসের হাতে ছেড়ে দেয় না, তাই নফস তাকে যে দিকে ইচ্ছা সে দিকে টেনে নিতে পারে না, প্রভুত্বে রজ্জু তার নিজের হাতে ধরে রাখে। 

নফসের যে সব লালসা যে সময় যতখানি এবং যেভাবে পূর্ণ করার অনুমতি আল্লাহ পাক দিয়েছেন, সে তা নিয়ম অনুসারেই পূর্ণ করে। সে নিজ দেহ রাজ্যর ওপর এক শক্তিশালী শাসনকর্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বস্তুত মানুষের মধ্যে এ শক্তি সৃষ্টি করা রোজার মূল উদ্দেশ্য। 

তা অর্জিত না হলে নবী করিম (সা.) বলেছেন, শুধু খানাপিনা পরিত্যাগের মধ্যে আল্লাহের কোনও আবশ্যকতা নেই। আর এ জন্য বলা হয়েছে রোজা আত্মসংযমের মাস। আর এ আত্মসংযম অর্জনের অনিবার্য ফল বা পুরস্কার হচ্ছে বেহেশত। আর এ জন্য রোজাদারের ওপর আল্লাহপাক এত খুশি হয়ে থাকেন যেন রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ তার নিকট মৃগনাভীর সুগন্ধির চেয়েও উত্তম। 

এসএমএম/টিএফ