• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৩, ২০১৯, ০৮:৩২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৩, ২০১৯, ০৮:৩৫ এএম

১৭ রমজান

ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ 

ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ 
ঐতিহাসিক বদর প্রান্তর

ঐতিহাসিক বদর দিবস আজ। মদিনা মনওয়ারা থেকে প্রায় ৮০ মাইল দূরে অবস্থিত একটি কূপের নাম ‘বদর’। সেখানে এ কূপের নামে একটি গ্রামও রয়েছে। ইতিহাসখ্যাত ‘বদর যুদ্ধ’ এ স্থানে সংঘটিত হয়েছিল দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজানুল করিমে। 

কোরাইশদের গর্ব ও অহঙ্কারের মাস এবং সকল প্রকার শক্তি-সামর্থের প্রধান উৎস ছিল সিরিয়ায় তাদের ব্যবসা বাণিজ্য। তাই রাজনৈতিক নীতি ও কৌশল হিসেবে তাদের শক্তিমত্তা বিনষ্ট করার উদ্দেশে এ ব্যবসার ধারা বন্ধ করে দেয়া প্রয়োজন ছিল। এ সময় কোরাইশদের একটি সুবিশাল বাণিজ্য কাফেলা সিরিয়া থেকে ফিরছিল। এ সম্পর্কে জানতে পেরে দ্বিতীয় হিজরির ১২ রমজানুল করিমে নবীয়ে আকরাম (সা.) ৩১৪ মুহাজির ও আনসার সাহাবি সাথে নিয়ে তাদের মোকাবেলা করতে নিজেই ময়দানে বের হয়ে পড়লেন।

রাওহা নামক স্থানে পৌঁছার পর তারা সেখানে তাবু ফেললেন। রাওহা মদিনা শরীফের দক্ষিণে ৪০ মাইল দূরবর্তী একটি জায়গার নাম। এদিকে কোরাইশদের বাণিজ্য বহরের নেতা এ খবর জানতে পেরে সে ওই রাস্তা বাদ দিয়ে সমুদ্রের উপকূল ধরে কাফেলা নিয়ে এগিয়ে চললো। সেই সাথে ঘোড়সওয়ার লোককে মক্কার দিকে দৌড়ে পাঠাল এ কথা জানাতে,  কোরাইশগণ নিজের পূর্ণ ক্ষমতা ও শক্তি নিয়ে যেনো এ জায়গায় এসে পৌঁছে যায় এবং নিজেদের বাণিজ্য কাফেলাকে বিপদ হতে রক্ষা করে। কোরাইশরা পূর্ব থেকে মুসলমানদের মূলোচ্ছেদ করার ফন্দি-ফিকির খুঁজে ফিরছিলো। এ খবরটি মক্কায় পৌঁছার সাথে সাথে ৯৫০ জন যুবকের এক বড় সেনাদল যাদের মধ্যে ১০০ ঘোড়া এবং ৭০০ উট ছিল। তারা নবীয়ে করিম (সা.) এর মোকাবেলা করার জন্য রওয়ানা হয়ে গেলো। এ সেনাদলে কোরাইশদের বড় বড় নেতা এবং ভিত্তবান ব্যক্তিবর্গ সকলেই অংশ নিয়েছিল। নবীয়ে করিম (সা.) যখন এ বিষয় জানতে পারলেন তখন তিনি সাহাবিদের সাথে পরামর্শ করলেন। হজরত আবু বকর (রা.) এবং অন্য সাহাবিগণ নিজেদের জীবন ও সম্পদ নবীজির নিকট সমর্পণ করে দিলেন। হজরত উমায়ের ইবনে ওয়াক্কাস (রা.) সে সময় কম বয়সী ছিলেন। তাই নবীয়ে করিম (সা.) তাকে জেহাদে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখেন। তিনি কাঁদতে শুরু করেন। এ অবস্থায় নবী করিম (সা.) তাকে জেহাদের অনুমতি প্রদান করেন। (কানজুল উম্মাল- ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-২৭০)

আনসারদের মধ্য থেকে খাযরাজ গোত্রের দলপতি হযরত সা’দ ইবনে উবাদা (রা.) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহের কসম। আপনি নির্দেশ দিলে আমরা সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়বো (মুসলিম শরীফ)। ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধে মুসলানদের ঐতিহাসিক বিজয় হয়েছিলো এবং কাফেরদের পরাজয় হয়েছিলো এবং অসংখ্য কাফেররাও বদর যুদ্ধে মুসলমানদের হাতে বন্দি হন।

এ বন্দিদের মধ্যে নবীয়ে করিম (সা.) এর চাচা হযরত আব্বাস (রা.) ছিলেন। তিনি পরবর্তী সময়ে ইসলাম কবুল করেন। হযরত আব্বাস (রা.) রাতের বেলা বন্দি থাকায় কষ্টে কাতর ছিলেন। তার কাতর ধ্বনি নবী করিম (সা.) এর পবিত্র কানে গিয়ে পৌঁছলে সাথে সাথে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। তিনি আর ঘুমাতে পারলেন না। সঙ্গী-সাথীরা ভোরবেলায় জিজ্ঞাসা করলো ‘হে আল্লাহের রাসূল (সা.) আপনার ঘুম আসেনি কেন’? তিনি উত্তর দিলেন- আমি কিভাবে ঘুমাবো যেখানে আমার সম্মানিত চাচাজানের কাতর ধ্বনি আমার কানে আসছে। (কানজুল উম্মাল- ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-২৭২)

এ বছর অর্থাৎ দ্বিতীয় হিজরিতে বদর প্রান্ত হতে ফিরে আসার পর প্রথম বার ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়া হয়। রমজানের রোজা, সাদকায়ে ফিতর এবং যাকাত এ বছরই ফরজ করা হয়। (সীরাতে মুগলতাই)

এসএমএম