• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০১৯, ০৬:৩৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩, ২০১৯, ০৬:৩৯ পিএম

অব্যবস্থাপনার মধ্যেই হজ ফ্লাইট শুরু বৃহস্পতিবার

অব্যবস্থাপনার মধ্যেই হজ ফ্লাইট শুরু বৃহস্পতিবার

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চরম অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রথম হজ ফ্লাইট। চিকিৎসক দল পাঠানোর নির্ধারিত দিনে গতকাল ফ্লাইট বাতিল, এর একদিন আগে চিকিৎসক দলের তালিকা বাতিল, তড়িঘড়ি করে নতুন তালিকা তৈরি, হাজিদের গাইড হিসেবে দায়িত্ব পালনে মোয়াল্লেমদের তালিকা ঠিক না হওয়ার মধ্যে প্রথম হজ ফ্লাইট সৌদির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়তে যাচ্ছে আগামীকাল। 

এবছর হজ মৌসুমে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন মুসল্লি হজ পালন করার সুযোগ পাচ্ছেন। আগামীকাল সকাল সোয়া ৭টায় ৪১৯ জন মুসল্লি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-৩০০১ ফ্লাইটটিতে করে সৌদির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। 

হজের উদ্দেশে প্রতিবছর মুসল্লিদের যাত্রা শুরুর অন্তত দুদিন আগে চিকিৎসক দল ও মোয়াল্লেমদের মক্কা এবং মদিনায় পাঠানো হয়। এবছরই প্রথম এবিষয়ে চরম অব্যবস্থাপনা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসক দলের সৌদি যাত্রার মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে গত ১ জুলাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করা ২০৭ সদস্যের দলটি বাতিল করা হয়। ২ জুলাই তরিঘরি করে আবার নতুন তালিকা তৈরি করা হয়। এই রিপোর্ট লেখার সময়পর্যন্ত তৈরি হয়নি মোয়াল্লেমদের তালিকা। এরই মধ্যে আগামীকাল প্রথম হজ ফ্লাইট। 

আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া এই হজ ফ্লাইট চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ঈদুল আজহার পর আবার ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১৭ আগস্ট থেকে। চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বাংলাদেশ থেকে এ বছর ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরব যাবেন। প্রত্যেক হজযাত্রী ৪৬ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। 

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর বিমানের ফ্লাইটে ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী যাবেন। তাদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৭ হাজার ১৯৮ জন ব্যালটি হজযাত্রী এবং বাকি ৫৬ হাজার ৪০১ জন নন-ব্যালটি হজযাত্রী, তারা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। 

বিমানের চারটি নিজস্ব উড়োজাহাজে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রীরা জেদ্দায় যাবেন। 

ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা। দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৬৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে ৩০৪টি ডেডিকেটেড এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকে এ বছর যথাক্রমে ১৯টি ও ৩টি হজ-ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

৪ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত হজ পূর্ব মোট ১৮৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। হজ পরবর্তী ১৪৭টি ফ্লাইট চলবে ১৭ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মদিনা ১৮টি ও মদিনা থেকে বাংলাদেশে ১৫টি সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। পুরোটাই তত্ত্বাবধান করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

প্রথমবারের মতো এ বছর কিছু ফ্লাইটের জেদ্দা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম ঢাকা থেকেই সম্পন্ন করা হবে। এ জন্য সৌদি আরবের একটি ইমিগ্রেশন টিম ঢাকায় অবস্থান করবে। 

এ বছর বিমান হজযাত্রীদের উড়োজাহাজের সামনের অপেক্ষাকৃত বড় ও আরামদায়ক নিশ্চিত আসন নেয়ার ক্ষেত্রে ওয়ানওয়েতে ১০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা এবং যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে ২০০ ডলার বা সমপরিমাণ টাকা দিতে হবে। এছাড়া হজযাত্রীদের টিকিট কেনার পর যাত্রার তারিখ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যাত্রার ২৪ ঘণ্টা আগে ২০০ মার্কিন ডলার এবং যাত্রার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা পরিবর্তনের জন্য ৩০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাড়তি মাশুল আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে। 

নির্ধারিত ফ্লাইটে না গেলে টিকিটের অর্থ ফেরত দোয়া হবে না। বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটগুলোর চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। এ বছর সৌদি সরকার নির্ধারিত বরাদ্দকৃত স্লটের বাইরে অতিরিক্ত কোনো ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেবে না বলে জানিয়েছে।

বিমানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার দৈনিক জাগরণকে জানান, প্রত্যেক হজযাত্রী বিনা মূল্যে সর্বাধিক দুটি ব্যাগেজে ২৩ কেজি করে মোট ৪৬ কেজি মালামাল বিমানে এবং কেবিন ব্যাগেজে ৭ কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই প্রতিটি ব্যাগেজের ওজন ২৩ কেজির বেশি হবে না। প্রত্যেক হাজীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি দেশে আসার পর তাদের কাছে দিয়ে দেয়া হবে। কোনো অবস্থাতেই হাজিরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।

ধারালো বস্তু ব্যাগেজে নেয়া যাবে না উল্লেখ করে তাহেরা খন্দকার আরো জানান, যেকোনো ধারালো বস্তু যেমন- ছুড়ি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন অ্যারোসল এবং ১০০ (এম এল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না। এ ছাড়া কোনো প্রকার খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নেয়া যাবে না। লাগেজ স্যুটকেস অথবা ট্রলিব্যাগ হতে হবে। কোনো অবস্থায় গোলাকৃতি, দড়িবাঁধা ব্যাগ ইত্যাদি বিভিন্ন আকৃতির ব্যাগেজ গ্রহণযোগ্য হবে না।

এমএএম/টিএফ

আরও পড়ুন