• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৯:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৭, ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম

এবারের বিশ্বকাপের সেরা ৫ বিতর্কিত কাণ্ড  

এবারের বিশ্বকাপের সেরা ৫ বিতর্কিত কাণ্ড  
বিতর্কিত সেই ওভারথ্রোর কারণে ক্ষমা চেয়েছেন স্টোকস নিজেই

পূর্বের অন্যান্য বিশ্বকাপের তুলনায় এবারের আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ছিল একটু বেশিই বিতর্কিত। চলুন চোখ বুলিয়ে আসা যাক এবারের বিশ্বকাপের সেরা ৫ বিতর্কিত কাণ্ডের দিকে!

১। ফাইনালের থ্রো বিতর্ক 

ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার এবারের বিশ্বকাপের ফাইনালে শেষ ওভারের চতুর্থ বলে রান নেয়ার সময় বাউন্ডারি লাইন থেকে গাপটিলের ছোঁড়া বল বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে চার হয়ে যায়। তবে শুধুমাত্র এই চার নিয়েই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েনি। 

অনেকেই এর সঙ্গে দাবি করেন, মোট ছয় রান দেয়া উচিত হয়নি। কারণ বল যখন থ্রো করা হয়েছিল তখন দুই ব্যাটসম্যান একে অপরকে ক্রস করেননি। তাই হিসেব মতো এটি পাঁচ রান হওয়ার কথা। কিন্তু ফিল্ড আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা ইংল্যান্ডকে ৬ রান প্রদান করেন। ৩ বলে ৯ রানের সমীকরণ থেকে ভাগ্যগুণে ইংল্যান্ড পৌঁছে যাউ ২ বলে ৩ রানের সহজ সমীকরনে।

২। রাজনৈতিক ব্যানার নিয়ে ক্রিকেট মাঠে বিমান! 

বেশ কয়েকটি ম্যাচে এবার মাঠের ওপর দিয়ে রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে উড়ে যায় প্রাইভেট জেট

হেডিংলিতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচ চলাকালীন মাঠের ওপর দিয়ে একটি বিমান উড়ে যায়, যেখানে লেখা ছিল 'জাস্টিস ফর বালুচিস্তান ও "হেল্প এন্ড ডিজ্যাপিয়ারেন্স ইন বালুচিস্তান" অর্থাৎ 'বালুচিস্তানে গুম বন্ধ করতে সাহায্য করুন।'

যদিও আইসিসি পরে এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ক্রিকেট মাঠে কোনো ধরণের রাজনৈতিক বার্তাকে প্রশ্রয় দেবে না এবং লিডসের আকাশপথ পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। তবে এ তদন্তে কোনো অগ্রগতি এখনো পর্যন্ত চোখে পড়েনি। বরং পরবর্তীতে ভারত- পাকিস্তান হাইভোল্টেজ ম্যাচের দিনও রাজনৈতিক বার্তাবাহী একটি বিমানকে উরে যেতে দেখা যায়। 

পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশটির সাথে আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্ত রয়েছে। বালুচিস্তানে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন সক্রিয় রয়েছে বিধায় ঐ অঞ্চলের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সেখানে সেনা অভিযান পরিচালনা ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

৩। গেইলের ব্যাটে 'ইউনিভার্স বস' লোগো 

বিতর্ক থাকলেও ইউনিভার্স বস লোগোযুক্ত ব্যাট নিয়েই খেলে যান গেইল

স্বঘোষিত ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইল এবারের বিশ্বকাপে বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন 'দ্য বস' লোগোযুক্ত ব্যাট নিয়ে খেলতে নেমে। পরবর্তীতে আইসিস গেইলের এ প্রচেষ্টায় বাধ সাধে। 

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, 'ব্যক্তিগত বার্তা বহন করে এমন কোনো ক্রীড়া সামগ্রী বিশ্বকাপে ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে তারপরও গেইল 'দ্য বস' লোগো নিয়েই বিশ্বকাপ খেলে যান এবং আইসিসি এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এর ফলে আইসিসির সমালোচনায় মুখর হন অনেক ক্রিকেটপ্রেমী। 

৪। শাহজাদ বিতর্ক 

বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়েই বাদ দেয়া হয় শাহজাদকে

বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়েই ইনজুরির কারণ দেখিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে রানের মালিক মোহাম্মদ শাহজাদকে বাদ দিয়ে ১৭ বছর বয়সী ইকরাম আলী খিলকে দলে ভেড়ায় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। আইসিসির অনুমতি নিয়ে দলে এ রদবদল করা হলেও দেশে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লাইভে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহজাদ। আফগানিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শেহজাদ অভিযোগ করেন, তাকে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দিতে চক্রান্ত করেছিল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড! তিনি এই বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলো খেলার জন্য যথেষ্ট ফিট ছিলেন, তারপরও তাকে ষড়যন্ত্র করে দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে বাঁ হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন শেহজাদ। তবে ইনজুরিমুক্ত হয়ে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের প্রথম দুই ম্যাচে ঠিকই মাঠে নেমেছিলেন তিনি। কাবুলে ফিরে গিয়ে শাহজাদ ভারতীয় গণমাধ্যম পিটিআইকে বলেন, 'আমি খেলার জন্য সম্পূর্ণ ফিট ছিলাম। তারপরও বুঝতে পারছি না কেন আমাকে বিশ্বকাপ দল থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। শুধুমাত্র আফগান দলের ম্যানেজার, ডাক্তার ও অধিনায়ক জানতেন এ ব্যাপারে। এমনকি কোচকেও (ফিল সিমন্স) এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। এটা সত্যিই হৃদয়বিদারক।' পরবর্তীতে এসিবিকে খেলা ছেড়ে দেয়ার হুমকিও দেন শাহজাদ। 

৫। ধোনির 'বলিদান' ব্যাজ কাণ্ড 

ধোনির উইকেট-কিপিং গ্লাভসে ভারতীয় সেনা বাহিনীর বলিদান ব্যাজ

ঘরের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপ জেতার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী তখনকার অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে সম্মানসূচক কর্নেলের পদ প্রদান করে। পরে তিনি বেশ কিছুদিন প্যারা রেজিমেন্টের সঙ্গে ট্রেনিংও করেন। সেনাবাহিনীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচে সেনাবাহিনীর বলিদানের প্রতীক দেওয়া গ্লাভস পড়ে মাঠে নামেন ধোনি। 

ধোনির সেই গ্লাভস মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভক্তদের কাছে বেশ প্রশংসিতও হয় ধোনির এই কীর্তি। কিন্তু বিসিসিআইকে আইসিসি চিঠি দিয়ে অনুরোধ করে, গ্লাভস থেকে 'বলিদান ব্যাচ' সরিয়ে দিক ধোনি। আইসিস চায়নি সেনাবাহিনীর প্রতীক ক্রিকেট মাঠে ব্যবহৃত হোক। পরে নিয়ম মেনে ধোনিও সেই ব্যাজ সরিয়ে ফেলেন তার কিপিং গ্লাভস থেকে। 

এমএইচএস 

আরও পড়ুন