ফ্রেঞ্চ লীগ ওয়ানে মঁপেলিয়েরকে ৫-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের শীর্ষস্থান আরও সুসংহত করেছে পিএসজি। তবে বড় জয় ছাপিয়ে ম্যাচ চলাকালীন সময়ে নেইমার এবং কিলিয়ান এমবাপ্পের মেজাজ হারানোর ঘটনা সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) পার্ক দেস প্রিন্সেসে অনুষ্ঠিত ম্যাচের ৩৮ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারের কাছে এই সিদ্ধান্ত সঠিক মনে না হওয়ায় রেফারি জেরোমে বিসার্ডের কাছে তিনি কারণ জানতে চান। একপর্যায়ে নেইমার রেফারির সঙ্গে নাকে নাক মিলিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হন। তাতে অবশ্য রেফারির সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। প্রথমার্ধ শেষে স্টেডিয়ামের টানেল দিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময়ও ম্যাচ অফিশিয়ালের সঙ্গেও নেইমারের ঝগড়া বেঁধে যায়। রাগ চরমে ওঠার পর নেইমার ড্রেসিং রুমে ঢোকার আগে টানেলের দেয়ালে কিছু একটা ছুড়ে মেরে বলেন, ‘ফরাসি ভাষা বলব? নিকুচি করি আমি!’
বিরতির পর মেজাজ হারিয়ে আরেক কাণ্ড করে বসেন ফ্রেঞ্চ তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে রেফারির সঙ্গে নয়; খোদ নিজের দলের কোচ টমাস টুখেলের সঙ্গে!
ম্যাচের ৬৮ মিনিটে এমবাপ্পের জায়গায় পিএসজি কোচ মাঠে নামালেন এই মৌসুমেই ইন্টার মিলান থেকে পিএসজিতে ধারে আসা আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার মাউরো ইকার্দিকে। কোচের সিদ্ধান্ত পছন্দ হয়নি এমবাপ্পের। আর তাতেই তিনি রেগে আগুন হয়ে যান।
এমবাপ্পেকে সাইড বেঞ্চে বসানোর কারণ বোঝানোর জন্য টুখেল কথা বলতে গেলে তাকে দুই-একবার ধাক্কাই খেতে হয়। শিষ্যের রাগ কমানোর জন্য তাকে একটা জ্যাকেট দিতে চাইলেও তা গ্রহণ করেননি এমবাপ্পে। এমন অভাবনীয় ঘটনার ফলে মাঠে আসা সকল ক্রীড়া সাংবাদিকদের ক্যামেরাবন্দী করার প্রতিযোগিতায় নেমে যান।
ম্যাচের ভেতর ঘটে যাওয়া নেইমার ও এমবাপ্পের মেজাজ হারানো এবং রেফারির ৫টি হলুদ ও একটি লাল কার্ড দেখানোর মতো ঘটনা অবশ্য পিএসজির মাঠের পারফরম্যান্সে মোটেও প্রভাব ফেলেনি।
৮ মিনিটের মাথায় দ্রুত বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডান পায়ের দারুণ বাঁকানো শটে পিএসজিকে এগিয়ে নেন পাবলো সারাবিয়া। ১০ মিনিট পর দিমিত্রি লাল কার্ড পেলে দশ জনের দলে পরিণত হয় মঁপেলিয়ের। ৪১ মিনিটের সময় ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ৩ মিনিট পর আত্মঘাতী গোল করেন ড্যানিয়েল কংগ্রে।
বিরতির পর ৫৭ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে গোল করেছিলেন। ৮ মিনিট পর মিনিটে লেইভিন কুরজাওয়ার গোলে ৫-০ গোলের লিড পায় পিএসজি।
ম্যাচ শেষে নেইমারের মেজাজ হারানো প্রসঙ্গে টুখেলের ভাষ্য, পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ও মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিল। তবে আমি খেলোয়াড়দের রক্ষা করব কারণ তাদের ভালোবাসি।
এমবাপ্পের আচরণে টুখেল নিজের কষ্ট পাওয়া নিয়ে বলেন, পিএসজি বারবার সবাইকে দেখিয়ে দেয় যে তারা কতটা পেশাদার। কিন্তু মাঠে এমন ঘটনা ঘটলে সেটা আসলেই দুঃখজনক। আপনার সবাইকে সম্মান করতে হবে। আমি এমবাপ্পেকে বোঝাতে চেয়েছিলাম যে কেন ওকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিয়েছি। আমার সিদ্ধান্তটা সম্পূর্ণ খেলাকেন্দ্রিক ছিল। এটা ফুটবল, টেনিস না।
আরআইএস