• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯, ১০:১৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯, ১০:১৩ পিএম

গার্মেন্ট কর্মীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ মা-বাবার

গার্মেন্ট কর্মীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ মা-বাবার
লিমা আক্তার  -  ছবি : জাগরণ

টঙ্গীর তুরাগ থানার দক্ষিণ খায়েরটেক মহল্লায় ভাড়া বাসায় থাকতেন বাগেরহাটের শরণখোলার বানিয়াখালী গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের মেয়ে গার্মেন্ট কর্মী রিমা ওরফে লিমা আক্তার (২০)। দেড় মাস আগে ৯ আগস্ট রাতে বাড়ির মালিক প্রভাবশালী খোরশেদ আলম তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন।

পরের দিন (১০ আগস্ট) সকালে তুরাগ থানার পুলিশকে ম্যানেজ করে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেন খোরশেদ। পরে তুরাগ থানায় ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে গেলে পুলিশ পরিবারের কাউকে পাত্তা দেয়নি।
প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে ঘুরেও কোনো সহযোগিতা মেলেনি। এমন অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শরণখোলা প্রেসক্লাবে আসেন হতভাগা মেয়েটির বাবা।

মেয়ের বাবা ইউসুফ আলী হাওলাদার জানান, তিনিও চট্টগ্রামের ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিডেট নামের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। লিমা তার প্রথম স্ত্রী মাসুমা বেগমের একমাত্র সন্তান। ২০১৬ সালে গাজীপুরের আ. জলিলের সাথে বিয়ের দুই বছর পর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় লিমার। এরপর সে একাই থাকত। ছয় মাস আগে সে তুরাগ থানার খায়েরটেক মহল্লার খোরশেদ আলমের বাড়ির চতুর্থ তলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। ওখানে যাওয়ার পর থেকেই বাড়ির মালিকের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে লিমার ওপর। তাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এসব কথা আগে থেকেই মা-বাবাকে জানিয়েছে লিমা।

ইউসুফ আলী আরো জানান, ঘটনার দিন রাতে খোরশেদ আলম লোকজন নিয়ে তার মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করেন। পরের দিন সকালে তুরাগ থানার দারোগা নির্মল বাবুকে ম্যানেজ করে আত্মহত্যার অপপ্রচার চালান। সে অনুযায়ী পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করে। ১১ আগস্ট লাশ শরণখোলায় গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়। অপমৃত্যুর মামলায় মেয়ের মা মাসুমা বেগমের স্বাক্ষর পুলিশের ওই দারোগা নিজে দিয়ে মামলাটি রেকর্ড করেন। পরবর্তীতে কয়েকবার তুরাগ থানায় গিয়ে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ নিয়ে গেলে দারোগ নির্মল মেয়ের মা-বাবাকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে থানা থেকে তাড়িয়ে দেন।

মেয়ের মা মাসুমা বেগম জানান, তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে এ রকম কোনো কারণ ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, সে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু ঘটনার দিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেয়ের সাথে মোবাইলে কয়েকবার কথা হয় তার। পরের দিন সকালে থানা থেকে লিমার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। ওইদিন দুপুর ২টায় তুরাগ থানায় গেলে দারোগা নির্মল মেয়ের গলার চেইন ও দুটি মোবাইল দিয়ে তার কাছ থেকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। পরে জিডির কপিতে যে স্বাক্ষর সেটা তার নয় বলে দাবি করেন মাসুমা বেগম। তার মেয়েকে বাড়ির মালিক ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন। প্রশাসনের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নির্মল চন্দ্র দেব মুঠোফোনে বলেন, মেয়েটিকে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না। রিপোর্ট আসতে দু-তিন মাস সময় লাগে। রিপোর্টে যা আসবে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মেয়ের পরিবারের কারো সাথেই দুর্ব্যবহার করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

এনআই

আরও পড়ুন