• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৪:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৫:০৫ পিএম

৪ ফেরিঘাট নদীতে বিলীন, আরো ২টি নিয়ে শঙ্কা

দৌলতদিয়ায় পারের অপেক্ষায় শত শত যান

দৌলতদিয়ায় পারের অপেক্ষায় শত শত যান
পারাপারের অপেক্ষায় দৌলতদিয়ায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি  -  ছবি : জাগরণ

পদ্মায় ভাঙন ও তীব্র স্রোতে টানা এক সপ্তাহ ধরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। জনদুর্ভোগ কমাতে এই নৌরুট দিয়ে শুধু যাত্রীবাহী যানবাহন পারাপারের কথা থাকলেও অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিতে ওঠার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বাড়ছে।

বিআইডব্লিউটিসি ও ঘাটসংশ্নিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, এক সপ্তাহ ধরে নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া একই কারণে গত ৫ দিন ধরে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নৌরুটের মোট ১৬টি ফেরির মধ্যে বেশির ভাগই স্রোতের বিপরীতে চলাচল করতে পারছে না। কখনো ৩টি, কখনৈা ৪-৫টি ফেরি চলাচল করছে। সে ক্ষেত্রেও স্রোতের তীব্রতায় ফেরিগুলোর প্রতি ট্রিপে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগছে। আবার কখনো যানবাহন পারাপার বন্ধ করে দিয়ে শুধু যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সোমবার (৭ অক্টোবর) থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। এর পরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ সিরিয়ালে আটকে আছে যাত্রীবাহী শত শত বাস।

পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে ফেলা হয়েছে বালুর বস্তা  -  ছবি : জাগরণ

সরেজমিনে বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ পর্যন্ত অন্তত ৪ কিলোমিটার জুড়ে যাত্রীবাহী বাসের সারি। এর মধ্যে অসংখ্য নৈশকোচ মঙ্গলবার রাতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় সিরিয়ালে আটকা পড়ে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ফেরির নাগাল পায়নি। তবে সিরিয়ালের ফাঁকে ফাঁকে কিছু পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দেখা যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা থাকার কথা নয়। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ এই ঘাট পরিদর্শনে আসেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম। তিনি ৬ নং ফেরিঘাটে অবস্থানকালেই ঢাকা মেট্রো-ট-১১-৩০২৪ নং একটি বড় ট্রাক ফেরিতে উঠছিল। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি। বিষয়টি তার নজরে এলে তিনি ট্রাকটি ফেরিতে উঠতে নিষেধ করে কর্তব্যরত পুলিশকে ট্রাকটি ঘুরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, গুরুত্বপূর্ণ এ নৌরুটে মোট ১৬টি ফেরির মধ্যে তীব্র স্রোতের বিপরীতে বর্তমানে মাত্র ৭টি ফেরি চলাচল করতে পারছে। যে ফেরিগুলো চলছে, সেগুলোরও প্রতি ট্রিপে কয়েক গুণ সময় লাগছে। এতে যানবাহন পারাপার স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্তব্যরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আবুল হোসেন গাজী জানান, কোনো পণ্যবাহী ট্রাককে ফেরিতে ওঠার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। সিরিয়ালের মধ্যে যদি কোনো পণ্যবাহী ট্রাক থাকে সেটিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় তিনি দাবি করেন, যে ট্রাকটি ফেরিতে ওঠার সময় ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই ট্রাকটি প্রশ্নপত্র আনতে ঢাকায় যাচ্ছিল।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম জানান, দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া ফেরিঘাটটি চরম ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে যান পারাপার স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টায় কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। ভাঙনকবলিত এলাকার বাইরে বিকল্প ঘাট নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’

এনআই

আরও পড়ুন