• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০১৯, ০৮:৫৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৪, ২০১৯, ০৯:৫২ এএম

শেরপুরের সূর্যদী গণহত্যা দিবস

শেরপুরের সূর্যদী গণহত্যা দিবস
৭১-এ গণহত্যার শিকার কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্য - ছবি : জাগরণ

আজ রোববার (২৪ নভেম্বর)। শেরপুরের সূর্যদী গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সূর্যদী গ্রাম ও আশপাশের এলাকা ভেসেছিল রক্তের বন্যায়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এদেশীয় দোসর আলবদর, রাজাকারদের মাধ্যমে খবর পেয়ে হানাদাররা মুক্তিযোদ্ধা ও আশ্রয়দাতা গ্রামবাসীকে শায়েস্তা করতে ছুটে যায় ওই গ্রামে। বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছিল দুই মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৯ জন নিরীহ গ্রামবাসী। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল প্রায় ২শ ঘরবাড়ি। বছর ঘুরে দিনটি এলেই স্বজন হারানোর বেদনায় ভারাক্রান্ত হন সূর্যদী গ্রামবাসী। কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও সঠিকভাবে চিহ্নিত হয়নি গণহত্যার মুক্তিকামী বীর শহীদদের গণকবর ও তৈরি হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ।

স্থানীয়রা জানায়, ঘড়ির কাটায় সেদিন সকাল ৮টা বাজে। শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নে ছায়া সুনিবিড় শান্ত গ্রাম সূর্যদী। ওইদিন গ্রামবাসীরা কেউ বাড়ির উঠানে শীতের মিষ্টি রোদ পোহাচ্ছেন, আবার কেউবা কৃষিকাজ নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকে আবার ঘুমাচ্ছে। এমন সময় স্থানীয় রাজাকারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জিপ আর ট্রাক বোঝাই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রামটিতে হামলা করে। গ্রামের লোকজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই হানাদার বাহিনী এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে। এক সময় রক্তের নেশায় উন্মুখ হিংস্র হায়েনাদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে নিজেদের নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ওই দিন আত্মগোপনে থাকা ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মাত্র ছয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘গিয়াস কোম্পানি’র মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব আলী, আবদুল খালেক, ফজলুর রহমান, হাবীবুর রহমান, মমতাজ উদ্দিন ও আবুল হোসেন সামনে এগিয়ে যান। যাকে যেখানে পেয়েছে সেখানেই পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে পাক সেনারা। 

এদিকে, স্থানীয় স্কুল মাঠে সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনীরা। এসময় গ্রামের একটি ধানক্ষেতে লুকিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধা আফসার উদ্দিন দূর থেকেই ফাঁকা গুলি করলে তাকে গ্রামের একটি ধানক্ষেতে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেই সাথে শহীদ হয় গ্রামের মোট ৪৯ জন নিরীহ গ্রামবাসী। এজন্য ২৪ নভেম্বর শেরপুরবাসীর কাছে এক ঐতিহাসিক স্মরণীয় দিন। দিনটির কথা মনে হলে এখনো চমকে উঠেন তারা। দিনটি উপলক্ষে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।

কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও সঠিকভাবে চিহ্নিত হয়নি গণহত্যার মুক্তিকামী বীর শহীদদের গণকবর। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারে সন্তানদের দাবি, শহীদদের সঠিক তালিকা ও গণকবর গুলোর সঠিক নিরূপন করে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হোক। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে নানা কমসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।


কেএসটি

আরও পড়ুন