• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০১৯, ০৭:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১, ২০১৯, ০৭:৫৬ পিএম

চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসায় সন্তান হারানোর অভিযোগ মায়ের

চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসায় সন্তান হারানোর অভিযোগ মায়ের
মা-বাবার পরম মমতায় জিহান সারোয়ার প্রিয়। এই ছবি এখন কেবলই স্মৃতি  -  ছবি : জাগরণ

চট্টগ্রাম মহানগরীর বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক বছরের শিশুসন্তানকে হারানোর অভিযোগ করেছেন মা মোহছেনা আক্তার ঝর্ণা। রোববার (১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগে ম্যাক্স হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা, গাফিলতি ও নার্সদের অবহেলায় তার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর প্রতিকার চেয়ে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিবরণে বলা হয়, গত ২১ নভেম্বর সকালে নগরীর মেহেদিবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু জিহান সারোয়ার প্রিয়র মৃত্যু হয়। তখন তার ছেলে খেলছিল। একটি ইনজেকশন পুশ করার আধা ঘণ্টার মধ্যে ছেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এর আগে ১৭ নভেম্বর তার সন্তান জিহান সারোয়ার প্রিয় অসুস্থ বোধ করলে তাকে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর অনকলে চিকিৎসক সনৎ কুমার বড়ুয়াকে দেখালে তিনি ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। ২১ নভেম্বর দুপুরে প্রিয়কে মেশিনের মাধ্যমে ধীরে ওষুধ দেয়ার কথা থাকলেও অনভিজ্ঞ নার্স ওই ওষুধের শেষের অংশ হাত দিয়ে পুশ করেন। আর তখনই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেয় প্রিয়।

ঝর্ণা অভিযোগ করেন, ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার চার দিন প্রায় সময়ই নার্স, আয়া ও চিকিৎসকদের অবহেলার শিকার হয়েছেন। অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ নার্সরা ডিউটিতে রাতে ঘুমিয়ে থাকে। তাদের ডাকলে উল্টো বকা শুনতে হয়। এছাড়া তার সন্তানের বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দেখতে দেয়নি। তারা যে ওষুধ দিয়েছে তার মেয়াদ ছিল কি না তাও আমরা জানি না।

তার অভিযোগ, ম্যাক্স হাসপাতাল শুধু তাদের ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি পূর্ণ করে চলেছে। রোগীদের সুচিকিৎসা প্রদানে তাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। সন্তানের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন এবং ম্যাক্স হাসপাতালের প্রতিটি অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা মোহছেনা আক্তার ঝর্ণা ও শামীম সারোয়ার দম্পতির এক মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। মেয়ে বড়। ছেলে জিহান সারোয়ার প্রিয়র বয়স ছিল ১ বছর ২৪ দিন। তারা নগরীর লালখান বাজারের চানমারী রোডের বাসিন্দা।

অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি বলেন, এ ঘটনা তদন্তে আমার নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি করা হচ্ছে। আমরা তিনজন তদন্তের দায়িত্বে থাকব। একজন সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন। তদন্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি কিংবা ডাক্তারের চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি বা অবহেলা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, ঘটনা তদন্ত হোক। তদন্ত হলে কোনো সন্দেহ থাকলে সেটা দূর হবে।

এনআই

আরও পড়ুন