• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০১৯, ১১:৪৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৫, ২০১৯, ১১:৪৪ এএম

বাঁশের চাটায় ঘেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়

বাঁশের চাটায় ঘেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার অনুপনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বেহাল দশা। বছরের পর বছর কোন রকম বাঁশের চাটায় দিয়ে ঘেরা এই স্কুলটিতে জরাজীর্ণ ৩টি শ্রেণীকক্ষে প্রতিদিন ২৭০ জন শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। 

তবে একটু বৃষ্টি আর ঝড়ো বাতাস আসলেই স্কুল ছুটি দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারণ যেকোন সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। আর এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলের শ্রেণী কক্ষে  বসার বেঞ্চের অভাবে অনেক শিক্ষার্থী মাটির নিচে বসেও ক্লাস করে। এছাড়া স্কুলের প্রশাসনিক কোন ভবন না থাকার কারণে জরুরি কাগজপত্র সামলাতে শিক্ষকদের পড়তে হয় প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায়। 

বিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে জানা গেছে, উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের অনুপনগর মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে স্কুলটির জন্য গত ১৬-১৭ অর্থ বছরে এলজিইডি প্রকল্পে ৭৭ লাখ টাকায় নতুন ভবন নির্মাণের কাজ পায় আসমান নামে একজন ঠিকাদার। বিদ্যালয়টিতে ৪ তলা ফাউন্ডেশনের চার রুম বিশিষ্ট একটি ভবনটির নির্মাণের কাজ শুরু হলেও অজ্ঞাত কারণে ঠিকাদার স্কুলের পাশে মাটি খনন করলেও কিছুদিন পর কাজ বন্ধ করে দেন। ভবনের কাজ না করে কাউকে কিছু না বলে চলে যায় ঠিকাদারের লোকজন। তারপর থেকেই স্কুলটি জরাজীর্ণ অবস্থাতেই পড়ে আছে। 

এদিকে কিছুদিন আগে আলমডাঙ্গা উপজেলায় কয়েকটি প্রাথমিক স্কুলের নতুন ভবনের নামের তালিকা আসলেও অদৃশ্য কারণে অনুপনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নাম নেই তালিকায়। এতে করে হতাশ হয়ে পড়ে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী-শিক্ষকরাসহ এলাকার সাধারণ মানুষ।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক ইকবাল বাহার জানান, ১৯৯৮ সালে ৩৩ শতক জমির উপর স্কুলটি গড়ে ওঠে। ২০১৩ সালে স্কুলটি সরকারি হয়। দীর্ঘ বছর ধরে বাঁশের বেড়া দেওয়া শ্রেণীকক্ষেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে আসছে। প্রায় দুই যুগ পার হলেও স্কুলটি একই অবস্থায় রয়েছে। এক প্রকার খোলা আকাশের নিচেই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করছে।

অনুপনগর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানায়, রোদ বৃষ্টিতে কষ্ট হলেও তারা নিয়মিত স্কুল করে। স্কুলে তাদের অনেক কষ্ট হয় পড়াশোনা করতে। স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে স্কুলের জন্য নতুন একটি ভবন নির্মাণ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানায়, আব্দুল কুদ্দুস জানান, স্কুলের ভবন তৈরী দেখে শিক্ষার্থীরা নতুন স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু তাদের সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। নতুন করে ১০টি ভবন উপজেলায় আবার আসলেও কেন অনুপনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম সেই তালিকায় নেই সে বিষয়ে কিছুই জানা নেই তার।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিখিতভাবে কিছুই জানাননি। কেন বিদ্যালয়টির নতুন ভবন হলো না সে বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আলমডাঙ্গা উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, ওই ঠিকাদারের অবহেলার কারণেই স্কুলটির ভবন নির্মাণ হয়নি। ভবন নির্মাণে ওই ঠিকাদারের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে জানেন না তিনি।

কেএসটি


 

আরও পড়ুন