• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০১৯, ০৬:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৯, ২০১৯, ০৬:৩২ পিএম

পাউন্ডের দরপতনে বিরূপ প্রভাব রেমিটেন্স প্রবাহে

পাউন্ডের দরপতনে বিরূপ প্রভাব রেমিটেন্স প্রবাহে

● ব্রেক্সিটের প্রভাবে কমে গেছে পাউন্ডের মান 

● ভিন্ন উপায়ে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন অভিবাসীরা

● আশানুরূপ রেমিটেন্স থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশ

● ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ জন্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে পাউন্ডের মান পতন 

● ব্রেক্সিট হলেও বাজার স্থিতিশীল হতে সময় নেবে ১-২ বছর

............................................

ব্রিটেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের পরিবার-পরিজনদের জন্যে নিয়মিতই টাকা-পয়সা পাঠিয়ে থাকেন দেশে। ঈদ আসলে টাকা পাঠানোর পরিমাণটা অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু এবার ঈদুল আজহার সময় ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর পরিমাণটা আশাতীত কমে গেছে। হঠাৎ করে পাউন্ডের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমে যাওয়াতেই বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রবাহ থমকে গেছে।

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ক্ষমতা গ্রহণের পরদিন থেকেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে পাউন্ডের দরপতন শুরু হয়। ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউই) থেকে বের হওয়ার প্রক্রিয়া ব্রেক্সিট কীভাবে সম্পন্ন হবে— তা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতাই পাউন্ডের দরপতনের মূল কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইউকের নতুন প্রধানমন্ত্রী কোন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট সম্পাদন করতে পারেন বলে যে একটা ধারণা করা হচ্ছে, এই ধারণাই ব্রিটেনের মুদ্রাকে ডলার এবং ইউরোর বিপরীতে দুর্বল করে দিচ্ছে।

মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জ হাউজ (ইউকে) লিমিটেড এর সিইও খায়রুজ্জামান দৈনিক জাগরণকে বলেন, গত রোজার ঈদের তুলনায় এবার ঈদুল আজহায় বাংলাদেশে অনেক কম টাকা পাঠানো হয়েছে। অনেকে মনে করেছিলেন পাউন্ডের বিপরীতে টাকা বেড়ে যাবে কিন্তু উল্টো ব্রেক্সিটের কারণে পাউন্ডের মান কমে গেছে। তাই অনেকেই এবার দেশে টাকা পাঠান নাই।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ অনেক ভালো ছিল। তখন টাকার রেটও ছিল আশানুরূপ। কিন্তু হঠাৎ করে ব্রেক্সিট অস্থিরতার কারণে ব্রিটেনের মুদ্রার মূল্য কমে যাওয়াতেই তাদের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। 

খায়রুজ্জামান মনে করেন, একটা ভালো ব্রেক্সিট হলেই পাউন্ডের অবস্থান শক্তিশালী হয়ে যাবে, কিন্তু প্রশ্ন হলো ব্রেক্সিট নিয়ে পরিস্কার কোনও ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী অক্টোবরে  ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তা কেমন হবে তা পরিষ্কার নয়। ব্রেক্সিট হলেও বাজারটা স্থিতিশীল হতে ১ থেকে ২ বছর লাগতে পারে বলে মনে করছেন এ ব্যাংকার।

ইউকে থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর ব্যবসায় জড়িত পূবালী ব্যাংক এক্সচেঞ্জ (ইউকে) লিমিটেড এর হেড অব অপারেশন শের মাহমুদ দৈনিক জাগরণকে জানান, গত জুন মাসের তুলনায় তাদের লেনদেন কম হয়েছে। গত জুন মাসে ৩ মিলিয়নের ওপর টাকা বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন ব্রিটেন প্রবাসীরা। অথচ কোরবানির ঈদের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তারা মাত্র ২ মিলিয়ন টাকা বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। ব্রেক্সিট নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণেই পাউন্ডের দাম কমে গিয়ে টাকা পাঠানোর ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। 

শের মাহমুদও মনে করেন, ব্রেক্সিট সম্পন্ন না হওয়ার আগ পর্যন্ত অবস্থা এমনই থাকবে। টাকার রেট কমে যাওয়াতে আবার অনেকে ভিন্ন উপায়ে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন শের মাহমুদ।

তিনি বলেন, প্রবাসীরা বৈধপথে দেশে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন। যার কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাংলাদেশ হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণের রেমিটেন্স।

ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ করার আশঙ্কার জন্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে পাউন্ডের বড় রকমের পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যার প্রভাব পড়েছে ব্রিটেনে বসবাসকারী সকল দেশের অভিবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর। পাউন্ডের মান আবার আগের মত শক্তিশালী হয়ে উঠা একটি কার্যকরী ব্রেক্সিটের ওপরই নির্ভর করছে।

এসএমএম

আরও পড়ুন