• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ১২:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ১২:৫৫ পিএম

হংকং বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন, চীনের হুঁশিয়ারি

হংকং বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন, চীনের হুঁশিয়ারি

হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের সরকার বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনের পর সম্প্রতি বাতিল করা হয় চীনের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রত্যর্পণ বিল। তবে এই বাতিলের ঘোষণা স্থায়ীকরণের দাবিতে এখনও একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের উপস্থিতি বজায় রেখেছে বিক্ষোভকারীরা। এদিকে এই বিক্ষোভের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বীকৃত সংক্রান্ত বিল পাশের পর আভ্যন্তরিন ইস্যুতে নাক না গলাতে মার্কিন প্রশাসনের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) পরিষদের রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট সদস্যরা কণ্ঠভোটের মাধ্যমে পার্লামেন্টে বিলগুলো পাস করেন। ‘প্রটেক্ট হংকং অ্যাক্ট’, ‘হংকং ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট’, হংকংয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের স্বীকৃতি সংক্রান্ত বিলও অন্যতম।  রয়টার্স

মূলত এসবের মাধ্যমে হংকংয়ে জ্বলতে থাকা আগুনে এবার ঘি ঢালল যুক্তরাষ্ট্র, এমনটাই মন্তব্য বিশ্লেষকদের। যদিও এরই মধ্যে মার্কিন প্রশাসনের এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র জবাব দিয়েছে চীন। দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো ধরনের নাক না গলাতে ওয়াশিংটনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।

হংকংয়ের বর্তমান স্থিতিশীলতাকে এক রকম ঝুঁকির মুখে ফেলার অপচেষ্টা থেকেই মার্কিন আইনপ্রণেতারা এসব বিল পাস করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গ্যাং শুয়াং। তিনি বলেছেন, ‘নিজেদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও অগ্রগতির স্বার্থ রক্ষায় চীন কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কখনোই উচিত নয়।’

এ দিকে বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে সদ্য পাস হওয়া বিলগুলো আইনে পরিণত করতে এবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন। মূলত এরপরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষর কিংবা ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে প্রক্রিয়াটির সমাপ্তি ঘটবে।

অপর দিকে হংকংয়ের চীনপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম বুধবার (১৬ অক্টোবর) পার্লামেন্টে বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ প্রদানের সময় বিরোধীদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়েন। মূলত এর পরপরই তিনি সেই প্রশ্ন-উত্তর পর্ব তাৎক্ষণিক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, টানা কয়েক মাসের বিক্ষোভে বন্ধ থাকার পর এ দিন প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হয়। যেখানে ক্যারি ল্যামের হাতে সেই প্রত্যর্পণ বিলটি প্রত্যাহারের সুযোগ ছিল। যদিও তিনি তা না করেই অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য দিতে শুরু করেন।

মূলত এ সময় বিরোধীদের চিৎকার আর চেঁচামেচি পরিস্থিতি এক রকম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আর তখনই এদের মধ্যে অনেকে আবার পার্লামেন্টের টেবিলের ওপর চেপে বসেন। পরবর্তীতে তারা ‘পাঁচটি দাবি- একটিও কম নয়’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করলে ক্যারি ল্যাম তার বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।

এবার বিক্ষোভকারীদের ৫টি দাবি হল :- ১. বিক্ষোভকে দাঙ্গা হিসেবে না দেখা। ২. গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে মুক্তি দেওয়া। ৩. পুলিশি নৃশংসতার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করা। ৪. সর্বজনীন ভোটাধিকার বাস্তবায়ন। ৫. প্রত্যর্পণ বিল পুরোপুরি প্রত্যাহার করা।

প্রায় ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের অধীনে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অঞ্চলটি শক্তিশালী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক এই দিবসটির ২২ বছর পূর্তিতে গত ১ জুলাই আন্দোলনে সড়ক অবরোধ করেন গণতন্ত্রকামী লোকজন। প্রতি বছরের এই দিনে কর্মকর্তারা এক দিকে সরকারি ভবনগুলোতে উৎসব পালন করেন আর অপর দিকে গণতন্ত্রকামীরা অবস্থান নেন রাজপথে।

দীর্ঘদিন যাবত হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল থেকে অঞ্চলটিকে স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দেয় দেশটি। এর আগে গত মাসেও চীনপন্থি এক বিল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের এই দেশ।

আরও পড়ুন