• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০১৯, ০৪:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৩, ২০১৯, ০৭:৫৬ পিএম

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

ও আলোর পথযাত্রী...

ও আলোর পথযাত্রী...

আমাদের প্রবন্ধ সাহিত্যকে যিনি সহজপাঠ্য করেছেন, তিনি  অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। এই মহান প্রাবন্ধিকের লেখা দৈনিক সংবাদে পড়তাম, ‘গাছপাথর’ নামে তিনি লিখতেন। মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়তাম তার লেখা। তার লেখার গতি আছে, শক্তি আছে, তথ্য আছে তত্ত্ব আছে । ছোট ছোট বাক্যে সহজ শব্দে বিষয়ের ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা প্রবল। সহজবোধ্য লেখা। প্রবন্ধ যেমন কাঠখোট্টা বিষয়, স্যারের লেখা পড়ে তা কখনোই কারো মনে হবে না। সারা দেশের শিক্ষক ছাত্র/অছাত্র সবার কাছে তিনি এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত । সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ছাত্র-অছাত্র সবার শ্রদ্ধেয় স্যার । সবার স্যার হওয়ার যোগ্যতা তিনি অর্জন করেছেন নিজ গুণে।  প্রমথ চৌধুরী তার এক লেখায় লিখেছিলেন, 'শুধু মুখের কথাই জীবন্ত। যতদূর পারা যায়, যে ভাষায় কথা কই- সে ভাষায় লিখতে পারলেই লেখা প্রাণ পায়। আমাদের প্রধান চেষ্টার বিষয় হওয়া উচিত কথায় ও লেখায় ঐক্য রক্ষা করা, ঐক্য নষ্ট করা নয়। ভাষা মানুষের মুখ হতে কলমের মুখে আসে, কলমের মুখ হতে মানুষের মুখে নয়। উল্টোটা চেষ্টা করতে গেলে মুখে শুধু কালি পড়ে।' (কথার কথা : প্রবন্ধ সংগ্রহ)। এ কথা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জন্য পুরোপুরি প্রযোজ্য। এই বাঙালি মনীষী একাধারে শিক্ষাবিদ, লেখক, প্রাবন্ধিক, পরিবেশ সুরক্ষা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার বিষয়ক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব।

দীর্ঘকাল তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যাপনা করেছেন। কিন্তু তাঁর জানা-শোনার বৃত্ত শুধু ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি তারও অধিক বিস্তৃত। তাঁর সমাজ বিশ্লেষণ সবার চেয়ে আলাদা। সবাইকে আপন করে নেয়ার শক্তি তাঁর এতটাই প্রবল যে, তাঁর স্নেহ-ভালোবাসার সান্নিধ্য সবার প্রিয়। সবচেয়ে অবাক করা দিক হলো- একবার স্যারকে একটা সমস্যার কথা বললে তিনি সহজে তা ভোলেন না। পরিচয়ের পর স্যার কারো নাম ভুলে যান এমন ঘটনা আমার জানা নেই। দেশের কোনো আন্দোলন-গণসংগ্রাম থেকে স্যার নিজেকে কখনো দূরে রাখেননি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তিনি কখনোই সামান্য দূরেও সরে যাননি বা জেগে থেকে ঘুমাননি।এভাবেই তিনি নিজের মধ্যে একটি বিপ্লব করে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন। স্যারের লেখা বই ‘আপনজনের মুখ’ কখনোই একবারেপড়তে পারিনি।

একটা লেখা কত শক্তিশালী হতে পারে তা তাঁর লেখা পড়ে সহজেই বোঝা যায়। ‘বাঙালির তীয়তাবাদ’, শরৎচন্দ্র ওসামন্তবাদ (১৯৭৫), আমার পিতার মুখ (১৯৭৬), বঙ্কিমচন্দ্রের জমিদার ও কৃষক (১৯৭৬), বেকনের মৌমাছিরা (১৯৭৮), ‘বাঙালিকে কেবাঁচাবে?’, ‘কুমুর বন্ধন’ (১৯৭৭), শ্রেণী সময় ও সাহিত্য (১৯৯০) এসব বইয়ের মধ্যে তথ্য, উপাত্ত আর সঞ্চয় করে রাখার মতো সম্পদ রয়েছে অজস্র। লিখেই কাটে তার সময়। লিখেছেন উপন্যাস, নাটক, সাহিত্য আলোচনা। কিন্তু প্রবন্ধ সাহিত্য তার অস্থি-মজ্জায় মিশে আছে। বিশেষত প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে মানুষ যেমন অমুকে বলেছেন, তমুকে বলেছেন এসব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর লেখায় নেই। তিনি বরং তার মতো করে লেখার ব্যাখ্যা করেন। ‘ মস্কো থেকে ট্রেনে করে ফিরে এলো যখন আন্না পিটার্সবুর্গে, ক’দিন পরে, তখন ঝড় উঠেছিলো,বরফ পড়ছিলো, চারদিকে ছিলো শীতের রাতের অন্ধকার, আর সেই যে যাত্রা সে-যাত্রায় ট্রেনের শব্দ, ঝাঁকুনি যাত্রীদের ওঠানামা এবং বাইরের প্রচণ্ড ঝঞ্ঝা সবকিছুর সঙ্গে সঙ্গে  ভেতরে চলছিল আরেক গোলযোগ- আনার মনের মধ্যে ভীষণ অস্থিরতা, যেটিকে চাপতে চাইছে, কিন্তু পারছে না। আরো পারলো না যখন দেখা হয়ে গেল ট্রেনে তার সহযাত্রী ভ্রুনস্কির সঙ্গে। বাইরের বিশৃঙ্খলা ভেতরের বিশৃঙ্খলার সমান্তরালে চলে, চলতে চলতে ভেতরেপ্রবেশ করে যায়।

রেললাইন, ট্রেন, স্টেশন বারবার এসেছে এই উপন্যাসে। ট্রেনের চাকার নিচে যখন প্রাণ দিলো আন্না তখন সেই চাকা চাকাই থাকে, কিন্তু আবার এমনই দক্ষতা টলস্টয়ের যে, চাকা প্রতীক হয়ে ওঠে সামাজিক শক্তির। সামাজিক শক্তি অনেক নিষ্ঠুর। করুণা করে না, সে বিশেষভাবে এমন কাউকে আক্রমণ করে যে স্পর্শকাতর।’ (আন্না কারেনিনার আত্মহনন/ধ্রুপদী নায়িকাদের কয়েকজন, পৃষ্ঠা-৫১৭, প্রবন্ধসমগ্র-৭) সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী  টলস্টয়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘আন্না কারেনিনা’র যে ব্যাখ্যা করেছেন, তা একদম নিজের মতো করে। এত বড় ধ্রুপদী একটা উপন্যাসকে এভাবে উপস্থাপন খুবই দুরূহ। নিজের মতো করে তার এই যে সহজিয়া উপস্থাপনরীতির মধ্য দিয়ে এই মাপের একটা উপন্যাসকে জানা  বা জানানো কোন সহজ বিষয় নয়। এটাই সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর  প্রবন্ধের বিশেষত্ব। যত কঠিন বিষয় হোক তাকে তিনি এমনভাবে ব্যাখ্যা করেন যা সহজবোধ্য হয়ে ওঠে, যা  মানুষকে স্পর্শ করে। প্রাবন্ধিকদের রসবোধ নিয়ে কথা থেকেই যায়। সেখানেও সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীএকদম আলাদা। কারণ সাহিত্য-রস তার অন্তরে-বাইরে।তাই ছোট ছোট বাক্যে সহজ করে লেখা এবং সাহিত্য-রসে নিষিক্ত লেখা সহজপাঠ্য হয়ে ওঠে। সমাজতন্ত্র তার বিশ্বাসের জায়গা। তাইতার লেখার চরিত্রকে তিনি শ্রেণির দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করেন। আন্না কারেনিনা, হোমারের হেলেন, শকুন্তলার জয় বা পলাতকা এমা এসব চরিত্রগুলো বিশ্লেষণে তার সমাজ নিরীক্ষার দৃষ্টি, সমাজ রূপান্তরের বিষয়টির সঙ্গে শ্রেণির দৃষ্টিকোণ মিলে লেখাটি মননে ছায়াপাত করেএমনভাবে, যাতে তার লেখা সুখপাঠ্য হয়। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বিশাল মাপের মানুষ। শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞানে-গরিমায়, সততা-নিষ্ঠায় তিনি অনন্য। সবার শ্রদ্ধেয় এবং সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য মানুষের তালিকায় তিনি অনন্য। তার সমাজবীক্ষা, যুক্তি বিশ্লেষণ ক্ষমতা এত প্রখর, যাতে সহজে মানুষকে ছুঁতে পারে।  তার লেখা বিষয়ের সাথে অনেকের দ্বিমত থাকলেও যুক্তি নিয়ে দাঁড়ানো বেশ কষ্টসাধ্য। তার বর্ণনারীতি ও সহজবোধ্যতার প্রশ্নে আরেকটি উদাহরণ টানা যায়-

‘দস্তয়েভস্কির উপন্যাসে এক তরুণের কথা আছে। রাসকলনিকভ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। কিন্তু ছাত্রত্ব রক্ষা করতে পারেনি। বেতন দিতে পারছিলো না, খাবার-দাবারের পয়সা যে ছিলো, তাও নয়।জিনিসপত্র যা ছিলো একে এক বন্ধক দিচ্ছিলো এক বৃদ্ধাকে, যাকে সে হত্যা করতে চায়, ত্যক্তবিরক্ত হয়ে। এবং একজনকে নয়, হত্যা করে দু’জনকে। বিচারে তার নির্বাসন হয়েছিলো, সাইবেরিয়াতে। কিন্তু ইতিমধ্যে বন্ধুত্ব হয়েছে  তার চেয়েও দুর্দশাগ্রস্ত একটি মেয়ের সঙ্গে। যে মেয়েটি নিজের পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য দেহ বিক্রি করে থাকে। বাধ্য হয়ে সাইবেরিয়াতে গেছে, যুবকটির সঙ্গে মেয়েটিও গেছে। সেখানে গিয়ে পাস্পরিক লোবাসার মধ্য দিয়ে এক নবজীবন লাভ করেছে এই তরুণ। (সময় কার হাতে/ পুঁজিবাদের দুঃশাসন। পৃষ্ঠা-২২৩। প্রবন্ধসমগ্র- ৮)এ লেখার মধ্য দিয়েও বোঝা যায় দস্তয়েভস্কির উপন্যাসকে কি সহজে বর্ণনা করেছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী । যে উপন্যাসটি পড়ার আগেই সে সম্বন্ধে এক নতুন পাঠ তিনি উপস্থাপন করেন। যার মধ্য দিয়ে উপন্যাসটি পড়ার আগেই সে সম্বন্ধে একটা ধারণা গড়ে ওঠায় মূল পাঠকে প্রাঞ্জল করে তোলে। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এমন মাপের মনীষী যে তার লেখাই শুধু না, তার বক্তৃতাও খুবই আকর্ষণীয়।


যেভাবে লেখেন, বলেনও সেভাবে। নিঃসন্দেহে চমৎকার, আকর্ষণীয় বক্তৃতা দেন তিনি, যা শ্রোতাকে আকৃষ্ট করে, টেনে রাখে। রাজনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়কে তিনি বর্ণনা করেন শ্রেণির দৃষ্টিকোণ থেকে ।  অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও আকর্ষণীয় ভাষায় তার বক্তব্য তুলে ধরেন শ্রোতা ও পাঠকদের ।  মানবমুক্তির সংগ্রামে সমাজতন্ত্র অনিবার্য, এটাই তিনি প্রমাণ করেন তার বক্তব্যে। শ্রমিক শ্রেণি মেহনতী মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় অবিচল। পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াই তার লেখার উপজীব্য।  আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন আরো ত্বরান্বিত করা উচিত ছিলো। সে ব্যাপারে তার বক্তব্য স্পষ্ট।

“সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আমাদের গ্রামে গ্রামে গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে হবে। নাটক, গান, আলোচনা, পত্রিকা, দেয়াল পত্রিকা ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে, মানুষ সংঘবদ্ধ হবে এবং প্রতিরোধও গড়ে তুলতে পারবে। অর্থাৎ মানুষকে সামাজিক করার জন্য সাংস্কৃতিক আন্দোলন প্রয়োজন। রাষ্ট্র বাদ দিয়ে সমাজ বদলানো যাবে না। সমাজ বদলাতে হলে রাষ্ট্রকেও বদলাতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে মানুষের সঙ্গে মানুষের বৈষম্য কমবে এবং মানুষের অধিকার ও সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটবে, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হবে, স্থানীয় সরকার স্বাধীনভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা পরিচালিত হবে, তারাই নিজেদের উন্নয়নে পরিকল্পনা ও অর্থ সংগ্রহ করবে। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মাতৃভাষার চর্চা হবে এবং তার মধ্যে আন্তর্জাতিকতাও থাকবে। এই মাতৃভাষার চর্চা আমাদের সংকীর্ণ করবে না। এর মাধ্যমে আমরা
আন্তর্জাতিকতাকে ধারণ করব। সারা বিশ্বে যত অর্জন আছে, যত গৌরব আছে, যত কৃতি আছে সবগুলোর অংশীদার হবো। তবে বিশ্বায়ন যাকে বলে, তার অধীনে আমরা চলে যাব না। কিন্তু তা আমরা এখনও করতে পারি নি।” (আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়)

 

 এই বরেণ্য শিক্ষাবিদ দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা নিযে খুবই চিন্তিত তিনি শিক্ষা প্রসঙ্গে  তিনি কত্ষুব আক্ষেপ করে বলেছেন , আমরা এখনও আমাদের শিক্ষার উপযুক্ত কাঠামোই দাঁড় করাতে পারিনি। তা সেটা প্রাথমিক স্তরে হোক আর প্রাইমারি স্তরেই হোক। শিক্ষার সর্বনাশ ঘটেছে অতিরিক্ত পাবলিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে।  ‘শিক্ষা এখন পুঁজিনির্ভর। রাষ্ট্র, সমাজ পুঁজির ওপর দায় দিতেই অভ্যস্ত। শিক্ষাকে উপলক্ষ করে কত রকমের ব্যবসা! শত শত কোচিং ব্যবসা গড়ে উঠেছে। কোচিং করে শিক্ষার মূলে যাওয়া সম্ভব না। প্রতিষ্ঠানেরশিক্ষকরা ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিংয়ে গিয়ে পড়াচ্ছেন। রীতিমত ফাঁদ পেতে এই ব্যবসা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই শিক্ষার্থীরা চাকরির পড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। তাদের মধ্যে কোনো গবেষণার প্রবণতা নেই, সৃজনশীলতা নেই। নেই সাংস্কৃতিক চেতনার মধ্যে দিয়ে শিক্ষা অর্জনের প্রবণতা। আবার চাকরির পড়া পড়েও যখন লাখ লাখ শিক্ষার্থী বেকার হয়ে পড়ছেন, তখন অন্যরাও শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তার এই চিন্তাকে তিনি একটি আন্দোলনে রূপ দিতে চান।

আন্দোলন -সংগ্রামে তার বিমুখতা  নেই। তার বক্তৃতা আলোচনায় বার বার সে কথাই প্রতিভাত হয়। স্যারের বয়স বাড়ছে ইদানিং বোঝা যায় । সম্প্রতি স্যার প্রগতি লেখক সঙঘের জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন। দীর্ঘ বক্তব্য। হলরুমটা পিন পতনের শব্দ নিয়ে শুনছিলো স্যারের কথা। তিনি বলছিলে লেখক আর লেখা এক নয়। ব্যক্তি লেখক বিভিন্ন চিরিত্রের হন কিন্ত লেখার সময় তিনি তারি প্রকৃত বিশ্বাসের কথাটি লেখেন। টলস্টয়, দস্তয়েভস্কি বেকন, সেক্সপিয়ারের একাধিক লেখার মূল বক্তব্য তিনি তুলে ধরেন তুলে ধরেন তাদের জীবনাচারও। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ভেতরে এক তারুণ্যের বসবাস। তরণি রা গেলে তিনি খুশী হন। বহুকথা জানতে চান। নিজেও বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসেন প্রতিদিন। বের করেন শিল্প-সাহিত্যনির্ভর জার্নাল ‘নতুন দিগন্ত’। বিকালে হাঁটেন নিয়ম করে। সেই আকাশী রঙের জামা আর কালো প্যান্ট। স্যার হাঁটেন আমি দেখি তার পরিব্রাজক পা দুখানা ছুটছে। গতি ক্রমশ কমতে থাকে স্যার বাসায় ফেরেন,অন্ধকার নেমে আসে। স্যার বাসায় যান। আমার মনে হয়,কতদিন স্যারকে এভাবে হাঁটতে দেখবো? 
এই মনীষীর জন্মদিনে আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য ।

/ডিজি