জাগো বিদ্রোহী
দুর্গম গিরি, কান্তার মরু
কে করিবে আজি পার?
জাগো মহাকবি, বিদ্রোহী রবি
কাণ্ডারী দরকার।
কার আশে সেথা হাঁক দিয়েছিলে
কাণ্ডারী কোন জন?
কালের শোষনে ভীরু প্রাণ সব-
ভগ্ন হৃদয়, মন।
কার হাতে রবে নায়ের লগি
বাদাম টানিবে কে?
ঝংকার ভার হুঙ্কার করে,
বিদ্রোহী সাড়া দে!
দুর্বল হৃদ, বেসামাল সব-
দামাল যুবার দল,
নির্ভীক প্রাণে বলিবে কে গানে
চলরে চলরে চল।
ভরসা তোমার ধরাশায়ী দ্রোহি,
অবনত সব শির,
কার হাত ধরি পার করি তরী,
কে হব কালের বীর?
ধ্বংসের তরে ছোটে কমবখত
মিথ্যার অভিলাশে,
আজি পাইনা যে সবে, প্রাণ ভরে রবে
সৃষ্টির উল্লাসে।
উদরে অন্ন নিজ নিজ পুরে
অপরে অন্নহীন,
লাজহীন হয়ে বাঁচিছে সবাই
কাটাইছে নিশি-দিন।
সাম্যবাদীরা বিবাদী সকলে
ধর্ম, গোত্রো পরে,
অসুর রূপেতে অবতার কত
সৃষ্টির নাশ করে।
মুটে মজুরের গাঁইতি, কোদালে-
শাবলে কাজের ভার,
জোটে না তবুও অন্ন, মেটে না,
আকালের হাহাকার।
সত্ত্বা, সত্য, সাধন, শাষন
ধূলায় লুটায় হায়,
কাণ্ডারী কবি তুমিহীনে
কে বা সাম্যের গান গায়?
সত্য মানব, সত্য এ প্রাণ
তোমার আশায় বসি,
ফুৎকার দাও, চিৎকার দাও
বাজাও বিষের বাঁশী।
খোদার আরশে শত হাহাকার
দেয়না কি তব নাড়া?
বাবরী চুলের মাতাল ঝাঁকনে
জাগো হে দ্যুতির তারা।
জাগো ভৈরবী, প্রলয় স্বভাবী
উন্নত মম শির,
কাণ্ডারী হয়ে জাগো বিদ্রোহী
লয়ে যাও তরী তীর।
দুঃখ বিলাসী তুমিই তো সে
শিখড় হিমাদ্রির।
উৎসর্গ : পরম পুজ্য দ্রোহরাজ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল স্মরণে।