• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১, ০৮:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১, ০৮:৫৪ পিএম

উত্তরাধিকার

উত্তরাধিকার

আমরা বেঁচেছিলাম আমাদের সময়ে
তারপর বেঁচে থাকার জন্য মরে যেতে চেয়েছি
হয়নি মরা, বেঁচে আছি শূন্যতার প্রবল
বিস্তারে, একটি শালিক এভাবেই মরতে মরতে
বেঁচে গেল একদিন— 
সে আমাদের পাড়াগাঁর দিনগুলোর কথা, দু’যুগ
আগে; এরমধ্যে কতো রঙ বিবর্ণ হলো
কতো দ্রাক্ষারস বিরহের আকাশ দিল
উপহার; সেসব আমরা মনে রাখিনি
আমরা মনে রেখেছি কীভাবে আমরা মরতে
মরতে বেঁচে গেছি;

দু’ যুগের ব্যবধানে তুমি মা হয়েছো
আমি এসবের কিছুই হতে চাইনি
পানশালায় থেকে যেতে চেয়েছি মধ্যরাতের 
আঁধারকে তোমার চুলের বিন্যাস মনে করে
তারপর কাঁদতে চেয়েছি খুব, যেমন করে কাঁদে
একজন স্বজন অপর স্বজনের চিরস্থায়ী চলে যাওয়ায়;

হায়! এতোকাল পর এসে অবাক বিস্ময়ে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখি—
এসবের কিছু হতে না চেয়েও
আমিও বাবা হয়েছি, সেই কবে বাবা হয়েছি
দেয়ালে টানানো আছে আমার উত্তরাধিকারের ছবি
অথচ দেখো, দু’যুগ আগে এমনি, হ্যাঁ অবিকল
এমনি দেয়াল ছিল আমাদের চোখের ’পরে
পার্থক্য এই : সে দেয়ালে নক্ষত্রের মতো ঝুলে ছিল লেনিন ও ক্রপস্কায়ারের ছবি— 
আন্ডার-গ্রাউন্ডের দিন রাত্রির আধো আলো আধো অন্ধকার চোখে নিয়ে বিবর্ণ পাখির ডানা ঝাপটানো শুনতে শুনতে তুমি তাকিয়ে থাকতে লেনিনের দিকে
আমি ক্রপস্কায়ারের—
আসন্ন বিপ্লবে তুমি আমার ছায়ায়
লেনিনকে দেখে, আমি তোমার ছায়ায় ক্রপস্কায়ার 
আমরা ভাবতাম আমাদের গোত্রের নাম ‘শ্রেণিবিপ্লব’ 
আমাদের উত্তরাধিকারের নাম ‘সাম্যবাদ’ 
বিপ্লবের মধ্যাহ্ন সূর্যে আমরা দেখতাম তেজি ধাবমান ঘোড়া
সংসারের নকশি কাঁথা বিছানো দেখতে পেতাম 
‘রাষ্ট্র ও বিপ্লব’-এর পাতায় পাতায়। 

হায়! দু’ যুগ পরে এসে দেখি ভিন্ন ভিন্ন আঙিনায় 
তুমি মা হয়েছো, আমি হয়েছি বাবা
আমাদের উত্তরাধিকার রক্ত-মাংসের,
মানুষের নামে তাদের নাম!