বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) এর মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলা চলাকালীন মারামারির ঘটনায় টুর্নামেন্টটি স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১০ এপ্রিল) এ তথ্য জানান, বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মামুন মিয়া।
তিনি বলেন, ‘এই অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হলো। এই টুর্নামেন্টের বিষয়ে পরবর্তীতে মিটিং করে বাকি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘খেলার মাঠে ফাউলের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে রেফারির সিদ্ধান্তের পরও মারামারির ঘটনা দুঃখজনক। এর দায় ভার উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।’
এর আগে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় মাঠে অনুষ্ঠিত জাবি ও ইবির মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলার দ্বিতীয়ার্ধে জাবির এক খেলোয়াড়ের ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে ফাউল করার কারণে দর্শকরা উত্তেজিত হলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ইবির এক শিক্ষকসহ নয়জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুরু থেকেই আক্রমণাত্মকভাবে খেলছিল উভয় দল। প্রথমার্ধের খেলায় ইবি দলের অধিনায়ক জাবির এক খেলোয়াড়কে হাতের ইশারায় গুলি করার হুমকি দেন। দ্বিতীয়ার্ধের খেলার ১১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে জাবির খেলোয়াড় অন্তরকে ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে ফাউল করে ইবি হ্যান্ডবল দলের অধিনায়ক আশিক খান। পরে রেফারি তাকে দুই মিনিটনের জন্য মাঠের বাইরে থাকার নির্দেশ দেন। এর আগেই দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে মাঠে প্রবেশ করে এবং ইবির খেলোয়াড়দের উপর আক্রমণ চালায়। দর্শকদের থামাতে গিয়ে ইবির সাবেক প্রক্টর মাহবুবুর রহমান ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক সোহেলও আহত হন। পরে আহতদেরকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
জাবির এক খেলোয়াড় অভিযোগ করে বলেন, ইবির হ্যান্ডবল দলের অধিনায়ক আশিক খান খেলা চলাকালীন সময়ে জাবির হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড় মংকে গুলি করার হুমকি দেয়। এ ছাড়াও জাতীয় দলে খেলা জাবির হ্যান্ডবল দলের সদস্য আরাফকে হুমকি দিয়ে আশিক বলেন, ‘জাবির বাহিরে যেখানেই খেলতে যাবি সেখানেই তোকে মেরে ফেলবো।’
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আশিক খান বলেন, ‘মাঠে এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। যে ফাউলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির সূত্রপাত হয়েছে তার জন্য রেফারি আমাকে শাস্তিও দিয়েছেন। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে প্রথমে আমাকে ও পরবর্তীতে দলের অন্য খেলোয়াড়দের মারধর করে।’
ইবির সাবেক প্রক্টর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘খেলার শুরু থেকেই জাবির দর্শকরা আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিক চাপের মধ্যে রেখেছে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা চলাকালে হঠাৎ দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে লাঠি ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারতে শুরু করে। এতে আমাদের নয়জন খেলোয়াড় আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘আমরা লজ্জিত। লজ্জা প্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়া ছাড়া এখন আর আমাদের কিছুই বলার নেই।’
এসএইচএস
মারামারির ঘটনাটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে :