• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৫:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১০, ২০১৯, ০৫:১৪ পিএম

ইতিহাস গড়েই শেষ হলো বাংলাদেশের এবারের এসএ গেমস

ইতিহাস গড়েই শেষ হলো বাংলাদেশের এবারের এসএ গেমস

এসএ গেমসে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোশিয়েশন কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন ‘ডাবল ডিজিট স্বর্ণজয়ের’। সেই প্রত্যাশা তো পূরণ হয়েছেই। নেপালে অনুষ্ঠিত এবারের এসএ গেমসে বাংলাদেশ পেয়েছে মোট ১৯ স্বর্ণ। কেবল আর্চাররাই জিতেছেন ১০ স্বর্ণ। 

প্রথম দিনে কারাতেতে স্বর্ণ জিতেন দিপু চাকমা। পরদিন জিতে যান আরও তিন জন। তাতে আশা নিয়ে বসেন অনেকে। দিন যায়, স্বর্ণ আর আসে না। এমনভাবে কাটে তিন দিন। অবশেষে অপেক্ষা ফুরোয় চতুর্থ দিনে এসে। যার কান্না ইতিহাস হয়ে গেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। সেই মাবিয়া আক্তার সীমান্তের হাত ধরে। সেদিন আসে আরও দুই। সোনালি মেডেলের সংখ্যাটা তখন সাত। 

এরপরের পুরোটা আর্চারদের ঘিরে। এক-দুই করে স্বর্ণের সংখ্যা বাড়ে, সঙ্গে প্রতীক্ষা। জিততে জিততে দশ ইভেন্টের সবগুলোই জিতে যান বাংলাদেশের আর্চাররা। সঙ্গে সামিল হন ক্রিকেটের মেয়েরা। ব্যস, এবার সেটা হয়ে যায় ১৮। ততক্ষণে ছুঁয়ে ফেলা গেছে আমাদের সর্বোচ্চ স্বর্ণজয়ের রেকর্ড।  

আজ থেকে প্রায় এক দশক আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে জেতা গিয়েছিল ১৮ স্বর্ণ। সেটাই এখনো আমাদের সর্বোচ্চ অর্জন। দেশের বাইরে তো সেই ‘৯৫ সালের মাদ্রাজ গেমসের সাত স্বর্ণই সর্বোচ্চ। তবে কী বাংলাদেশ ছাড়িয়ে যাবে ২০১০ এসএ গেমসকে? রোমান সানা যখন আর্চারিতে বাংলাদেশের পক্ষে ১৮তম স্বর্ণ জেতেন। সেই সময়ে কৃত্তিপুরে টস করছেন ক্রিকেটের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। যেখানে একটা সোনা তো প্রত্যাশিত বহু আগে থেকেই। 

হলোও তাই। শ্রীলঙ্কা অনুর্ধ্ব-২৩ দলকে ৭ উইকেটে হারিয়ে স্বর্ণ জিতলো ছেলেরা। গড়ে ফেললো ইতিহাস। গেমস শেষের একদিন আগেই নেপালের সোনালি সুবাতাস একে একে এলো ১৯ বার। তাতে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণজয়ের রেকর্ডটাও হয়ে যায়।

কাঠমান্ডুর সাতদোবাদো কমপ্লেক্সে পুমসে ২৯-ঊর্ধ্ব ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদক জেতেন দিপু। এসএ গেমসের এবারের ত্রয়োদশ আসরে দ্বিতীয় স্বর্ণপদক জেতেন হুমায়রা আক্তার অন্তরা। মেয়েদের কারাতে কুমিতে অনূর্ধ্ব-৬১ কেজির ফাইনালে নেপালের আনু গুরংকে ৫-২ পয়েন্টে হারিয়ে দেশকে সোনার পদক উপহার দেন তিনি।

ছেলেদের কারাতে ইভেন্টে ৬০ কেজি ওজন শ্রেণিতে ফাইনালে পাকিস্তানের মোহাম্মদ জাফরকে ৭-৩ পয়েন্টে হারিয়ে সোনার পদক জেতেন আল-আমিন।

নারীদের কুমিতে অনূর্ধ্ব-৫৫ কেজিতে পাকিস্তানের কাউসার সানাকে ৪-৩ পয়েন্টে হারিয়ে স্বর্ণপদক জেতেন মারজান আক্তার প্রিয়া।

ভারোত্তোলনে মেয়েদের ৭৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে দেশের হয় পঞ্চম স্বর্ণপদক জেতেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত।

এরপর বাংলাদেশকে ষষ্ঠ স্বর্ণপদক উপহার দেন জিয়ারুল ইসলাম। তিনি ভারোত্তোলনে ৯৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্বর্ণ জেতেন।

বাংলাদেশকে সপ্তম স্বর্ণপদক উপহার দিয়েছেন ফাতেমা মুজিব। তিনি ফেন্সিংয়ে ব্যক্তিগত সেভার ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছেন এই অ্যাথলেট।  

এবারই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ফেন্সিং। কাঠমান্ডুর নয়াবাজার কৃতিপুরে শনিবার এককে ফাতেমাও পেলেন প্রথম সোনা জয়ের স্বাদ। এরপর আর্চারিতে ১০ স্বর্ণের সবগুলোই জিতে নেয় বাংলাদেশ। বাকি দুই স্বর্ণ আসে ক্রিকেটের ছেলে ও মেয়েদের থেকে। 

এসএ গেমসের এবারের আসর শেষে বাংলাদেশের সর্বমোট স্বর্ণ ১৯ টি। ৩০ রৌপ্য আর ৭৮ ব্রোঞ্চসহ বাংলাদেশের মোট পদকের সংখ্যা ১২৭টি। সাত দেশের মধ্যে পদকজয়ের তালিকায় বাংলাদেশ আছে পঞ্চম স্থানে। বাংলাদেশের নিচে মালদ্বীপ ও ভুটান। আর সবার উপরে রয়েছে ভারত।