• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২০, ১০:১৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৮, ২০২০, ১০:১৭ এএম

বার্সেলোনা সভাপতি বার্তোমেউর পদত্যাগ

বার্সেলোনা সভাপতি বার্তোমেউর পদত্যাগ

সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত নানামুখী চাপে জর্জরিত এবং তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসির সঙ্গে টানাপোড়েনসহ নানা ইস্যুতে অভিযুক্ত স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার সভাপতি জোসে মারিয়া বার্তোমেউ পদত্যাগ করেছেন।

স্পেনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বোর্ড মিটিংয়ের পর তিনি পদত্যাগ করেন। তার সঙ্গে বোর্ড পরিচালকরাও পদত্যাগ করেন। বার্সেলোনার অফিশিয়াল টুইটারে বার্তেমেউয়ের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন সভাপতি নিয়োগে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে নতুন নির্বাহী বোর্ড নিয়োগের আগে ক্লাবের আপাতকালীন দৈনন্দিন কাজ দেখভালের জন্য একটি ম্যানেজমেন্ট বোর্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে ইএসপিএনএফসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এক মৌসুমে দুইবার কোচ বদল, লিওনেল মেসির  ট্রান্সফার ঠেকিয়ে দেয়া, শিরোপাবিহীন ২০১৯-২০ মৌসুম, অদূরদর্শী ট্রান্সফার, ক্লাবের বেসামাল অর্থনীতি, অভ্যন্তরীণ সমস্যাসহ নানা জটিলতায় গত কয়েক বছরে তিনি বার্সেলোনার বিষ ফোঁড়ায় পরিণত হন।

মেসি ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা দিলে বার্তামেউর বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন বার্সা ভক্তরা। মূলত মেসির করা কড়া সমালোচনাই নাড়িয়ে দিয়েছিল সভাপতির চেয়ার। সমালোচনা করেছিলেন ক্লাবের অভিজ্ঞ ফুটবলার জেরার্ড পিকেও।

২০১৪ সালে ক্লাব সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া বার্তোমেউয়ের প্রতি খেলোয়াড় ও সমর্থকদের অসন্তোষ আগেই দানা বেঁধেছিল। গত মাসে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে লজ্জাজনক ভাবে ৮-২ গোলের ব্যবধানে হারের পর গোটা বার্সেলোনা ক্লাবে এক অস্থিরতা শুরু হয়।  কোচ তিতে সেতিয়ানকে বরখাস্ত করা হয়। কোচ হিসেবে উড়িয়ে আনা হয় বার্সার সাবেক খেলোয়াড় রোনাল্ড কোম্যানকে। এরইমধ্যে ক্লাবের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির ক্লাব ছাড়তে চাওয়া নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।

ক্লাবের এমন দৈন্য দশার পর প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর বোর্ডের প্রতি অনাস্থা ভোটের আয়োজন করে এক দল বোর্ড সদস্য। যেখানে প্রায়  ২০ হাজার ৬৮৭টি সদস্য স্বাক্ষর জমা দিয়ে তার অপসারণ চায়। তবে সেটির শেষ দেখার অপেক্ষা করলেন না বার্তোমেউ।

যদিও সম্প্রতি বিপুল সংখ্যক স্বাক্ষরের পরেও নিজে থেকে কোনোভাবেই পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছিলেন বার্তামেউ। তিনি বলেছিলেন, আমাদের বোর্ড এভাবেই কাজ করে যাবে। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দল তৈরি করা।

গত সোমবার পদত্যাগের সম্ভাবনা ফের উড়িয়ে দেন বার্তেমেউ। স্পষ্টভাবে তিনি বলেন, পদত্যাগ করার মতো কোনো কারণই ঘটেনি এখানে। প্রশাসকের হাতে ক্লাবটি ছেড়ে দেয়া ঠিক হবে না। মেসির ঘটনার কারণে আমার কখনও মনে হয়নি যে, পদত্যাগ করব। এখনও সরে দাঁড়ানোর কোনো কারণ দেখছি না। বার্সেলোনার জন্য, ক্লাবের জন্য, দলের জন্য মেসিকে ধরে রাখা এবং এখানেই তার অবসর নেয়া নিশ্চিত করার চেষ্টাই ছিল সেরা সিদ্ধান্ত। তরুণ খেলোয়াড় ও মেসির মতো অভিজ্ঞদের মিশেলে নতুন প্রকল্প দারুণ হবে। 

তবে একদিন যেতে না যেতেই ক্লাবের সব পরিচালকদের নিয়ে পদত্যাগ করলেন বার্তামেউ। আগামী রোববার ও সোমবার অনাস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই হয়তো নিজের পরিণতি বুঝতে পেরে সরে দাঁড়ালেন কাতালান ভক্তদের কাছে খলনায়ক বনে যাওয়া আলোচিত এই মানুষটি। আস্থা ভোটে বার্সেলোনার দেড় লাখ সদস্য ভোট দিতেন। এর মধ্যে ৬৬.৫ শতাংশ ভোট তার বিপরীতে গেলে মেয়াদ থাকতেই সরে দাঁড়ানো লাগত এই স্প্যানিয়ার্ডের।

এসইউ