• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২১, ১১:৪৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৬, ২০২১, ১১:৪৬ পিএম

প্লেয়ার টু ওয়াচ: টি-২০ বিশ্বকাপ

প্লেয়ার টু ওয়াচ: টি-২০ বিশ্বকাপ

সাফায়েত হোসেন 

আজ টি-২০ বিশ্বকাপের আসরের পর্দা উঠবে।এই আসরে খেলছে ১৬ টিম। ১৬ টিমে ১৬ জন এমন প্লেয়ার আছেন যারা ম্যাচের রঙ পালটে দিতে পারেন যেকোন সময় আজ কথা হবে তাদের নিয়ে।


১/ বাংলাদেশ 

সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় বলা হয় যাকে।টি-২০ ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২১ খেলতে ইউএইতে আছেন। ফ্যানরা অপেক্ষা করছেন কখন তিনি ম্যাচ খেলতে নামবেন।যার পারফর্ম মানেই তার সাফল্যের আরেক পালক যুক্ত হওয়া।এবার ওয়ার্ল্ডকাপ শুরুর আগে তিনি ব্যাট হাতে ৫৬৭ রান করেছেন।তুলে নিয়েছেন ১২৮ স্ট্রাইক রেটে।বোলিং এ তুলে নিয়েছেন ৩০ উইকেট।রান দিয়েছেন কেবল ৬.৬৫ ওভার প্রতি।কতটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং সাকিবের।টি-২০ তে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন লাসিথ মালিংগা।তিনি নিয়েছেন ১০৭ উইকেট। ১০৬ উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান।সবাইকে খুব দ্রুতই ছাড়িয়ে যাবেন।
সাকিব কি এতেই সন্তস্ট হবে! দুবাইয়ে এত বায়োবাবল রুল ফলো করে ম্যাচ খেলা চাট্টিখানি কথা নয়।দেশের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন যেটা করেছিলেন ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে। টি-২০ বিশ্বকাপে ক্যাচ নিয়েছেন মোট সাতটি।শুধুই তাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোস্টার বয় বলা হয়না।তিনি এখন ব্যস্ত আছেন আইপিএল নিয়ে।সেখানেও তিনি তার পারফরম্যান্স এর বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছেন। (যখন এই লেখাটি লেখা হচ্ছে)
আমাদের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বা মেসি নেই আমাদের আশা ভরসার জায়গাটা সাকিব আল হাসান জুড়েই যার ফেসবুক ফলোয়ার পনের মিলিয়ন ক্রস করেছে কিছুদিন আগেই।নেটিজেনদের ভালবাসার বড় জায়গা করে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান।

২/ ইংল্যান্ড

৮ ম্যাচে ইংল্যান্ডের হয়ে ১৬৭.৪৭ স্ট্রাইক রেটে ২০৬ রান করে লিয়াম লিভিংস্টোন প্লেয়ার টু ওয়াচ হিসেবে আছে।কিছুদিন আগেই ইংল্যান্ডের হয়ে টি-২০ তে ফাস্টেস্ট ফিফটি  এবং ফাস্টেস্ট সেঞ্চুরি করেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া দ্যা হান্ড্রেড এর প্রথম আসরে মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার হিসেবে মনোনীত হন নিজের পারফরম্যান্স এর জন্য।যেভাবে তিনি এগুচ্ছেন এবারের ওয়ার্ল্ডকাপ লিভিংস্টোনময় হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

৩/ আফগানিস্তান 

প্লেয়ার টু ওয়াচ এ আফগানদের অনেকেই ছিল রাশিদ, নবীর মতো প্লেয়ার।কিন্তু আমার মতে মুজিবুর রহমানের দিকে সবার চোখ থাকবে।১৯ টি টি-২০ ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচে তুলে নিয়েছেন ২৫ টি উইকেট। তার লেগস্পিন ভেল্কিবাজি দেখা গিয়েছে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বিগব্যাশেও।৮ ম্যাচে সেখানে ১৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন।রান খরচের বেলায় সে অনেক কৃপণতা দেখিয়েছেন।বল কোন্ট্রোলিং এর ক্ষেত্রে মুজিব বেশ পটু হয়েছেন।


৪/ পাপুয়া নিউগিনি

টনি উড়া প্লেয়ার টু ওয়াচ হিসেবে আছে।তার স্ট্যাটস তার পক্ষেই কথা বলে।২৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৭৫৪ রান করেন ১৪১.৪৬ স্ট্রাইক রেটে।যেকোন দিন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান  বিধ্বংসী হতে পারে অপজিশন এর জন্য।পপুয়া নিউগিনির বড় প্লেয়ার হচ্ছেন তিনি।

৫/ শ্রীলঙ্কা 

ওয়ানিন্দু হাসারাংগা হচ্ছেন বেশ বিধ্বংসী প্লেয়ার যেকোন টিমের জন্য।তাই শ্রীলংকান এই প্লেয়ার আমার কাছে প্লেয়ার টু ওয়াচ হিসেবে আছেন। তার স্ট্যাটস যদি বলি মাত্র ২৫ টি টি-২০ ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচে ৩৬ টি উইকেট তুলে নিয়েছেন মাত্র ৬.৫৭ ইকোনোমি রেটে।আইসিসি টি-২০ বোলারদের র‍্যাংকিং এ তিনি দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছেন।এ থেকেই বোঝা যায় বোলার হিসেবে তিনি কতটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে টি-২০ ম্যাচে। ব্যাট হাতেও তিনি বড় শট খেলতে পারেন।যা তার ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ১৩০+ দেখলেই বোঝা যায় ডমেস্টিক ক্রিকেটে।যেটা যেকোন ম্যাচের মোমেন্টাম চেঞ্জ করতে সক্ষম।

৬/ আয়ারল্যান্ড 

হ্যারি টেক্টর হচ্ছেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এই দলের।সব ম্যাচে তাকে না দেখা গেলেও প্রেশার মোমেন্ট সে ভালমতো হ্যান্ডেল করতে পারেন।২৫ ম্যাচের ক্যারিয়ারে করেছেন ৪২৭ রান ১২৭.৮৬ স্ট্রাইক রেটে। পল স্টার্লিং বা কেভিন ও ব্রায়ানের নিচে তিনি ঢাকা পরতে পারেন কিন্তু লম্বা সময় টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে হ্যারিকেও তার ঝলক দেখাতে হবে সবার সাথে।

৭/ অস্ট্রেলিয়া 

মিচেল মার্শ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিচিত নাম।কিন্তু অস্ট্রেলিয়া টিমে এত এত প্লেয়ার থাকতে তার নাম নিচ্ছি কারন তার রিসেন্ট পারফর্মেন্স চোখে পরার মতই।ব্যাটসম্যান হিসেবে ছাড়াও বোলিংয়ে তার পেস বোলিং অস্ট্রেলিয়ার কাজে আসতে পারে।পুরো টুর্নামেন্টে তিনি ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে থাকতে পারেন।মিচেল মার্শ তাই থাকছে আমার প্লেয়ার টু ওয়াচ এ।

৮/  ওমান

বিলাল খান হচ্ছেন আমার জন্য ওমানের প্লেয়ার টু ওয়াচ।এই বামহাতী সিমার খুব বিদ্ধংসী না হলেও তার ইদানিং পারফরম্যান্স চোখে পরার মত।যেমন নামিবিয়ার বিপক্ষে ৪/১৯ স্পেল চোখে পরার মত ছিল। ৩৫ ম্যাচে তিনি ৫১ উইকেট তুলে নিয়েছেন ৬.৭৮ ইকোনমি রেটে।তার বোলিং তাই বিশ্বকাপে যেকোন দলের ঘায়েল হওয়ার কারন হতে পারে।

৯/ দক্ষিণ আফ্রিকা 

এই টিমের তাবারেজ শামসি নামে এক বোলার আছেন।যার পারফরম্যান্স এ এই দল অনেক দূর যেতে পারবে।সবাই এই বোলারকে সাধারণভাবে নিচ্ছে। কিন্তু এই বোলারই র‍্যাংকিং এ সবার উপরে অবস্থান করছেন।৪২ ম্যাচে নিয়েছেন ৪৯ উইকেট কিন্তু ইকোনমি রেট ৬.৭৯ মাত্র।যেটা ম্যাচের মোমেন্টাম চেঞ্জ করে দিতে পারে।দক্ষিন আফ্রিকার টুর্নামেন্টে বহুদুর যেতে হলে তার পারফর্মেন্স লাগবেই।

১০/ স্কটল্যান্ড

স্কটিশ টিমের মার্ক ওয়াট হবে আমার জন্য তাদের প্লেয়ার টু ওয়াচ।তার ইকোনোমি রেট কিছুটা হাই হলেও অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে তিনি বোলিং র‍্যাংকিং এ ১৫ তে আছেন। ৩৯ ম্যাচ খেলে তিনি ৪৯ উইকেট নিয়েছেন এই লেফট আর্মের এই অফ স্পিনার। স্কটিশরা সামনে এগুতে চাইলে মার্ক ওয়াটের পারফর্মেন্স চাইবে।
 

১১/ নিউজিল্যান্ড

এই টি-২০ বিশ্বকাপে ইশ সোধি হবে নিউজিল্যান্ডে প্লেয়ার টু ওয়াচ। এই স্পিনার রাশিদ, জাম্পার মত টার্নার নন কিন্তু এই লেগ স্পিনার উইকেট টেকিং চান্স ক্রিয়েট করতে পারেন রিস্ক নিয়ে যেটা দরকার টি-২০ তে।সে বেশ এটাকিং বোলার।৫৭ ম্যাচে তিনি ৭৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন।ইকোনমি ৮.০৭। তিনি হতে পারেন নিউজিল্যান্ডের জন্য ব্ল্যাক হর্স।

১২/ নামিবিয়া

গেরহার্ড এরাসমাস হচ্ছেন নামিবিয়ান টিমের প্লেয়ার টু ওয়াচ।কারন ২২ ম্যাচে সে ৫২২ রান করেন ১৪০+ স্ট্রাইক রেটে।যেটা অত্যন্ত বিধ্বংসী ব্যাটিং। এছাড়াও তিনি বোলিং করতে পারেন।যেটা এক্সট্রা পাওয়া হলেও ১৪০+ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা যে কোন ব্যাটসম্যান থেকে বোলার সাবধানী থাকবে।নামিবিয়া টিম কতদুর যাবে তার চেয়ে এরাসমাসের ব্যাটিংটা এক্সাইটিং হবে।  

১৩/ পাকিস্তান

বিশ্বসেরাদের একজন পাকিস্তান টিমকে লিড দেবে।তিনি আর কেউ নন তিনি বাবর আজম।তিনি টি-২০ ভার্শনে সবচেয়ে দ্রুত ৭০০০ রানের মাইলস্টোন পার করেন।নিজের দলকে নিয়ে আরো অনেক সামনে যেতে চাইবেন টি-২০ বিশ্বকাপের এই আসরে।৬১ ম্যাচে ১৩০+ স্ট্রাইক রেটে ২২০৪ রান করেছেন।র‍্যাংকিং এ ২ এ অবস্থান করছেন।

১৪/ ভারত

হার্দিক পান্ডিয়া এমন এক প্লেয়ার যার বোলিং ব্যাটিং বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই কোন না কোন ভাবে প্রভাব ফেলবে।৪৯ ম্যাচে ৪৮৪ রান এবং ৪২ উইকেট ম্যাচে কোন না কোনভাবে প্রভাব ফেলবেই। সে সাধারণত বিগ হিটার হিসেবেই পরিচিত।কিন্তু বোলার হিসাবেই ওয়ার্ল্ডকাপে আছেন।

১৫/ নেদারল্যান্ডস

নেদারল্যান্ডসের প্লেয়ার টু ওয়াচ হচ্ছেন বেন কুপার। ৫৬ ম্যাচে ১২৫+ স্ট্রাইক রেটে যে ব্যাট করে তার মাঝে অবশ্যই কিছু আছে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার।

১৬/ ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ক্রিস গেইল দ্যা ইউনিভার্স বস ৪২ বছর বয়সে এসেও প্লেয়ার টু ওয়াচে থাকেন।টি-২০ এর ফেরিওয়ালা হচ্ছেন তিনি।এই খেলায় চ্যাম্পিয়নও তিনি।৭৪ ম্যাচ ধরে ১৪০+ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করে যাওয়া তো মুখের কথা না।চ্যাম্পিয়ন টিমের চ্যাম্পিয়ন ব্যাটসম্যান। যেদিন নিজের মেজাজে পিটানো শুরু করেন।বোলারদের অবস্থা নাজেহাল করে ছাড়েন।