• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০১৯, ১০:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৫, ২০১৯, ১০:২১ পিএম

দুর্নীতি ঠেকাতে মোদীকে মমতার চিঠি

দুর্নীতি ঠেকাতে মোদীকে মমতার চিঠি
নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

‘দেশের ভোট হোক সরকারি খরচে’

কয়েক দিন আগে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং দাবি করেছিলেন, সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা ভোটের আগে দলের ইশতেহার প্রকাশ করে একই দাবি তুলেছিল সিপিএম। এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই দাবি জানিয়ে চিঠি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। মমতা চান, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের যাবতীয় খরচ বহন করুক কেন্দ্রীয় সরকার। সেজন্য সর্বদল বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মোদীকে পাঠানো চিঠিতে ভারতের নির্বাচনি সংস্কার ও নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি এবং অপরাধের বাড়-বাড়ন্ত ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীকে পদক্ষেপ করার আরজি জানান মমতা।

নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি রুখতে বিশ্বের ৬৫টি দেশের মতো নিয়ম চালু করার প্রস্তাব দেন তিনি।

কেন এই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এ ক্ষেত্রে তার হাতিয়ার সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ-এর ‘নির্বাচনি খরচ, ২০১৯’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে এবারের লোকসভা নির্বাচনকে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন বলে দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘২০১৪ সালে দেশের লোকসভা ভোটে যা খরচ হয়েছিল এবার তার দ্বিগুণ হয়েছে।’ এবার অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে ভারতের নির্বাচনে। কিন্তু অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানানো হলেও, সর্বোচ্চ কত সর্বোচ্চ কত টাকা খরচ হয়েছে তা জানা যায়নি।

ওই রিপোর্ট বলছে, ‘নির্বাচনি খরচের নিরিখে আমেরিকাকেও টপকে গিয়েছে ভারত। আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট ও কংগ্রেস নির্বাচনের মোট ব্যয় যেখানে ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, সেখানে ভারতে তার থেকে অনেক বেশি খরচ হয়েছে। এই হার বজায় থাকলে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই খরচ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’ 

মমতার কথায়, এটি খুবই বিপজ্জনক ইঙ্গিত। এখন থেকে নির্বাচনি খরচের বিষয়ে রাশ না টানলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল অ্যাসিসট্যান্টস-এর তরফে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথাও তার বক্তব্যের সমর্থনে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬৫টি দেশে রাজনৈতিক দলগুলো সোজাসুজি জনগণের থেকে আর্থিক অনুদান সংগ্রহ করে। আর ৭৫টি দেশ পরোক্ষভাবে এই অনুদান সংগ্রহ করে। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জনগণের থেকে অনুদান নিয়ে ভোট হোক। কোন পদ্ধতিতে অনুদান নেয়া হবে, তা ঠিক করতে সর্বদলীয় বৈঠকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা। তার কথায়, দেশে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন করতে এই ধরনের সংস্কার অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে।

লোকসভা ভোটে প্রশাসনিক খরচ বহন করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা প্রচার সহ বিভিন্ন কারণে যে টাকা খরচ করে, তা সরকার দেয় না. ভারতের নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী, লোকসভায় একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ৭০ লাখ টাকা খরচ করতে পারেন। কিন্তু একটা রাজনৈতিক দল কত খরচ করতে পারবে, তা নিয়ে কমিশনের কোনও নিয়ম নেই।

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এর সুযোগ নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলো শত শত কোটি টাকা খরচ করে। ভোট প্রচারে ও ভোট কিনতে এই টাকা খরচ হয়। এই খরচের সিংহভাগ আসে করপোরেট সেক্টর থেকে। দেশের প্রধান বিরোধী দলগুলো এই ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়। এখন দেখার বিষয় লোকসভা ভোট যে দল সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে, সেই বিজেপি সরকার এ বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখায় কি— না।

ভিএসজি/এসএমএম

আরও পড়ুন