• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯, ১২:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯, ১২:৪৪ পিএম

অসুস্থতার কারণে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে চেনা যাচ্ছে না : রিজভী 

অসুস্থতার কারণে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে চেনা যাচ্ছে না : রিজভী 
সংবাদ সম্মেলন বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ- ছবি : জাগরণ

খালেদা জিয়া ৫৯২তম কালোদিবস পার করছেন বলে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ, তাকে এখন আর চেনা যাচ্ছে না। তার ওজন কমে গেছে। শুকিয়ে গেছেন তিনি। হাঁটাহাঁটিও করতে পারছে না। সারাক্ষণই বিছানা অথবা চেয়ারে বসে থাকতে হয়। এ কারণে ওষুধ খাওয়ার পরও তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। পায়ের ব্যথা কমে নি। হুইলচেয়ারে করে তাকে এদিক-ওদিক নিতে হয়।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব বক্তব্য তুলে ধরেন।

রিজভী বলেন, হাত দিয়ে মুখে তুলে খেতেও পারেন না। রাতে ঠিকভাবে ঘুমাতে পারেন না, তার দুই কাঁধ প্রায় ফ্রোজেন, হাতগুলো ফ্রোজেন হয়ে যাচ্ছে। অসুখটা এমন যেটা- ‘ইরিভারসেভেল ডিজিস’ যে ক্ষতিটা হবে তা আর কোনও চিকিৎসাতেই ফিরে আসবে না।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, আপনি দেশনেত্রীর ওপর অনেক অত্যাচার করেছেন। এবার ক্ষান্ত দিন। মিথ্যা সাজানো প্রতিহিংসার মামলায় অনেক বেশি শাস্তি দেয়া হয়েছে। এবার দ্রুত তাকে মুক্তি দিন।

রিজভী আরও বলেন, শত শত বছরের মসজিদের শহর ঢাকা এখন ক্যাসিনোর শহরে উন্নতি লাভ করেছে শেখ হাসিনার উন্নয়নের সরকারের বদৌলতে। চারদিক ডুবে গেছে লুটপাট, খুন, ধর্ষণ, মদ, জুয়া, ক্যাসিনো, চাঁদাবাজী, অনাচারে। ক্ষমতাসীন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের হরিলুটে গোটা দেশটা ফাঁপা ফোঁকলা হয়ে গেছে। ব্যাংকে টাকা না থাকায় এখন সরকারি, আধা-সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তহবিলে হাত দেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় একটি ইতিবাচক আলোচনায় থাকতে দুর্নীতি-অনাচারের বিরুদ্ধে আকষ্মিক অভিযান আইওয়াশ কিনা এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ লোক দেখানো এ অভিযানে অধরাই থেকে যাচ্ছেন মাদক ও দুর্নীতিবাজদের গডফাদাররা। কারণ এবারের আওয়ামী আমলে সমগ্র বাংলাদেশটাই ডন গডফাদারদের কব্জায়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ব্যাংকগুলো সব দেউলিয়া করে আওয়ামীলীগ-যুবলীগ নেতাদের ঘরে ঘরে এখন ব্যাংক, টাকশাল বানানো হয়েছে। বিদেশে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করছে, পাচারের পর উদৃত্ত টাকা থেকে যাচ্ছে ঘরে। দেশটাই দেউলিয়া করে দিচ্ছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পিতার আক্ষেপের সেই ‘চাটার দল’। সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনের চুনোপুঁটি নেতারা আঙুল ফুলে একেকটা বটগাছ হয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন যুবলীগের নেতারা ঢাকায় চালাচ্ছে ৬০টি ক্যাসিনো, ঢাকার বাইরেও রয়েছে আরও অসংখ্য ক্যাসিনো। যেখানে প্রতিরাতে শত শত কোটি টাকা উঁড়ছে জুয়ার টেবিলে। মাদকের ব্যবসা চলছে দেদার।পাশাপাশি অবৈধ নাইট ক্লাব, পানশালা, বাগানবাড়ি, এমনকি তাদের ঘরে ঘরে জুয়া ও মাদকের আসর বসছে। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাবগুলো দখল করে তারা জুয়া আর ক্যাসিনো ক্লাবে পরিণত করেছে ক্ষমতাসীন রাঘববোয়াল এমপি-মন্ত্রীরা। রাজধানীর জুয়ার স্পটগুলোতে দৈনিক ৩০০ কোটি টাকা উঁড়ছে। এ টাকার একটি বড় অংশ হুণ্ডির মাধ্যমে চলে যায় বিদেশে। পাড়ায় পাড়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা টর্চার সেল তৈরি করে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের ধরে নিয়ে আদায় করে মোটা অঙ্কের টাকা।

জিয়াউর রহমানের আমলে দেশে ক্যাসিনো শুরু হয়েছিল সরকারের মন্ত্রী ও নেতাদের এ প্রত্যাখ্যান করে রিজভী আহমেদ বলেন, আওয়ামীলীগ-যুবলীগের দুর্নীতি, লুটপাট, অবৈধ অস্ত্র, সন্ত্রাস, টর্চার সেল,নির্যাতন, দখল, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনোসহ গুরুতর সব অপরাধের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার কারণে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন ওবায়দুল কাদের, মাহবুব উল আলম হানিফ আর হাছান মাহমুদ সাহেবরা।

রিজভী দাবি করে বলেন, জিয়ার আমলে ক্যাসিনো ও মাদকের নামই মানুষ জানত না। একদলীয় শাসনে জবাবদিহি থাকে না বলেই মাদক, ক্যাসিনো আর দুর্নীতি মহা ধুমধামে চলতে থাকে। বর্তমানেই তাই চলছে। দুর্নীতির ডাক নাম এখন আওয়ামী লীগ।

টিএস/এসএমএম

আরও পড়ুন