• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৯, ১০:২৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২২, ২০১৯, ১০:৩১ পিএম

অর্থবছর : ২০১৮-২০১৯

২ হাজার কোটি টাকার ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা

২ হাজার কোটি টাকার ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা

.........................................

প্রবৃদ্ধির হার ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ

ফাঁকি উদ্ঘাটন ও আদায়ে নিরীক্ষা প্রতিবেদন যাচাই জোরদার 

জনবলের তীব্র সঙ্কট

রাতেও টহল দিয়ে ভ্যাট আদায় 

কাজটাই বড় করে দেখি, প্রচার নয় : ডিজি
.........................................

সদ্য বিদায়ী ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৯৯৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। যা কিনা- ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ৭২০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেশি। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির হার ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত অর্থবছরে আদায়কৃত ভ্যাটের মধ্যে ১ হাজার ৮৩৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা উদ্ঘাটিত (ফাঁকি থেকে আদায়) রাজস্ব এবং ১১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা সরাসরি আদায়কৃত ভ্যাট। যেখানে আগের অর্থবছরে  (২০১৭-১৮) মোট আদায়কৃত ভ্যাট ছিল ১ হাজার ১১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে উদ্ঘাটিত ভ্যাট ছিল ১ হাজার ৭১ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং আদায়কৃত ভ্যাট ৪৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

সংস্থাটির মহাপরিচালক এ এফ এম আবদুল্লাহ খান দৈনিক জাগরণকে বলেন, গত ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অতীতের যে কোনও সময়ের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি উদ্ঘাটন ও আদায় সম্ভব হয়েছে। ভ্যাট আদায়ে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করার কারণেই মূলত ভ্যাট আদায় বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিরীক্ষা প্রতিবেদন যাচাই জোরদার করা ও গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেশি বেশি অভিযান। এছাড়া রাতে টহল দিয়েও ভ্যাট আদায় বেশ সাফল্য পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের জনবলের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। ভ্যাট গোয়েন্দায় ৫০ জন সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা পদ থাকলেও আছে মাত্র ২৩ জন। এই জনবল নিয়ে অডিট, অভিযান ও টহলের কাজ করা বেশ কঠিন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

বেশ বড় ধরনের সাফলতা দেখাতে সক্ষম হলেও প্রচার কেন এত কম এমন প্রশ্নের জবাবে ভ্যাট গোয়্ন্দার ডিজি আরও বলেন, আমরা খুব বেশি প্রচার চাচ্ছি না। কারণ কাজটাই বড় করে দেখি, প্রচার নয়। তাছাড়া বেশি প্রচারে অনেক সময় কাজে বাধা সৃষ্ট করে। তবে এখন মনে করছি জনসচেতনতার স্বার্থে প্রচারেরও প্রয়োজন রয়েছে। নিরীক্ষার মাধ্যমে ভ্যাট ব্যবস্থায় অধিকতর শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা করে এবং মূসক ফাঁকি রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে এটি আরও জোরদার করা হবে বলেও জানান আবদুল্লাহ খান। 

সূত্র আরও জানায়, বিদায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ১৩৬টি প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষা বা অডিট ও অভিযান পরিচালনা করে ভ্যাট গোয়েন্দারা। এর মধ্যে ইন্সুরেন্স খাতে ১৩টি, সেবা খাতে ১৫টি ও উৎপাদনকারীর ১৯টিসহ মোট ৫১টি প্রতিষ্ঠানে অডিট করে ভ্যাট গোয়েন্দা। ওই বছর ২৩টি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান, ১৫টি সেবা ও ব্যবসাখাতসহ মোট ৩৮টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। ৫১টি প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষা বা অডিটে থেকে আদায় মোট ৩৪৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা হয়। গোপন তথ্যে ৩৮টি প্রতিষ্ঠানে তদন্ত পর্যায়ে ৫৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার ফাঁকি ধরা পড়ে। আর ৩৮টি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে এক হাজার ৪৩৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা রাজস্ব উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন স্পটে টহল দিয়ে ১৪ লাখ টাকা আদায় করেছে।

সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে যে কোনও সময়ের চেয়ে বেশি ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটিত হয়েছে। ওই বছর সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৩৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দারা। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ৭৬৫.৫৯ কোটি টাকা বেশি। অন্যদিকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় আরও বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। যেখানে প্রবৃদ্ধি হার ছিল প্রায় ৯৩ দশমিক ২১ শতাংশ। আগের ২০১৬-১৭ সালে বিভিন্ন সময়ে নিরীক্ষা, তদন্ত, অভিযান, টহলে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছিল মাত্র ৫৭৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের তুলনায় ৫৩৮ দশমিক ৪৯ কোটি টাকা কম। ওই বছর মোট ভ্যাট আদায় হয় ১ হাজার ১১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

এআই/এসএমএম

আরও পড়ুন