ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজার রাখতে ঐতিহাসিক এক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাজ্য। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ইউরোপিয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বোরিস জনসন আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি সম্পাদনের ঘোষণা দেন।
নতুন চুক্তির ফলে শুল্ক ছাড়াই ৯০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে পারবে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য। যদিও জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্যের সীমান্ত অতিক্রম করতে অন্যান্য দেশের মতোই নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হবে ইউরোপের দেশগুলোর নাগরিকদের। যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাসহ অন্যান্য পেশাগত কাজের চেষ্টা করলে তাদের দক্ষতা প্রমাণের জন্যে আলাদা পরীক্ষা দিতে হবে। ভিসা ছাড়া যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে পারবেন কেবল ৯০ দিন পর্যন্ত। দেশটিতে পড়াশোনার জন্যেও আবেদন করতে হবে অন্য অভিবাসীদের মতোই। আর যুক্তরাজ্যের সমুদ্রসীমায় মাছ শিকার করতে ইউরোপের দেশগুলোকে দিতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ।
ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্ত আসার পর থেকেই শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে আসছিল যুক্তরাজ্য। এতে বাদ সাধে যুক্তরাজ্যের স্বশাসিত প্রদেশ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড আর প্রতিবেশী রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড। ইইউ বা যুক্তরাজ্য, কোন পক্ষই দুই আয়ারল্যান্ডের মাঝে সীমান্ত গড়তে চায় না। কিন্তু শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ছাড়া এই সীমান্ত এড়ানোর উপায়ও ছিল না। এছাড়াও চুক্তি ছাড়া উভয়পক্ষের সমুদ্রসীমায় মাছ শিকার নিয়েও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। তাই আশানুরূপ চুক্তি করতে না পারায় নিয়ে পার্লামেন্টে দফায় দফায় বিরোধীদলের তোপের মুখের পড়েন সরকার দলের এমপিরা।
২০১৬ সালে শতকরা ৫২ ভাগ গণভোটে ইইউ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাজ্যের জনগণ। তবে বাণিজ্য চুক্তিসহ ইউরোপের সঙ্গে বেশ কিছু ইস্যুতে ঐক্যমতে পৌঁছতে না পারায় পেছাতে থাকে ব্রেক্সিটের সময়। ৪০ বছরের বেশি সময় একজোট থাকার পর ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করে যুক্তরাজ্য। ১১ মাসের চেষ্টায় অবশেষে বাণিজ্য সংকট নিরসনে চুক্তি স্বাক্ষর করলো দুপক্ষ।
যদিও নতুন চুক্তিতেও সন্তুষ্ট নয় যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল। তাদের দাবি, এই চুক্তি অনুসরণ করলে যুক্তরাজ্য অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ভবিষ্যতে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত জটিলতা আরও বাড়বে।