• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২০, ০২:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৯, ২০২০, ০৪:০৩ পিএম

কোভিড-১৯

আরও ৪৫ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৪০১৪

আরও ৪৫ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৪০১৪
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা

আক্রান্তের ১১৪তম দিন 

..... 

গত ২৪ ঘণ্টা দেশে মারা গেছেন আরও ৪৫ জন। ৪৫ জনের মধ্যে ৩৬ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ জন বাসায় ১৪ এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে গেছেন ১ জন। এ নিয়ে মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ১ হাজার ৭৮৩ জনে।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে ২২ জন চট্টগ্রামের ১০ জন, সিলেট এবং বরিশালের ৩ জন, রাজশাহী ও ময়মনসিংহের ১ জন এবং খুলনা বিভাগের ৫ জন।

বয়স ভিত্তিক বিশ্লেষণে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে নতুন করে ৪ হাজার ১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে।

এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জন।

আইইডিসিআর এর বরাত দিয়ে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৫৩ জন সহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৮০ জন।

সোমবার (২৯ জুন) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে মোট ৬৮টি ল্যাবের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় ৬৫টি ল্যাব থেকে ১৪ হাজার ৪১৩ টি নমুনা পাওয়া গেছে। নতুন-পুরাতন মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ৮৩৭  টি। সব মিলিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪ জন।

নমুনা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ। সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৭৫ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। 

এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনের নেয়া হয়েছে ১ হাজার ২৮ জন জনকে। আইসোলেশনের আছেন ২৫ হাজার ৮৩৮ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৬০৯ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৯৬ জন। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ১৪ হাজার ৩৪২ জন।

রোববার (২৮ জুন) শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৮০৯ ও মারা যায় ৪৩ জন। 

গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা শুরু করে। ৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম কোনও করোনা রোগী মারা যায়।

চলতি মাসের ১ জুন ২,৩৮১, ২ জুন ২,৯১১, ৩ জুন ২,৬৯৫, ৪ জুন ২,৪২৩, ৫ জুন ২,৮২৮, ৬ জুন ২,৬৩৫, ৭ জুন ২,৭৪৩, ৮ জুন ২,৭৩৫, ৯ জুন ৩,১৭১ জন, ১০ জুন ৩,১৯০, ১১ জুন ৩, ১৮৭, ১২ জুন ৩,৪৭১ ও  ১৩ জুন ২,৮৫৬, ১৪ জুন ৩,১৪১, ১৫ জুন ৩,০৯৯, ১৬ জুন ৩,৮৬২, ১৭ জুন ৪,০০৮, ১৮ জুন ৩,৮০৩, ১৯ জুন ৩,২৪৩, ২০ জুন ৩,২৪০,  ২১ জুন ৩,৫৩১, ২২ জুন ৩,৪৮০, ২৩ জুন ৩,৪১৩, ২৪ জুন ৩,৪৬২, ২৫ জুন ৩,৯৪৬, ২৬ জুন ৩,৮৬৮ জন, ২৭ জুন ৩,৫০৪ ও ২৮ জুন ৩,৮০৯ জন শনাক্ত হয়।

দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানান হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে ৪ হাজার ৮ জনের। এ তথ্য জানান হয় ১৭ জুনের বুলেটিনে।

বুলেটিনে বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা।

ভারতের পরিস্থিতি

লাফ দিয়ে দিয়ে বাড়ছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৯ হাজার ৪৫৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। যার জেরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল পাঁচ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৮ জন। এভাবে রোজদিন আক্রান্ত বৃদ্ধি চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞ থেকে প্রশাসনের আধিকারিকদের।

আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১৬ হাজার ৪৭৫ জন প্রাণ হারালেন করোনার কারণে। এর মধ্যে সাত হাজার ৪২৯ জন মারা গেছে মহারাষ্ট্রে। রাজধানী দিল্লিতে দু’হাজার ৬২৩ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে এক হাজার ৮০৮ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। হাজার পেরনোর তালিকায় ঢুকে পড়েছে তামিলনাড়ুও। সেখানে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৭৯ ছুঁয়েছে। উত্তরপ্রদেশ (৬৬০), পশ্চিমবঙ্গ (৬৩৯), মধ্যপ্রদেশ (৫৫৭), রাজস্থান (৩৯৯)-এ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা (২৪৭), হরিয়ানা (২২৩), কর্নাটক (২০৭), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৬৯), পঞ্জাব (১৩৩)।

আক্রান্তের নিরিখে সবার উপরে সেই মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লাখ ৬৪ হাজার ৬২৬ জন। এর পরই দিল্লি ও তামিলনাড়ু। সেই দুই রাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে ছুটে চলেছে। দিল্লিতে মোট আক্রান্ত ৮৩ হাজার ৭৭ জন ও তামিলনাড়ুতে ৮২ হাজার ২৭৫ জন। আক্রান্তের নিরিখে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গুজরাত (৩১,৩২০) ও উত্তরপ্রদেশ (২২,১৪৭)। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (১৭,২৮৩), রাজস্থান (১৭,২৭১), তেলঙ্গানা (১৪,৪১৯), হরিয়ানা (১৩,৮২৯), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩,২৪১), কর্নাটক (১৩,১৯০), মধ্যপ্রদেশ (১৩,১৯৬)। এর পর আছে বিহার, অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা ও পঞ্জাবের মতো রাজ্য, যেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।

গত তিন চার দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গেও গড়ে ৫০০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭২ জন। এই বৃদ্ধির জেরে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১৭ হাজার ২৮৩ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩৯ জন।

আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজদিন বাড়লেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও স্বস্তি দিচ্ছে দেশবাসীকে। এমনিতেই করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থ হয়ে উঠে হঠার সংখ্যাটা লক্ষাধিক বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ১০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৩ লক্ষ ২১ হাজার ৭২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলেন।

বিশ্ব পরিস্থিতি

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সোমবার (২৯ জুন) সকাল পর্যন্ত এক কোটি ছাড়িয়েছে। সেই সাথে প্রাণহানি পাঁচ লাখেরও বেশি।

পাশাপাশি ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন বলে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএইচইউ) দেয়া তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে। 

জেএইচইউ এর তথ্য অনুসারে, করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৪৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৭৯৯ জন।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৩ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭ হাজার ৬৬২ জন।

সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় মোট আক্রান্ত ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫৬৩ জন এবং মারা গেছেন প্রায় ৯০৬০ জন মানুষ।

করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ৫ লাখ ২৮ হাজার ৮৫৯ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ হাজার ৯৫ জন।  

যুক্তরাজ্য মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। দেশটিতে করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ৪৩ হাজার ৬৪৩ জন। এরপর ইতালিতে ৩৪ হাজার ৭৩৮ জন, ফ্রান্সে ২৯ হাজার ৭৮১ জন এবং স্পেনে মারা গেছেন ২৮ হাজার ৩৪৩ জন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ২১৩টিরও বেশি দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এসএমএম

আরও পড়ুন