• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২০, ০৮:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১, ২০২০, ০৮:৩৬ পিএম

‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে’

‘সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক-ফাইল ছবি
এডিআর বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রশিক্ষণ থেকে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির কৌশলগুলো ভালোভাবে জানতে হবে

....................................

রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ— নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন সভার কাজের ধরন আলাদা হলেও সবার আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন এবং সেটি হচ্ছে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করা।

বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের নিয়ে আয়োজিত ৪০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন সচিব মো. গোলাম সাওয়ার বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, এই সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলকে এক লক্ষ্যে, এক প্রেরণায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার অন্যতম অনুষঙ্গ হলো আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এ আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কেবল আইনের শাসন নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র সুসংহতকরণ এবং দারিদ্র্য দূরীকরণেও বিচারকদের তথা কোয়ালিটি জুডিসিয়ারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। জনগণকে কোয়ালিটি জুডিসিয়ারি উপহার দেয়ার লক্ষ্যে সরকার বিচার বিভাগকে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, সমাজে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পেশাগত জীবনে অন্যের অনুসরণীয় হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। বিচার সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সততার ভিত্তিতে চারিত্রিক দৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা হতে হবে কর্মজীবনের মূলমন্ত্র। বিন্দুমাত্র লোভ কিংবা অসততার কারণে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে যাতে কোনও হতাশা বা বিরূপ ধারণার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিচারক হয়ে ওঠার পেছনে এ দেশের গরিব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে। জনগণের দ্রুত ও সহজে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিছক গতানুগতিক বা দায়সারা ভাব পরিহার করে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

আনিসুল হক বলেন, সরকার আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সেবার সঙ্গে বিচারক ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সমান তালে এগিয়ে নিতে চায় এবং সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায়, যেখানে সব মানুষ তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় সেবাসমূহ সহজেই গ্রহণ করতে পারবেন। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুই হাজার ৬৯০ কোটি টাকার ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। বিচারকদের এখন থেকেই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারিক সেবা প্রদানের প্রস্তুতি নিতে হবে।

তিনি বলেন, এডিআর বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। প্রশিক্ষণ থেকে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির কৌশলগুলো ভালোভাবে জানতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর পৃথকীকরণের পর বিচার বিভাগে বিচারক স্বল্পতাসহ ব্যাপক এজলাস সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা পর্যায়ে ৮-১০ তলাবিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ, পুরাতন জেলা জজ আদালত ভবনগুলো ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় এখন এজলাস সঙ্কট অনেকটাই দূর হয়েছে। গত ১০ বছরে অধঃস্তন আদালতে ১০২৮ বিচারক নিয়োগের ফলে বিচারক স্বল্পতার পরিমাণ অনেকটাই কমে গেছে।

এছাড়া বিচারকদের আর্থিকভাবে সচ্ছল করার জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চালু করে নজিরবিহীনভাবে তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানো এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একই সময়ে অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের দাফতরিক কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় চারশ গাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি স্বল্প সুদে বিচারকদের গৃহনির্মাণ ঋণের সুবিধা দেয়া হয়েছে। বিচারকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য দেশীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও জাপানেই কেবল গত তিন বছরে ৮২৪ বিচারককে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

এমএ/এসএমএম 

আরও পড়ুন